এ মেইশান ও ইউশানডাফো

       প্রাচীনকালের পিনয়াও বহিষ্ণু ছিল, আজকের পিনয়াও এখনও আকর্ষনপূর্ণ। একটি প্রাচীন দেয়াল নতুন যুগের পিনয়াও জেলা নগর বিভক্ত করেছে। মনে হয় দেয়ালের দু’পাশে দুটো তুনিয়া। দেয়ালের ভিতরের সড়ক, দোকানপাট এবং বাড়ীঘর ছ’শ বছর আগের আকার সংরক্ষিত আছে। কিন্তু দেয়ালের বাইরে ‘ নতুন নগর’ বলা হয়। এটা হল প্রাচীন আর আধুনিক স্থাপত্যের মিশ্র জায়গা। চিত্তাকর্ষনীয় জায়গাও বটে।  

  বতর্মানে পিনয়াও প্রাচীন নগরের পশ্চিম সড়ক ঠিক শতাধিক আগের ‘ ব্যাংকিং সড়ক’। এখনও এই পশ্চিম সড়কের দু’পাশে একের পর এক দোকান আছে। এ সব দোকানের ব্যবসা খুব ভাল। এ সব দোকান বেশ বড় নয়, কিন্তু এ সব পান্ডববজির্তএবং জীর্ণ দোকান অতীতে বিরাটাকার এবং দেশ-বিদেশ বিখ্যাত ব্যাংকিং কেন্দ্র ছিল।   

  পিনয়াও প্রাচীন নগরে অজস্র পুরাকীর্তী আছে। যেমন নগরের উত্তর-পূর্ব দিকের জেগু মন্দিরের উয়েনউ হলবতর্মানে চীনের তৃতীয় পুরাতন কাঠের তৈরী স্থাপত্য। এই হলের ইতিহাস এক হাজারাধিক বছরের। হলে দশম শতাব্দী সময়পর্বের রঙীন ভাষ্কর্যচীনের পূবর্কালীণ রঙীন ভাষ্কর্যগবষণার নমুনা। প্রাচীন নগরের সওয়াংলিন মন্দির ষষ্ঠ শতাব্দীতে নিমির্ত হয়। এই মন্দিরের দশাধিক হলে মোট দু’হাজারাধিক মাটির ভাষ্কর্য মুক্তি ত্রয়োদশ থেকে সপ্তবিংশ শতাব্দীতে বানানো হয়। এ সব মুক্তিকে ‘ চীনের প্রাচীনকালের মাটি ভাষ্কর্য শিল্পকলার মূল্যবান ভান্ডার’বলে আখ্যয়িত হয়।    

  হুওয়াংসেন পাহাড় চীনের মধ্য-দক্ষিণাংশের হুওয়াংসেন দশর্নীয়স্থানে অবস্থিত। তার আয়তন প্রায় ১২০০ বর্গকিলোমিটার।এই উচু পাহাড়ের উপত্যকা গভীর। ওখানের আবহাওয়া সহজেই পরিবতির্ত হয়। ঘন কুওয়াশা , আর্দ্রতাপূর্ণ আয়ু এবং বেশী বৃষ্টিপাত ওখানকার আবহাওয়ার বৈশিষ্ট্য। 

   চীনে একটি প্রবাদ আছে: ‘ পাঁচটি নাম-করা পাহাড় দেখতে ফিরে আসার পর সাধারণ পাহাড় আর দেখার ইচ্ছা নেই, হুয়াংসেন পাহাড় দেখতে ফিরে আসার পর এ পাঁচটি নাম-করা পাহাড় আর দেখার ইচ্ছা নেই’। তার অর্থ এই যে, হুওয়াসেন পাহাড় দেখতে যাওয়ার আগে যারা চীনের পাঁচটি নাম-করা পাহাড়( থাইসেন পাহাড়,হুয়াসেন পাহাড় , সংসেন পাহাড়, হ্যানসেন পাহাড়, হানসেন পাহাড় ) দেখতে ফিরে এসেছেন তাদের ধারণা হল পৃথিবীতে অন্যান্য পাহাড় আর দেখার প্রয়োজন নেই। তবে যদি কেউ এর আগেহুওয়াসেন পাহাড় দেখেছেন তাহলে চীনের উল্লেখিত পাঁচটি নাম-করা পাহাড় না দেখেও কোনো ক্ষতি নেই। এই প্রবাদ থেকে বুঝা যায় হুওয়াসেন পাহাড়ের দৃশ্য অদ্বিতীয় আর চিত্তাকষর্ক। 

  হুওয়াংসেন পাহাড়ের প্রাকৃতিক পরিবেশের শর্ত জটিল , প্রাকৃতিক পরিবেশের ব্যবস্থা স্থিতিশীল আর ভারসাম্য। জলবায়ুর প্রভাবে উদ্ভিদের প্রজাতি অনেক। হুওয়াংসেন পাহাড়ে এখনও একটি জলাভূমি আর তৃণভূমি আছে। পাহাড়ের শতকরা ৫৬ ভাগ বনাচ্ছন্ন, শতকরা ৮৩ ভাগ ঘাসাচ্ছন্ন । হুওয়াসেন পাহাড়ে চাও চাষ করা হয় ‘ হুওয়াংসেন মাওচিয়েন’ খুব বিখ্যাত চা। ‘ হুওয়াংসেন লিনসি ‘ দেশ-বিদেশ বিখ্যাত । এটা চীনের এক ধরনের ঐতিহ্যিক ওষুধ।হুওয়াংসেন পাহড়ে অগণ্য মূল্যবান গাছ আছে। এ সব গাছের মধ্যে কোন কোন দুষ্প্রপ্য। হুওয়াংসেন পাইন গাছ এ সব গাছের মধ্যে বসচেয়ে বিখ্যাত। তা ছাড়া, এখানে অনেক দুষ্প্রাপ্যপ্রাণী আছে। হুওয়াংসেন পাহাড় এ সব প্রাণীর থাকা আর প্রসবের আদর্শ জায়গা।