চীনের ইতিহাসে ‘ কুয়ানপাও’-এর
কথা অনেকে জানেন । তারা হচ্ছেন
খৃষ্টপূর্ব সপ্তম শতাব্দীতে
চীনের বসন্ত-শরত সময়পর্বের
রাজনীতিবিদ কুয়ানচুন ও পাও
সুইয়া । তারা দুজন ভালো বন্ধু
। কুয়ানচুন গরীব পরিবারের ছেলে
, পাওসুইয়া ধনী পরিবারের ছেলে
। তারা দুজন পরস্পরকে জানতেন
এবং আস্থা স্থাপন করতেন । তারা
দুজন একসঙ্গে ব্যবসা করেন ,
কুয়ানচুনের দেয়া অর্থ কম ,কিন্তু
মুনাফা বন্টনের সময় তিনি বেশি
টাকা নেন । পাওসুইয়া এতে কিছুই
বলেন না , তিনি জানেন কুয়ানচুনের
পরিবারে ছেলেমেয়ে বেশি , তাই
বেশি টাকা দরকার । পাওসুইয়া
বেশ কয়েকবার কুয়ানচুনকে বেশী
টাকা নিতে বলেন। কোনো কোনো
সময় কুয়ানচুনের ভুল প্রস্তাবে
ব্যবসা ব্যর্থ হয় , তাতে পাওসুইয়া
কিছু মনে করেন না । উপরন্তু
কুয়ানচুনকে সান্তনা দিয়ে বলতেন
, ব্যবসায় লোকসান হয়েছে , তার
কারণ আপনার প্রস্তাব ভুল নয়
, আমরা ভালো সুযোগ পাই নি ,
আপনি চিন্তা করবেন না । কুয়ানচুন
তিন-তিনবার সরকারী অফিসার হন
,কিন্তু তিনবারই সরকার তাকে
অপসারণ করে । পাওসুইয়া মনে
করেন , কুয়ানচুন তার দক্ষতা
জানানোর লোক পান নি বলে পদ
থেকে অপসারিত হয়েছেন। সৈনিক
হিসেবে যুদ্ধ করার সময় কুয়ানচুন
রণক্ষেত্র থেকে পালিয়ে আসে
, কিন্তু পাওসুইয়া তাকে পরিহাস
করেন নি , তিনি জানেন কুয়ানচুন
তার বৃদ্ধা মার জন্য পালিয়েছেন
।
পরে কুয়ানচুন ও পাওসুইয়া
দুজনই সরকারী অফিসার হন । তখনকার
ছিরাজ্যের পরিস্থিতি ছিল বিশৃঙ্খল
। রাজকুমাররা অন্য দেশে পলায়ন
করেন। কুয়ানচুন লু রাজ্য পালিয়ে
যাওয়া রাজকুমার চিউ-র সঙ্গে
থাকেন আর পাওসুইয়া চুরাজ্যে
পালিয়ে যাওয়া আরেকজন রাজকুমার
পাইয়ের সঙ্গে থাকেন । কিছুদিন
পর ছি রাজ্যে সশস্ত্র সংঘর্ষে
রাজার মৃত্যু হয় । রাজকুমার
চিউ ও পাই এই খবর পেয়ে রাজার
আসন পাওয়ার জন্য তত্ক্ষনাত্
ছি রাজ্যে ফিরে যান । পথে দুই
রাজকুমারের সাক্ষাত হয় । তার
সংরক্ষিত রাজকুমার চিও যাতে
রাজার আসন পান , কুয়ানচুন রাজকুমার
পাইকে লক্ষ্য করে তীর ছুড়লেন
, কিন্তু এই তীর পাইয়ের কোমরবন্ধের
উপর পড়ে । রাজকুমার পাই আহত
হন নি । পরে রাজকুমার পাই রাজা
হন , তিনিই চীনের ইতিহাসের
বিখ্যাত রাজা ‘ ছিহুয়ানকোন’
।
পরে কুয়ানচুন ও পাওসুইয়া দুজনই
সরকারী অফিসার হন । তখনকার
ছিরাজ্যের পরিস্থিতি ছিল বিশৃঙ্খল
। রাজকুমাররা অন্য দেশে পলায়ন
করেন। কুয়ানচুন লু রাজ্য পালিয়ে
যাওয়া রাজকুমার চিউ-র সঙ্গে
থাকেন আর পাওসুইয়া চুরাজ্যে
পালিয়ে যাওয়া আরেকজন রাজকুমার
পাইয়ের সঙ্গে থাকেন । কিছুদিন
পর ছি রাজ্যে সশস্ত্র সংঘর্ষে
রাজার মৃত্যু হয় । রাজকুমার
চিউ ও পাই এই খবর পেয়ে রাজার
আসন পাওয়ার জন্য তত্ক্ষনাত্
ছি রাজ্যে ফিরে যান । পথে দুই
রাজকুমারের সাক্ষাত হয় । তার
সংরক্ষিত রাজকুমার চিও যাতে
রাজার আসন পান , কুয়ানচুন রাজকুমার
পাইকে লক্ষ্য করে তীর ছুড়লেন
, কিন্তু এই তীর পাইয়ের কোমরবন্ধের
উপর পড়ে । রাজকুমার পাই আহত
হন নি । পরে রাজকুমার পাই রাজা
হন , তিনিই চীনের ইতিহাসের
বিখ্যাত রাজা ‘ ছিহুয়ানকোন’
।
ছিরাজ্যে ফিরে এসে কুয়ানচুন
ছিরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হলেন
। পাওসুইয়া স্বেচ্ছায় কুয়ানচুনের
সহকারী হন । তাদের দুজনের মিলিত
প্রচেষ্টায় ছিরাজ্য তখনকার
ক্ষুদ্র রাজ্যগুলোতে সবচেয়ে
শক্তিশালি দেশে পরিণত হয় ।
পাওসু্ইয়ার মৃত্যুর পর কুয়ানচুন
তার কবরের সামনে অনেকক্ষণ কাঁদেন।
তার প্রতি পাওসুইয়ার বিশ্বাস
স্মরণ করে কুয়ানচুন বলেন ,
রাজার আসন পাওয়ার লড়াইয়ে আমার
সংরক্ষণকারী রাজকুমার চিউ পরাজিত
হয় , অন্য মন্ত্রীরা প্রভূর
প্রতি নিজের অানুগত্য প্রকাশের
জন্য আত্মহত্যা করেন , কিন্তু
আমি বন্দী হলেও আত্মহত্যা করি
নি । পাওসুইয়া আমাকে পরিহাস
করেন নি । তিনি জানেন বৃহত
ব্রতের জন্য আমি ক্ষণস্থায়ী
সুনামকে গুরুত্ব দেই না । আমার
বাবা-মা আমার প্রাণ দিয়েছেন
, কিন্তু পাওসুইয়াই সত্যি সত্যি
আমার মনোভাব জানেন ।
কুয়ানচুন ও পাওসুইয়ার বন্ধুত্বের
কথা চীনে যুগ যুগ ধরে প্রচারিত
হয় । চীনারা বন্ধুদের সঙ্গে
অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ও পারস্পরিক
আস্থার সম্পর্ককে ‘কুয়ানপাও-র
বন্ধন’ অর্থাত কুয়ানচুন ও পাওসুইয়ার
সম্পর্ক বলেন ।
|