হাঁটু গেঁড়ে তীরন্দাজ সৈনিক(টেরা-কোটা)

       

(ছবিতে : ছিন সম্রাটের সমাধি এলাকায় দুই নম্বর খননস্থলে আবিষ্কৃত সৈন্য ও ঘোড়ার টেরা-কোটাগুলোর অন্যতম “হাঁটু গেঁড়ে তীর ছুড়ছে সৈনিক”)

       ‘হাঁটু গাঁড়া ভঙ্গিতে তীরন্দাজ সৈনিক’- টেরাকোটাগুলোর বেশির ভাগই (দু হাজার দু শো বছর আগেকার ছিন রাজবংশের ছিনশিহুয়াং সম্রাটের সমাধি এলাকার)দুই নম্বর খনন-স্থলের ভূগর্ভ থেকে আবিষ্কৃত হয়েছে। তার উচ্চতা ১.২ মিটার। ২ নম্বর খননস্থলের বিরাট গর্তে আছে হাজার হাজার সৈনিক ও ঘোড়া আকৃতির টেরাকোটা। সৈন্যরা বক্রাকৃতির সামরিক ব্যূহে সমবেত হয়েছে । ব্যুহটির কেন্দ্রস্থলেই তীরন্দাজ সৈন্য, বিশেষ করে হাঁটু গাঁড়া ভঙ্গিতে তীরন্দাজ সৈনিক-টেরাকোটা।

       হাঁটু গাঁড়া তীরন্দাজ সৈনিক-টেরাকোটার বৈশিষ্ট্য : শরীরের উপরের ভাগ একেবারে সোজা খাড়া হয়ে আছে, নিচের দিকে মাটিতে ডান হাঁটু গেড়ে, ডান পা’র ডগা স্বাভাবিকভাবেই মাটিতে ভর করে আছে, তা’ছাড়া বাঁ পা মাটিতে ভর করে আছে। মোট তিন পয়েণ্টে মাটিতে ভর করে শরীরের উপরের অংশ একেবারে খাড়া এবং দৃঢ়-অবিচল, কারণ গোটা শরীরের ভারকেন্দ্রবিন্দু খুব নিচু বলে এই ভঙ্গি খুব স্থিতিশীল । সঠিকভাবে তীর ছুঁড়ে নিশানা ভেদ করা যায়। তীরন্দাজ সৈনিক হলো বর্মধর সৈনিক। তার মাছের আঁচের আকৃতি-বিশিষ্ট বর্মের টুকরোগুলো শরীরের বক্র ক্রিয়ার সঙ্গে সঙ্গে যেন জলস্রোতের মতো প্রবাহিত হচ্ছে। তার পোষাকের অবস্থাও শরীরের বক্র-ক্রিয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘুরে বক্র হয়ে যাচ্ছে। এই সব সূক্ষ্মকাজের ফলে সৈনিক টেরাকোটাটি যেন সত্যি সত্যিই হাঁটু গেড়ে তীর ছুড়ছে । প্রতিটি তীরন্দাজ সৈনিকের মুখের রূপ আর ভাব ভিন্ন ভিন্ন, যেন প্রতিটি সৈনিকের বিশেষ চরিত্র ও ব্যক্তিত্ব আছে । হাঁটু গাঁড়া ভঙ্গিতে তীরন্দাজ সৈনিক-টেরাকোটা হলো চীনের প্রাচীন ভাস্কর্যশিল্পের বিশিষ্ট শিল্পসৃষ্টি ।