খৌ সুয়ান

       খৌ সুয়ান হচ্ছে চীনের বাদ্যযন্ত্রের মধ্যে ছোট আকারের একটি বাদ্যযন্ত্র । তা চীনের ইতিহাসে সংখ্যালঘু জাতির একটি প্রচীনতম বাদ্যযন্ত্রো বটে । জানা গেছে , খৃষ্টপূর্ব ৪০ শতাব্দির আদি সমাজের আমলে লোকেরা খৌ সুয়ান দিয়ে সংগীত বাজাতে শুরু করেন। তখন তার নাম ছিল “ হুয়াং ” ।  

  চীনের ব্যাপক অঞলে খৌ সুয়ানের প্রচলন হয় । তার প্রকারসংখ্যাও অনেক বেশি । নির্মান সামগ্রীর ভিন্নতা অনুযায়ী বাঁশ দিয়ে তৈরি আর ধাতু দিয়ে তৈরি দুই ধরনের খৌ সুয়ান রয়েছে । পাতার সংখ্যার ভিন্নতা অনুসারে একক পাতার তারা আর বহু পাতার তারা আছে । বাজানোর পদ্ধতি পার্থক্য অনুসারে আবার অংগুলি দিয়ে টানা এবং রেশমের সূতা দিয়ে টানা -দুই ধরণের খৌ সুয়ান রয়েছে ।  

  বাঁশ দিয়ে তৈরি খৌ সুয়ান সাধারণত কঠিন নান বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয় । নির্মাণের সময়ে ছুরি দিয়ে বাঁশের পাত পাতলা করা হয় এবং ভেতরের তিনটি দিকে জিহ্বা কাটা হয় । তারপর খৌ সুয়ানের মাথার অংশ তলোয়ার আকারে কাটা হয় এবং তার লেজের অংশ হাতল হিসেবে সমান করা হয় । বাঁশের খৌ সুয়ানের জিহ্বার মাথা বড় আর পাতলা , মধ্য অংশ সরু আর মোটা । বাঁশের নমনীয়তার সুবাদে খৌ সুয়ানের জিহ্বা অবাধে স্পন্দন হয়ে আওয়াজ বের হয় । কয়েকটি বাঁশের পাতাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখলে বহুপাতাযুক্ত খৌ সুয়ান তৈরি করা যাবে । অধিকাংশ হ্মেত্রে বহুপাতাযুক্ত খৌ সুয়ান ২ থেকে ৫টি বিভিন্ন আওয়াজের বাঁশের পাতা দিয়ে গঠিত । খৌ সুয়ানের জিহবা লম্বাবা খাটো, চড়া বা সরু এবং পাতলা বা মোটা হয় , তার উপরই বাঁশের সুরের মাত্রা নির্ভরশীল ।  

  বাঁশের খৌ সুয়ানের তুলনায় ধাতুর খৌ সুয়ান সাধারনত তামা আর লৌহ দিয়ে তৈরি হয় । সাধারণ আকার হচ্ছে পাতার আকার আর লম্বা চতুভুজ আকার । আবার কেউ কেউ বুলেটের খোসা দিয়ে তৈরি করেছেন । ধাতুর খৌ সুয়ানের সুর আর পরিষ্কার আর উদাত্ত। তার আকারো বাঁশের খৌ সুয়ানের চেয়ে একটু ছোট ।  

  আকার আর নির্মাণ পদ্ধতির হ্মেত্রে খৌ সুয়ানের বৈশিষ্ট্য আছে । তাছাড়া তা বাজানোর উপায়ো অনন্য । শিল্পীরা বাম হাতের বৃদ্ধাংগুলি আর তর্জনি দিয়ে বাদ্যযন্ত্রের হাতল ধরেন , জিহ্বাকে দুটো ঠোঁটের মাঝখানে রাখেন ,ডান হাতের বৃদ্ধাংগুলি আর তর্জনী দিয়ে বাদ্যযন্ত্রের শীর্ষের প্রান্তটানেন । তারপর জিহ্বার স্পন্দন হয় এবং সুউজ্জল আওয়াজ বের হয় । রেশমের সূতা দিয়ে বাজানো খৌ সুয়ান বাজানোর উপায় আর লহ্ম্যনীয় । শিল্পীরা প্রতিটি পাতার শীর্ষদেশে একটি রেশমের সূতা বেঁধে দেন । ডান হাতের অংগুলি দিয়ে সূতা ধরে টেনে টেনে পাতাগুলোর স্পন্দন তুলে দেয়া হয় এবং সংগে সংগে আওয়াজ বের হয় । তাছাড়া অনুনাদী আওয়াজ আর সুরের মাত্রা বাড়ানোর জন্যে শিল্পীরা খৌ সুয়ান বাজানোর সময়ে দুটো ঠোঁটকে সামনের দিকে এগিয়ে নেন । একই সংগে তারা মুখের পরিবর্তনের সাহায্যে এবং শ্বাস-নিশ্বাস নিয়ন্ত্রণের উপায় গ্রহণ করে পরিবর্তনশীল সংগীত বাজাতে পারেন ।  

  [ সুরের উপভোগ ]《লেপোফুংছিং 》