হোওপুস

       হোওপুস হচ্ছে চীনের একটি প্রাচীন বাদ্যযন্ত্র । তা মোংগলিয় জনগণের মধ্যে সমাদর পায় । অনুবাদের ভিন্নতার কারণ তার অন্য নাম হচ্ছে “হাওপিস”, “হোপিস”বা “হুপোছি” ইত্যাদি । খৃষ্টপূর্ব ১ শতাব্দির গোড়ার দিকে উত্তর চীনেরজাতি প্রাচীন চেং আর খোংহৌপ্রভৃতি বাদ্যযন্ত্র অনুযায়ী এই নতুন ধরণের বাদ্যযন্ত্র আবিষ্কার করেছে ।  

  ঐতিহ্যিক হোপুসের আকার একটি চামচের মত । হোপুসের দৈর্ঘ্য ৯০ সেন্টিমিটার । তার মাথা এঁকেবেঁকে আর দণ্ড সোজাসোজি । গোলাকার অনুনাদী বাক্স সাপের চামড়ার দ্বারা ঢ়াকা । হোপুসের ৩ থেকে ৪ তারা আছে । তার দণ্ড একটু লম্বা , অনুনাদী বাক্স ছোট এবং অ নুনাদী বাক্স চামড়া দিয়ে ঢ়াকা বলে এর আওয়াজ সুগভীর উত্তর তৃণভূমির আমেজ রয়েছে । হোপুস বাজানোর উপায় অনন্য তারা টানা বাদ্যযন্ত্রের মতই । শিল্পীরা সোজা করে বাদ্যযন্ত্র কোলে রাখেন , বাম হাত দিয়ে তারা চেপে রাখেনএবং ডান হাতের বৃদ্ধাংগুলি আর তর্জনী দিয়ে তারা টানেন । হোপুসের আওয়াজ স্পষ্ট আর উদাত্ত এবং সুর নমনীয়আর মনোরম । প্রায় হোপুস প্রায়একক বাজানো , সমবেত বাজানো এবং নাচগানের জন্যে সহযোগী বাজানোর কাজে ব্যবহার করা হয় ।  

  খৃটীয় ত্রয়োদ শতাব্দী থেকে চতুর্দশ শতাব্দী পর্যন্ত চীনের এঐতিহাসিক পুস্তক “ ইউয়ান রাজবংশের ইতিহাস সংগীত সংকলন” হোপুসের নাম দেখতে পাওয়া যায় । তখন হোপুস জাতীয় পর্যায়ের বাদ্যযন্ত্র হিসেবে অভিহিত করা হতো এবং প্রায় বিরাটাকারের ভোজসভায় তা বাজানো হতো । পরে জনসাধারণের মধ্যেও তার প্রচলন হয় । ইউয়ান রাজবংশের পতনের পর মিং রাজবংশের হান জাতির শানকরা মোংগলীয় জাতির বহু রীতিনীতি অনুসরণ করলেও হোপুসকে তাঁরা জাতীয় পর্যায়ের বাদ্যযন্ত্রের মধ্যে রাখেন নি । সপ্তদশ শতাব্দীর ছিং রাজবংশের সময়ে মোংগলীয় জাতির রীতিনীতির প্রচলনের কারণে হোপুসকে আবার জাতীয় পর্যায়ের বাদ্যযন্ত্রের মধ্যে রাখা হয় । তখন ভোজসভায় হোপুস বাজানো ছাড়াও ছিং রাজবংশের রাজপরিবারের সদস্যরা প্রতি বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিন আর পঞম দিনের মহামিলনে আর শিকারের সময়ে হোপুস বাজিয়ে থাকেন ।  

  নানা কারণে ছিং রাজবংশের পর হোপুসের প্রচলন মলিন হয়ে গেছে । নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর সংগীত শিল্পীরা বিপুল প্রচেষ্টা চালিয়ে মাটির নীচ থেকে উদ্ধারকৃত পুরাকীর্তি অনুযায়ী নতুন ধরণের হোপুস তৈরি করেছেন এবং এই প্রাচীন বাদ্যযন্ত্রকে নতুন জীবন দিয়েছেন । নতুন করে নির্মিত হোপুসউচ্চকণ্ঠের , মধ্যকণ্ঠের আর নিম্নকণ্ঠের হোপুসে বিভক্ত । তার আকারের ডিজাইন পুরোপুরই মোংগলীয় জাতির এঐতিহ্যিকরীতির সংগে সংগতিপূর্ণ । হোপুসের মাথা তীর রাখার ব্যাগগের মত । ব্যাগের উপরে খোদাই আছে একটি পূর্ণ ধনুক । লাউ আকারের অনুনাদী বাক্স এঐতিহ্যিক বাক্সের চেয়ে দ্বিগুণ বেশি । বাক্সের উপরে কোনো চামড়া ঢ়াকা হয় না , বরং শিথিল আর সূহ্ম থোং কাঠের পাত দিয়ে ঢ়াকা হয় । এইভাবে হোপুসের আওয়াজের মাত্রাবেড়ে যায় । নতুন ধরণের হোপুস কোনো কোনো তারা টানার বাদ্যযন্ত্রের ডিজাইন পদ্ধতি আহরণ করে অনুনাদী বাক্সের মধ্যে কড়ি স্থপন করে আওয়াজকে আর কেন্দ্রীভূত করেছে এবং আওয়াজকে আর উদাত্ত আর গভীর করে তুলেছে । তাছাড়া হোপুসের ডিজাইনাররা হোপুসের জাতীয় বৈশিষ্ট্য প্রসারিত করার জন্যে হোপুসের গলার অংগুলি রাখার পাতে কুড়িরো বেশি হাড়ের জিনিষ লাগিয়ে দেন যার ফলে হোপুসের সুরের হ্মেত্র ৪টি অষ্টক ধ্বনিতে উন্নীত হয় ।  

  [হোপুসের সুর ]:মোংগলীয় জাতির লোক সংগীত “ পাইছিআসির ”