হুলুসিয়াও

       হুলুসিয়াও হচ্ছে চীনের সংখ্যালঘু জাতিগুলোর মধ্যে ফুঁ দিয়ে বাজানো একটি বাদ্যযন্ত্র । দহ্মিণ-পশ্চিম চীনের তাই , আছাং আর ওয়া জাতির জনগণের কাছে হুলুসিয়াও প্রিয়তম আর সবচেয়ে প্রচলিত বাদ্যযন্ত্রের অন্যতম ।  

  হুলুসিয়াওয়ের ইতিহাস খুব পুরনো । খৃষ্টপুর্ব ২২১ সলের ( প্রাক্তন ছিন রাজবংশের আমলের আগে এর উদ্ভব হয় । তবে আজকের হুলুসিয়াও গঠনের দিক থেকে এখনো প্রাচীন অনুরুপ বাদ্যযন্ত্রের বৈশিষ্ট্য বজায় রেখেছে ।  

  হুলুসিয়াওয়ের আকার আর গঠন বিশেষ ধরণের । তা গোটা একটি লাউ , ৩টি বাঁশের নল আর ৩টি ধাতুর পাতা দিয়ে গঠিত । লাউয়ের হাতলের প্রান্তে বসানো রয়েছে ১টি বাঁশের নল যা হচ্ছে ফুঁ দেয়ার মুখ । লাউ অনুনাদী বাক্সের ভূমিকা পালন করে । লাউয়ের পাতদেশেমোটা সরু ৩টি বাঁশের নল বসানো আছে। প্রতিটি বাঁশের নলের উপরে বাঁধানো রয়েছে একটি করে তামা বা রূপো দিয়ে তৈরিপাতা । মাঝখানের সে প্রধান নল সবচেয়ে মোটা । তার উপরে ৭টি গর্ত কাটা রয়েছে । এই প্রধান নল দিয়ে নানা ধরণের সুর বাজানো যায় । দুই পাশের উপনল দিয়ে কেবল প্রধান নলের সংগে অনুনাদী সুর বাজানো যায় ।  

  অন্যান্য সিয়াও ধনণের বাদ্যযন্ত্রের মত হুলুসিয়াওয়ের সুর হ্মীণ রয়েছে । তবে তার প্রধান নল দিয়ে বেরুনো সুর মসৃণ আর মনোরম । দুটো উপনলের একটানা সুরের পটভূমিকায় তা লোকের জন্যে অস্পস্ট সৌন্দর্য্য এনে দিতে পারে । হুলুসিয়াও দিয়ে বাজানো নাড়া আওয়াজ নাড়া রেশমের মত হালকা আর নমনীয় হয় বলে অনেকে তাকে “ হুলুসি” বলে ডাকেন ।  

  জাতি আর অঞলের ব্যবধানের কারণে আকার আর বাজানোর উপায়ের হ্মেত্রে চীনের ইয়ুন নান প্রদেশের অন্যান্য সংখ্যালঘু জাতিগুলোর হুলুসিয়াওয়ের মধ্যে কিছু দফাত রয়েছে । তবে এগুলোর মধ্যে একটি অভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে যে , সবসময় তা দিয়ে পাহাড়ি গান বাজানো হয় , বিশেষ করে সাবলীল ছন্দের সংগীত বাজানোর উপযোগী । সুরগুলোর মধ্যে লম্বা সুর বেশি এবং সমবেত সুর সমৃদ্ধ আর নমনীয় আর সংগতিপূর্ণ । হুলুসিয়াও দিয়ে সুন্দরভাবে শিল্পীদের ভাবানুভূতি প্রকাশ করা যায় ।  

  পরে চীনের জাতীয় সংগীতকর্মীরা হুলুসিয়াওকে সংস্কার করেন । এই সব নতুন ধরণের বাদ্যযন্ত্র যেমনএঐতিহ্যবাহী হুলুসিয়াওয়ের সুর আর রীতি বজায় রেখেছে , তেমনি সুরের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে , সুরের হ্মেত্র প্রসার করেছে এবং এই বাদ্যযন্ত্রের প্রকাশ শক্তি সমৃদ্ধ করে তুলেছে । ফলে চীনের সংখ্যালঘু জাতির লোক বাদ্যযন্ত্র হিসেবে হুলুসিয়াও মঞে আরোহন করেছে এবং চীনের সংগীতকারের সফরের মাধ্যমে পৃথিবীর শিল্পকলার মঞে আরোহন করেছে ।  

  [ সুরের উপভোগ ]《জোত্স্নায় ফোং উই বাঁশ 》