এগুলোর প্রত্যেকটিতে শয়নকক্ষের সামনে হলঘরের সজ্জা বজায় রয়েছে। চারটি প্রধান কোণায় গেইটগুলো মুখোমুখী দাড়িয়ে আছে, যাতে এগুলোর ভেতর দিয়ে উঠোনে যাওয়া যায়। ভবনগুলো পাহাড়ের গায়ে সুবিন্যস্তভাবে ছড়িয়ে থাকে এবং ছ’টি সমান্তরাল এলাকায় বিভক্ত। মাঝখানে তিনটি প্রধান উঠোন-আকারে ভিন্ন ভিন্ন। পূর্ব দিকের এলাকায় রান্নাঘর এবং পশ্চিম দিককার ভবনগুলো বেসরকারি পারিবারিক স্কুল, সঙ্গে বাগান। একটি গোপন পথে ফুলের ভূগর্ভস্থ ভাণ্ডারখানা রয়েছে। এই পথ জরুরী প্রবেশ ও বহিঃপথ হিসেবেও ব্যবহার্য। উত্তর দিকে রয়েছে ১৩টি আবাসিক গুহা। এগুলো সর্বাধিক উচ্চতায় থাকে বলে পুরো এলাকা তা থেকে দেখা যায় এবং এগুলো পর্যবেক্ষণ টাওয়ার হিসেবেও ব্যবহৃত। এই ভাবে উঠোনের মধ্যে উঠোন, দরজার পর দরজা এবং বাড়ির ওপরে বাড়ির এই বিন্যাস একটি গোলক ধাঁধার জগত্ সৃষ্টি করেছে।একটি পাথরের সেতু এক গভীর পরিখার উপর দিয়ে চলে গেছে কাও চিয়া ইয়া থেকে হোং মেন পাও অর্থাত্ পশ্চিম উঠোনের দিকে। এগুলো আরেকটি সম্পূর্ণ ও সুবিন্যস্ত দুর্গ এলাকা তৈরী করেছে, যা পূর্ব-পশ্চিমে ১০৫ মিটার (৩৪৪ ফুট) এবং উত্তর-দক্ষিণ ১৮০ মিটার (৫৯১ ফুট) লম্বা। এই দুর্গ এলাকার একমাত্র তোরণটির রং লাল বলে এর নাম হয়েছে হোং মে পাও অর্থাত্ লাল তোরণ দুর্গ। দুর্গের প্রাচীর বাইরের দিকে ৮ মিটার (২৬ ফুট) উচু এবং ভেতরের দিকে মাত্র ৪ মিটার (১৩ ফুট) উঁচু। ধূসর রঙের ইট দিয়ে তৈরী দু’মিটার (৬.৭ ফুট) পুরু এই প্রাচীরের উপরিভাগে যুদ্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আছে। প্রধান উঠোনগুলোতে আবাসিক গুহাগুলো দ্বিতল। দুর্গের ভেতরে চলাচলের জন্যে একটি রাস্তা লম্বালম্বি চলে গেছে এবং অন্য তিনটি এর উপর দিয়ে চলে গেছে। চীনা চিত্রাক্ষর “ওয়াং” এর মতো দেখতে রাস্তাগুলো। ওয়াং হচ্ছে চীনাদের অন্যতম পারিবারিক নাম।
ওয়াং পরিবারের বিশিষ্ট অবস্থান থাকলেও তাদের বিনীত আদিসূত্রও আছে। দূর্গের এই প্রাসাদের স্থাপত্য সম্ভ্রান্ত পরিবারের গৌরবের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সাদামাটা রীতিনীতির সংমিশ্রণ। এখানকার সজ্জা-বিন্যাসে দেবদারু, বাঁশ, কূলের বকুলের অজস্র প্রতিকৃতি ব্যবহৃত হয়েছে, কারণ পণ্ডিতরা এগুলোকে মানবিক গুণাবলীর প্রতীক বলে মনে করেন।
|