রুয়ান হচ্ছে চীনের একটি তারা টানার বাদ্যযন্ত্র । প্রাচীনকালে রুয়ান বরাবরই “ ছিন বংশের ফিপা” বলে ডাকা হতো । প্রায় খৃষ্টপূর্ব দ্বিতীয় আর তৃতীয় শতাব্দির ছিন রাজবংশের সময়ে লোকেরা হাতল সহ এক রকম ছোট নাড়ার ঢাকের উপরে তারা লাগিয়ে একরকম তারা টানার বাদ্যযন্ত্র তৈরি করেন । এর নাম ছিল সুয়ান থাও” । পরবর্তীকালে লোকেরা চেং আর চু প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্রের নমুনা অনুসারে “সুয়ান থাওয়ের চেয়ে আর উন্নত বাদ্যযন্ত্র আবিষ্কার করেন । এর নাম ছিল “ছিন ফিপা” । তা হলো “রুয়ানের পূর্বরূপ ।
খৃষ্টীয় তৃতীয় শতাব্দীতে রুয়ান সিযান নামে একজন সংগীতকার ছিলেন । তিনি গোলাকার অনুনাদী বাক্সসহ এই ধরণের “ছিন ফিপা”বাজাতে নিপুণ ছিলেন । তাঁর বাজানোর কলাকৌশল অত্যন্ত চমত্কার বলে তিনি জনসাধারণের মধ্যে খুবী সমাদর পান । তাই আস্তে আস্তে লোকেরা তাঁর নাম “রুয়ান সিয়ান” দিয়ে এই রকমবাদ্যযন্ত্রকে ডাকতে শুরু করেন । তবে রুয়ান সিয়ানের সংহ্মিপ্ত নাম রুয়া নের ডাক ১ হাজার বছর আগের সুং রাজবংশ থেকে শুরু হয় ।
রুয়ানের আকার খুবই সংহ্মিপ্ত । তা মাথা , দণ্ড আর গা দিয়ে গঠিত । সাধারণত মাথায় চীনের এঐতিহ্যিক ড্রাগন প্রভৃতি হাড়ে খোদাই শিল্পকর্মেসাজানো রয়েছে । তার দু পাশে লাগানো আছে ৪টি তারা রাখার চালকদণ্ড । রুয়ানের গা আসলে একটি চ্যাপ্টা গোলাকারের অনুনাদী বাক্স । তা চামড়ার পাত , পীঠের পাত আর ফ্রেম দিয়ে লাগানো হয় । রুয়ানের কাঠামো , কাঁচামাল আর বাজানোর উপায় ফিফার সংগে অনেক মিল আছে ।
গত কয়েক বছর ধরে চীন জাতীয় বাদ্যযন্ত্রের উপর গুরুত্ব দিয়ে আসছে । চীনের সংগীতকাররা রূয়ানকে সংস্কার করে উচ্চকণ্ঠের রুয়ান, মধ্যমকণ্ঠের রুয়ান , উপ-মধ্যমকণ্ঠের রুয়ান আর নিম্নকণ্ঠের রুয়ান তৈরি করেছেন ।
উচ্চকণ্ঠের রুয়ান হচ্ছে উচ্চকণ্ঠের বাদ্যযন্ত্র । তার আওয়াজ স্পষ্ট আর উদাত্তএবং বাদ্যযন্ত্র দলে প্রায় প্রধান সংগীতের ভূমিকা পালন করেন ।
মধ্যমকণ্ঠের রুয়ান হচ্ছে মধ্যমকণ্ঠের বাদ্যংযন্ত্র । এর সুর স্থির আর নমনীয় এবং কবিত্বময় । সমবেত সংগীতে তা প্রায় ছন্দ আর সহযোগীর ভুমিকা পালন করেন এবং মানুষের মন মাতিয়ে তুলে । সহযোগী ভূমিকা পালনের সময়ে ছন্দের সমৃদ্ধ পরিবর্তন সংগীতের বৈশিষ্ট্যআর লহ্মনীয় করে তুলে । বাদ্যযন্ত্র দলের মধ্যে মধ্যমকণ্ঠের সমবেত সুর বাজালে তারা টানার বাদ্যযন্ত্র গ্রুপের মধ্যমাংশ আর সমৃদ্ধ হয় ।
বড় রুয়ান মধ্যমকণ্ঠের রুয়ানের চেয়ে ৫ মাত্রা নীচু এবং পশ্চিমা বাদ্যযন্ত্রের বড় বেহালার কাছাকাছি । বাদ্যযন্ত্রদল ছন্দ বাজানোর সময়ে বড় রুয়ান প্রায় মধ্যমকন্ঠের রুয়ানের সংগে অষ্টক ধ্বনিতে মিলিত হয় যাতে মধ্যমকন্ঠের ফল আর সুন্দর হয় । বড় রুয়ান ভাব প্রকাশের ছন্দ বাজানোর উপযোগী । তা দিয়ে একক বা সমবেত সুর বাজানোর সময়ে তালকে জোরদার করা যায় এবং সংগীতের আন্তরিকতা আর প্রাণবন্ততার ফল তোলা যায় । নিম্নকন্ঠের রুয়ানের আওয়াজ গভীর হয় । তা পশ্চিমা বাদ্যযন্ত্রের নিম্নকন্ঠের বেহালার মত ।
[
সুরের উপভোগ
]: 《ইয়ুনানের স্মৃতি 》
|