কুছিন হচ্ছে চীনের একটি সুপ্রাচীন তারা টানার বাদ্যযন্ত্র । প্রাচীনকালে কুছিনকে “ছিন” বা “ ইযাও ছিন” বলে ডাকা হতো । তার সুদীর্ঘদিনের ইতিহাস রয়েছে । সেই ৩ হাজারেরো বেশি বছর আগেকার চৌ রাজবংশের সময়ে চীনা জাতির পূর্বপুরুষেরা কুছিন আবিষ্কার করেন ।
কুছিনের গঠন অত্যন্ত মনোরম । তার আওয়াজ মসৃণ ও উজ্জলএবং সুর সুহ্ম আর পরিবর্তনশীল । প্রাচীনকালের লোকেরা কুছিন বাজানোর সময়ে নিদিষ্ট নিয়ম মেনে চলতেন । কু ছিন বাজানোর আগে লোকদের স্নান করতে হতো এবং নতুন কাপড় পরতে হতো এবং ধূপকাঠি জালাতে হতো । তারপর দুটো পা গুছিয়ে বসে কুছিনকে পায় বা টেবিলে রেখে বাজাতে হতো । কুছিন বাজানোর সময়ে বাম হাত দিয়ে তারা টানা হয় এবং ডান হাত দিয়ে তারা চেপে সুর নির্ধারণ করা হয় । বাজানোর সময়ে পুরোপুরিই কুছিনের প্রতীক অনুসারে স্বাহ্মর করা হয় সুরের নির্ভূলতাঅত্যন্ত কড়াকড়ি ।
চীনের প্রাচীনকালের পণ্ডিতরা কুছিন সংগীতের সংগে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। বিপুল প্রাচীন দলিলপত্রে প্রতীয়মানহয় যে , চীনের পণ্ডিতরা বরাবরই কুছিন সংগীতের প্রধান শরীক ছিলেন । কু ছিনের আবিষ্কার , বাজানো , উপভোগ আর প্রচলনের হ্মেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন ।
কুছিনের নির্মাণ খুবই নিয়মমাফিক। এটি একটি বিশেণ কলাকৌশলো বটে । চীনের থাং আর সুং রাজবংশের আমল ছিল কুছিন নির্মাণের স্বর্ণ যুগ । সেই সময়ে চমত্কার কলাকৌশরসম্পন্নআর সুমধুর সুরসম্পন্ন কুছিন নির্মিত হয় । তবে প্রাচীন কুছিনের নির্মাণের প্রচলন আজ আর নেই । এখনো কিছু সংখ্যক প্রাচীন কুছিন রয়ে গেছে । তবে সেগুলোর অধিকাংশই শিল্পীদের নিজেদের তৈরি বলে কুছিনের বিভিন্ন অংশের অবস্থান আর মাত্রা একক নয় । গত কয়েক দশকে চীনে কুছিন নির্মাণের কাজ আবার শুরু হয় এবং এর সংস্কার করা হয় । ফলে এই সুপ্রাচীন বাদ্যযন্ত্র নতুন জীবর লাভ করেছে ।
কুছিনের প্রকাশ-শক্তি অত্যন্ত সমৃদ্ধ । আনন্দ, রাগ, বেদনা আর প্রফুল্লতার ভাবানুভূতি এবং প্রাকৃতিক দৃশ্যের বর্ণনা কুছিনের মাধ্যমে জীবন্তভাবে প্রকাশ করা যায় । কুছিনের বাজানোর উপায় নানা ধরণের । এককভাবে বাজানো যায় , সিয়াওয়ের সংগে সমবেতভাবে বাজানো যায় এবং প্রাচীন গানগুলোর জন্যে সহযোগী বাজানোর ভূমিকা পালন করা যায় । বর্তমান সংরহ্মিত কুছিনের সুরগুলোর মধ্যে প্রায় অর্ধেক হচ্ছে বিশেষভাবে সহযোগী বাজানোরসুর ।
[
কুছিনের উপভোগ
]:《কাওশানলিউসুই
》
|