চীনের প্রথম রাজা ফুসিসি


       ফুসিসি হলো প্রাচীন পুথিপত্রে লিপিবদ্ধ করা চীনের প্রথম রাজা । তাঁর জন্ম প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে । 

 উপকথায় বলা হয়েছে , ফুসিসির জন্ম রহস্যময় । তার মা হলেন ‘ হুয়াসুউসি ’ নামক একটি মেয়ে । এক সুন্দর আবহাওয়ার দিন মেয়েটি একটি জলাভূমিতে বেড়াতে যান । জলাভূমির একটি বড় পায়ের দাগ তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে , তিনি নিজের পাদুটি এই দাগের উপর রেখেদাড়ান , ফিরে গিয়ে তার মা গর্ভবর্তী হন এবং নয় মাস পর ফুসিসির জন্ম হয় ।  

ফুসিসির একটি বোন ছিলো ,তার নাম নুইউয়ো । প্রাচীন পুথিপত্রে বলা হয়েছে ফুসিসি ও তার বোন নুইউয়ো দেখতে অদ্ভুদ , তাদের মাথা মানুষের , কিন্তু শরীর ড্রাগনের মতো । এতে প্রমাণিত হয়েছে , ফুসিসি খুব সম্ভতঃ ড্রাগণকে প্রতীক হিসেবে গ্রহন করা এক উপজাতির সর্দার । 

ফুসিসির আমলে উত্পাদন শক্তির দ্রুত প্রসার হয় । অনেক বড় বড় আবিষ্কার ফুসিসির সঙ্গে সম্পর্কিত । প্রাচীন পুথিপত্রে বলা হয়েছে , তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন জিনিস আর পশু-পাখির দাগ অনুসারে ‘ পা কুয়া ’ নামে এক রহস্যময় জ্যোতির্বিদ্যা তত্ত্ব আবিষ্কার করেন । এই তত্ত্ব অনুসারে পৃথিবীর বিভিন্ন জিনিসের ও বাস্তব জীবনের নানা বিষয় ব্যাখ্যা করা যায় ।  

এইভাবে দড়ির গিটঁ বাধাঁর মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ের রেকর্ড করার ইতিহাসের অবসান হয়। ফুসিসি দড়ি দিয়ে মাছ ধরার জাল তৈরি করেন এবং অধিবাসীদের মাছ চাষের পদ্ধতি শেখান । ফসল ও বিয়ে প্রভৃতি আনন্দমুখর দিন উদযাপনের জন্য ফুসিসি ‘ সে ’ নামে এক ধরনের বাদ্যযন্ত্র তৈরি করেন এবং ‘ চিয়া পিয়েন ’ নামে একটি সুর তৈরি করেন , তার এই অবদান তখনকার অধিবাসীদের বস্তুগত ও মানসিক জীবন সমৃদ্ধ করে তোলে । ফুসিসি স্থানীয় অধিবাসীদের কাঠ খনন করে আগুন সংগ্রহ করার পদ্ধতি শেখান এবং খাবার , আগুনে সেঁকে খাওয়ার উপদেশ দেন । ফলে অধিবাসীরা কাঁচা মাংস খাবার অসভ্য অভ্যাস ছেড়ে দেন । 

ফুসিসি প্রধানতঃ চীনের হোনান প্রদেশের হুয়াইইয়াং আর সানতুং প্রদেশের চিনিং ও ছুফুতে থাকতেন বলে এখন পর্যন্ত সানতুং প্রদেশের চিনিনে ফিসিসির সমাধিস্থল আছে । প্রতি বছরের চান্দ্রবর্ষের তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিন স্থানীয় অধিবাসীরা যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে চীনা জাতির এই পূর্বপুরুষের কথা স্মরণ করেন ।