তোংপুলা হচ্ছে চীনের কাজাক জাতির প্রাচীন বাদ্যযন্ত্র। কিছু সংখ্যক কাজাক পরিবারের বৃদ্ধ আর শিশরা সবাই তোংপুলা বাজাতে পারেন । কাজাক ভাষায় তোংপুলার বিশেষ অর্থ আছে । “ তোং” হচ্ছে বাদ্যযন্ত্রবাজানোর আওয়াজ । “ পুলার” অর্থ হচছে বাদ্যযন্ত্রের জন্যে সুর নির্ধারণ করা । তোংপুলার সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে । সেই খৃষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে চীনের সিনচিয়াং অঞলে এর প্রচলন শুরু হয় ।
তোংপুলার গা কাঠ দিয়ে তৈরি । তার আকার একটি বড় করে তোলা চামচের মত । গোড়ার দিকে সহজ উপায় দিয়ে তোংপুলা তৈরি করা যেতো । শিল্পীরা গোটা একটি কাঠকে চামচের আকারে কাটেন। তারপর তার উপরে একটি চামড়ার পাত পাতা হয়এবং দুটো ছাগলের অন্ত্র দিয়ে তারা লাগানো হয় । আবার চামচের হাতলে ৯টি ট্যাম্বারলাগানো হয় । এমনি করে একটি তোংপুলা তৈরি হয় । তোংপুলা হচ্ছে কাজাক জাতির গণ গায়কদের অনিবার্য্য সহযোগী বাদ্যযন্ত্র। কাজাকদের হাতে তোংপুলা থাকলে বাইরে পশু পালনের সময়ে তারা আর নিসংগ নন । সন্ধ্যার সময়ে বাড়ীতে ফিরে লোকেরা তোংপুলা বাজিয়ে নাচ গান করে আপনজনদের সংগে আমোদ-প্রমোদ করেন ।
তোংপুলা দিয়ে একক বাজানো , সমবেত বাজানো এবং সহযোগী বাজানো যায় । এর প্রকাশ-শক্তি অত্যন্ত সমৃদ্ধ । তোংপুলা বাজানোর উপায় অধিকাংশ তারা টানার বাদ্যযন্ত্রের মত । শিল্পীরা তোংপুলাকে আঁকাবাঁকাভাবে কোলে রাখেন , বাম হাতের তর্জনী আর বৃদ্ধাংগুলি দিয়ে তারা চেপে ধরেন এবং ডান হাতের মধ্যমাংগুলি আর বৃদ্ধাংগুলি দিয়ে তারা টানেন । তোংপুলা বাজানোর বিভিন্ন কলাকৌশল দিয়ে জীবন্তভাবে তৃণভূমির ঝরণা , পাখীর উদাত্ত ডাক এবং ছাগল আর ঘোড়া দলের দৌড়ার শব্দ প্রকাশ করা যায় ।
[তোংপুলার সুরের উপভোগ ]: 《জন্মভূমির প্রতি প্রেম 》
|