(চিত্র:শত-হাত কুয়ানইং দেবী--চৈনিক বৌদ্ধধর্মের অবলোকিতেশ্বর দেবীর মূর্তী। এটা ষানসি প্রদেশের পিংইয়াও জেলার শুয়াংলিন মন্দিরের মিং রাজবংশ আমলের একটি ভাস্কর্যকর্ম)
শুয়াংলিন মন্দিরে সংরক্ষিত রয়েছে মিং আমলের রঙিন ভাস্কর্য। এগুলো খুব চমত্কার শিল্পকর্ম। এগুলোর শিল্পকলার মানও উঁচু । অনুমাণ অনুযায়ী , শুয়াংলিন মন্দির নির্মাণের কাজ উত্তর-ওয়েই রাজবংশের (৩৮৬-৫৩৪ খ্রীষ্টাব্দ) প্রথম সময়পর্বে শুরু হয়। মন্দিরটি নির্মিত হওয়ার পর অনেকবার বিধ্বস্ত হয়েছিল। এখন মন্দিরটি চার দিকে প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। এটা একটি মন্দির-দুর্গ, এর ভেতরে আছে স্বর্গরাজ মন্দির। শাক্যমুনি মন্দির। মন্দিরের প্রধান ভবন, বৌদ্ধশোভা মন্দির এবং পশ্চিম দিকের “আরোহিত মন্দির, যুদ্ধদেবতা মন্দির, ক্ষিতিগর্ভ মন্দির, ভূদেবতা মন্দির, সহস্র বুদ্ধ মন্দির এবং বুদ্ধিসত্ত্বা মন্দির ইত্যাদি। প্রতিটি মন্দিরে আছে রঙিন বৌদ্ধমূর্তি(ভাস্কর্য)। মোট দু হাজারেরও বেশি মূর্তির মধ্যে ১৫৫৬টি সম্পূর্ণ ভাল অবস্থায় আছে । স্বর্গরাজ মন্দিরে আছে বজ্রধারী রক্ষক এবং আরোহিতদের মূর্তি। শাক্যমুনি মন্দিরে আছে ৪৮ সেট ঝুলন্ত মূর্তি ও ভাস্কর্য। তাতে বুদ্ধদেবের জীবনকাহিনীর নানা পর্বের কাহিনী , যেমন মাতৃগর্ভে পুনর্জন্ম, ভূমিস্থ হওয়া থেকে মানুষ হওয়া এবং নির্বাণলাভ পর্যন্ত ধারাবাহিক কাহিনীমালা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই সব ভাস্কর্যকর্মে। আরোহিত মন্দিরে ১৮টি আরোহিতের মূর্তির হাবভাব সত্যিকারের মতো সজীব, স্বাভাবিক । এটা রঙিন ভাস্কর্যকর্মের মধ্যে সেরা শিল্পকর্ম। সহস্র বুদ্ধ মন্দিরে আছে কুয়ানইং দেবী ( অর্থাত্ অবলোকিতেশ্বর দেবতার চৈনিক সংস্করণ)-এর মূর্তি, দৈব সেনাপতি স্কন্দ এবং যক্ষ ইত্যাদির মুর্তি । ক্ষিতিগর্ভ মন্দিরে আছে ক্ষিতিগর্ভ রাজা( দেবতা), দশ মন্দিরের যমরাজ ইত্যাদির মূর্তি । বুদ্ধিসত্ত্বা মন্দিরে আছে শত-হাত কুয়ানইং দেবী(অবলোকিতেশ্বর) ইত্যাদির ৪ শ’র বেশী মূর্তি । মূর্তিগুলোর মধ্যে বজ্রধারী রক্ষক এবং আরোহিতদের মূর্তি এবং কুয়ানইং দেবী (অবলোকিতেশ্বর)-র মূর্তি চমত্কারভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে । এখানকার রঙিন মুর্তির সংখ্যা এবং গুণগত মানের উত্কর্ষ খুবই লক্ষণীয় বলে শুয়াংলিন মন্দিরকে চীনের রঙিন ভাস্কর্যশিল্পের যাদুঘর বললেও আদৌ অত্যুক্তি হবে না ।
|