চীনের গণ রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলন চীনা জনগণের দেশপ্রেমিক যুক্ত ফ্রন্টের একটি সংস্থা , এই সংস্থা হলো চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির নেতৃত্বাধীন বহুদলীয় সহযোগিতা ও রাজনৈতিক পরামর্শের এক গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা এবং চীনের রাজনৈতিক জীবনে সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্র সমুন্নত করার এক গুরুত্বপূর্ণ রুপ । সংহতি ও গণতন্ত্র হলো চীনের গণ রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের দুটি প্রধান বিষয় ।
চীনের গণ রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের জাতীয় কমিটি , চীনের কমিউনিষ্ট পার্টি , বিভিন্ন গনতান্ত্রিক দল , নির্দলীয় ব্যক্তি , বিভিন্ন জনগোষ্ঠী ও সংখ্যালঘুজাতির প্রতিনিধি , হংকং বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল , ম্যাকাও বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল , তাইওয়ানের স্বদেশীয় ও প্রবাসী- চীনাদের প্রতিনিধি আর বিশেষ আমন্ত্রিতব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত , চীনের গণ রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের জাতীয় কমিটির সদস্যদের কয়েকটি মহলে বিভক্ত করা হয় , তাদের কার্যমেয়াদ পাঁচ বছর ।
চীনের গণ রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের জাতীয় কমিটি ও স্থানীয় কমিটির প্রধান দায়িত্ব হলো রাজনৈতিক পরামর্শ , গণতান্ত্রিক তত্ত্বাবধান আর রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে অংশ নেয়া ও পর্যালোচনা করা ।
রাজনৈতিক পরামর্শের অর্থ হলো রাষ্ট্রীয় ও স্থানীয় মূল নীতি আর রাজনীতি , অর্থনীতি , সংস্কৃতি ও সামাজিক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে পরামর্শ করা আর সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্বন্ধে পরামর্শ দেয়া । চীনের গণ রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের জাতীয় কমিটি ও স্থানীয় কমিটি চীনের কমিউনিষ্ট পার্টি , জাতীয় গণ কংগ্রেসের স্ট্যান্ডি কমিটি , গণ সরকার , গণতান্ত্রিক দল ও গণ গোষ্ঠীর প্রস্তাব অনুসারে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দল , বিভিন্ন গণ গোষ্ঠীর দায়িত্বশীল ব্যক্তি , বিভিন্ন জাতি ও বিভিন্ন মহলের প্রতিনিধিদের অধিবেশন ডাকতে পারে অথবা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আলোচনার জন্য রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের জাতীয় কমিটি ও স্থানীয় কমিটির কাছে দাখিল করার প্রস্তাব করতে পারে ।
গণতান্ত্রিক তত্ত্বাবধান হলো দেশের সংবিধান , আইনবিধির কার্যকরীকরণ , প্রধান প্রধান নীতির বাস্তবায়ন , রাষ্ট্রীয় সংস্থা ও তার কর্মকর্তাদের কাজকর্ম সম্বন্ধে প্রস্তাব দাখিল ও সমালোচনার মাধ্যমে তত্ত্বাবধান করা ।
রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে অংশ নেয়া ও রাষ্ট্রীয় ব্যাপার পর্যালোচনার অর্থ হলো দেশের রাজনীতি , অর্থনীতি , সংস্কৃতি ও সামাজিক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও জনগণের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো তদন্ত ও গবেষনা চালানো , জনসাধারণের অভিমত সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করা । তদন্ত রির্পোট, প্রস্তাব দাখিল অথবা অন্যান্য উপায়ে চীনের কমিউনিষ্ট পার্টি ও রাষ্ট্রীয় সংস্থার কাছে মতামত প্রকাশ করা ও প্রস্তাব দাখিল করা ।
১৯৪৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চীনের গণ রাজনৈতিক সম্মেলনের প্রথম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন জাতীয় গন কংগ্রেসের ক্ষমতা প্রয়োগ করে , সমগ্র দেশেরর জনগণের মনোবলের প্রতিনিধিত্ব করে গণ প্রজাতন্ত্রী চীনের প্রতিষ্ঠা ঘোষনা করে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ভূমিকা নিয়েছে । ১৯৫৪ সালে চীনের প্রথম জাতীয় গণ কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হওয়ার পর গণ রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলন আর জাতীয় গণ কংগ্রেসের দায়িত্ব ও ক্ষমতা প্রয়োগ করে নি । চীনের গণ রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলন চীনের ব্যাপকতমো দেশপ্রেমিক যুক্ত ফ্রন্ট হিসেবে দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনে আর বিদেশের সংগে বন্ধুত্ব বাড়ানোর ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে । ২০০৪ সালের মার্চ পর্যন্ত চীনের গণ রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের জাতীয় কমিটি পৃথিবীর ১০১টি দেশের ১৭০টি সংস্থা আর ৮টি আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থার সংগে যোগাযোগ করেছে এবং বন্ধুত্বপূর্ণ আদান-প্রদান প্রসার করেছে ।
|