হুয়াংমেই অপেরার পুরনো নাম ছিল “হুয়াংমেই তিয়াও” বা “ছাইছাতিয়াও” । এই অপেরা অষ্টাদশ শতাব্দির শেষ দিকে আনহুয়ে, হুপেই আর চিয়াংসি - এই তিনটি প্রদেশের সংলগ্নএলাকায় জনসাধারণের মধ্যে উদ্ভুত একটি ক্ষুদ্র অপেরা । তার একটি শাখা ধাপে ধাপে পূর্বদিকে প্রসারিত হয়ে আনহুয়ে প্রদেশের হুয়াইনিং জেলাকে কেন্দ্র করে গঠিত আনছিং অঞ্চলে স্থানীয় লোক শিল্পকলার সংগে সমন্বয় করে স্থানীয় ভাষায় গেয়ে আর আবৃত্তি করে নিজের বৈশিষ্ট্য গড়ে তুলেছে । তার তখনকার নাম ছিল “হুয়াইছিয়াং” বা “হুয়াইতিয়াও” । এটা আজকের হুয়াংমেইঅপেরারপূর্বরূপ।উনবিংশশতাব্দির মাঝামাঝি সময়ে “ছিংইয়াংছিয়াং” আর “হুয়েতিয়াও”য়ের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে হুয়াংমেই অপেরা আনুষ্ঠানিক অপেরায় রূপান্তরিত হয় । একটি স্থানীয় অপেরা হিসেবে হুয়াংমেই অপেরা ধাপে ধাপে জনসাধারণের কাছে পরিচিত হয় এবং তাদের স্বীকৃতি লাভকরে । প্রথম সময়কার হুয়াংমেই অপেরার বৈশিষ্ট্য ছিল নাচের সংগে সংগে গানগাওয়া । তখনএই অপেরা প্রধানত প্রাকৃতিক জীবনযাত্রারনমুনা দিত এবং এর কোনো নির্দিষ্ট প্রণালী ছিল না । কোনো কোনো অপেরার মধ্যে ( যেমন “থিয়ানসিয়ানফের” “বিদায়ের” মধ্যে ) কিছু উঠানামার ভংগিমা অন্যান্য অপেরা থেকে শেখার সময়ে “ছিংইয়াংছিয়াং” আর “হুয়েতিয়াও” থেকে ধার নেয়া হয়েছিলসেইসময়ে হুয়াংমেই অপেরার অধিকাংশ শিল্পী ছিলেন কৃষক আর হস্তশিল্পী। আষাক-পোষাক আর হাতের ব্যবহৃত জিনিষপত্র ও ঢাকাঢোলও সাময়িককালের জন্যে যোগাড় করা হতো । মাঝেমধ্যে শিল্পীরা যেখানে অভিনয় করতো , সেখানে দর্শকদের কাছ থেকে সেগুলো ধার নিতেন । এই সময়পর্বের হুয়াংমেই অপেরা ছিল মূলত গ্রামের শ্রমজীবিদের নিজেদের গাওয়া আর বিনোদনের একটি শিল্পকলা ।
হুয়াংমেই অপেরা প্রধানত হুয়াছিয়াং আর ফিংছি -এই দুটো বিভাগে বিভক্ত । হুয়াছিয়াংয়ের প্রধান রূপ হচ্ছে ক্ষুদ্র অপেরা । এর মধ্যে জীবনের আমেজ আর লোক সংগীতের রীতিনীতি আছে । ফিংছি হচ্ছে আনুষ্ঠানিক হুয়াংমেই অপেরার প্রধান প্রধান গান । এতে রয়েছে লম্বা লম্বা বর্ণনা আর ভাব প্রকাশ । এই সব গান চলন্ত মেঘ আর প্রবাহিত জলের মত উপভোগ্য ।
হুয়াংমেই অপেরার শ্রেষ্ঠ নাট্যকর্মগুলোর মধ্যে রয়েছে <<থিয়ানসিয়ানফেই>> , <<নিউলাংচিনুই>>, <<হুয়াইইনচি>>, <<নুইফুমা>>, <<স্বামী স্ত্রীর প্রদীপ দেখা >>, <<তাচুছাও>>,<<লিউসু কুয়া>>,
<<লানছিয়াওয়ে মিলন >>,<<পথে দেখা >>ইত্যাদি।
|