মাথৌছিন

       মাথৌছিন হচ্ছে চীনের সংখ্যালঘু জাতি - মোংগলীয় জাতির একটি তারা টানা বাদ্যযন্ত্র । এর শীর্ষদেশে ঘোড়ার মাথা খোদাই হয় বলে মাথৌছিনের নামকরণ হয় । মাথৌছিনের ইতিহাস খুব পুরনো । সেই ত্রয়োদশ শতাব্দির প্রথমদিকে এর ব্যাপক প্রচলন হয় । প্রচলিত এলাকার ভিন্নতার দরুণ মাথৌছিনের নাম , কাঠামো , আওয়াজ আর বাজানোর পদ্ধতিও আলাদা আলাদা রয়েছে । অন্তর্মোংগলীয়ার পশ্চিম অঞলে তাকে “মোলিনহুছিয়াংর” এবং পূর্বঅঞলে তাকে “ছাওর” বলে ডাকা হয় ।  

  মাথৌছিনের অনুনাদী বাক্সসোপানবত্আকারের । এর শীর্ষদেশে খোদাই আছে ঘোড়ার মাথা । এটাই হচ্ছে মাথৌছিনের মৌলিক কাঠামো আর এর নামের উত্স । মাথৌছিনের তারাগুলো বিশেষ ধরণের । তা দশ খানেক ঘোড়ার লেজের লোম দিয়ে তৈরি । দুটো প্রাণ্ত রেশমের সুতা দিয়ে বাঁধা হয় । ঘোড়ার লেজের লোম দিয়ে তৈরি ধনুক দিয়ে তারা টানা হয় । মাথৌছিনের আওয়াজ মিষ্টি , গভীর আর মনোরম । চীন আর অন্যান্য দেশের তারা টানা বাদ্যযন্ত্রের সংগে এর তুলনা নেই ।  

  গোড়ার দিকের মাথৌছিন শিল্পীদের দ্বারা তৈরি হত । তখন এর আওয়াজ নীচু বলে কেবল ঘরের মধ্যে বাজানো হত । যুগের বিকাশের সংগে সংগে চীনের বাদ্যযন্ত্রের নির্মাতারা এঐতিহ্যবাহী মাথৌছিনকেসংস্কার করেন । সংস্কারের পর মাথৌছিনের সুরের হ্মেত্র আর সম্প্রসারিত হয় । ঘোড়ার লেজের লোম দিয়ে তৈরি তারার বদলে নাইলনের তারা ব্যবহার করা হয় বলে সুরের মাত্রা বেড়ে গেছে এবং তারার মাত্রা ৪ ডিগ্রী বেড়ে গেছে । সংস্কারের ফলে এঐতিহ্যবাহী মাথৌছিনের নমনীয় আর গভীর আওয়াজ বজায় রাখা সম্ভব হয় , তেমনি এর আওয়াজ আর স্পষ্ট আর উদাত্ত হয় । সংস্কৃত মাথৌছিন পুরোপুরিই মঞে এবং ঘরের বাইরে বাজানোর উপযোগী হয়েছে । মাথৌছিন দিয়ে তারা টেনে বাজানো ছাড়াও প্লেকট্রামদিয়েতারা টেনে বাজানো যায় । এখন মাথৌছিন মোংগলীয় জাতির একটি প্রধান বাদ্যযন্ত্রে পরিণত হয়েছে ।  

  তাছাড়া বাদ্যযন্ত্রের নির্মাতারা মাঝারি আর বিরাটাকারের মাথৌছিন আবিষ্কার করেছেন । এই দুটোমাথৌছিন বাজানোর পদ্ধতি পশ্চিমা তারা টানা বাদ্যযন্ত্র- বড় বেহালা আর নিম্নকণ্ঠের বেহালার মত । এইভাবে মাথৌছিনের পরিবার উচ্চকণ্ঠ , মধ্যমকণ্ঠ আর নিম্নকণ্ঠের মাথোছিনের সমন্বয়ে একটি পুর্ণাংগ বাদ্যযন্ত্র গ্রুপ গড়ে উঠে এবং চীনের জাতীয় বাদ্যযন্ত্রদলো জোরদার হয় । এখানে উল্লেখযোগ্য যে সংস্কারের পর নতুন ধরণের মাথৌছিনের আকারের সাজসজ্জ মোংগলীয় জাতির বৈশিষ্ট্য বজায় রেখেছে । মাথৌছিনের গায় জাতীয় বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ছবি আঁকা আছে। মাথৌছিন দেখতে খুবই সুন্দর । তাকে একটি চমত্কার হস্তশিল্পজাত দ্রব্য হিসেবে মনে করা যায় ।  

  [ সুরের উপভোগ ]《চার ঋতু 》