শেন

       শেন হচ্ছে চীনের প্রাচীন ফুঁস দিয়ে বাজানো বাদ্যযন্ত্র । পশ্চমা বাদ্যযন্ত্রের বিকাশের হ্মেত্রে শেন ইতিবাচক ও প্রেরণামুলক ভূমিকা পালন করেছে ।  

  ১৯৭৮ সালে চীনের হু পেই প্রদেশের সুয়ে সিয়ান জেলার চেংহৌইর কবর থেকে ২৪০০ বছর আগেকার কয়েকটি ফাও শেং উদ্ধার করা হয় । এটা হচ্ছে চীনের উদ্ধারকৃত প্রাচীনতম শেং ।  

  ৩ হাজারের বেশি বছর আগে শেংয়ের উদ্ভব হয় । প্রথম দিকে শেং আর সারিবদ্ধ সিয়াওয়ের আকার একটু কাছাকাছি ছিল । তখন দড়ি আর কাঠের ফ্রেম দিয়ে ভিন্ন আওয়াজযুক্ত বাঁশের নলগুলো বাঁধিয়ে দেয়া হতো । সারিবদ্ধ সিয়াও থেকে আলাদা করার জন্যে পরে লোকেরা ধাপে ধাপে শেংয়ের উপরে বাঁশের পাতা আর শেং দৌ লাগানো হয় ।  

  শেং দৌ লাউ দিয়ে তৈরি হয় এবং ফুঁস দেয়ার মুখ কাঠ দিয়ে তৈরি হয় । দশ খানেক খাটো ও লম্বা বাঁশের নলকে শেং দৌয়ের উপরে রাখা হয় । থাং রাজবংশের পর শিল্পীরা কাঠ দিয়ে শেং দৌ তৈরি করতে শুরু করেন । তার পরে প্রচলনের মধ্য দিয়ে কাঠের শেং দৌয়ের বদলে তামার শেং দৌ ব্যবহার করা হয় । একই সংগে বাঁশের পাতার বদলে তামার পাতা ব্যবহার করা হয় ।  

  অনেক বছর আগে শেংয়ের প্রচলন শুরু হয় বলে বিভিন্ন অঞলে বিভিন্ন ধরণের শেং রয়েছে । নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর চীনের বাদ্যযন্ত্রের নির্মাতারা আর সংগীত কর্মীরা অনবরত শেংকে সংস্কার করেন । তারা পরপর সুর-বাড়ানো শেং , চাবিযুক্ত শেং প্রভৃতি বহু ধরণের শেং তৈরি করেছেন । আগেকার শেং সুর পরিবর্তন করতে পারতো না , সুরের হ্মেত্র সরু ছিল এবং দ্রুতভাবে বাজানো অসুবিধাজনক ছিল । নতুন করে তৈরি শেং এই সব অপূর্ণতা পূরণ করেছে । এটা শেংয়ের জন্যে নতুন জীবন শক্তি এনে দিয়েছে ।  

  শেংয়ের সুর উজ্জল আর শ্রুতিমধুর । তার উচ্চকন্ঠের সুর নমনীয় আর পরিপূর্ণ এবং নীচুকন্ঠের সুর নীচু আর গভীর আর সুরের মাত্রা বেশি । চীনের এঐতিহ্যবাহী ফুঁস দিয়ে বাজানো বাদ্যযন্ত্রের মধ্যে শুধু শেং সমবেত সুর বাজাতে পারে । অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রের সংগে সমবেতভাবে বাজানোর সময়ে শেং বাদ্যযন্ত্র দলের সুরের সমন্বয় এবং আওয়াজ সমৃদ্ধ করে তোলার ভূমিকা নিতে পারে।বিরাটাকারের জাতীয় বাদ্যযন্ত্র দলে মাঝে মধ্যে উচ্চ , মধ্যম আর নীচুকন্ঠের শেং এক সংগে ব্যবহার করা হয় ।  

  [ সুরের উপভোগ ]《ফোংহোয়াং চিয়ানছি 》