অগভীর কুয়োর বেঙের কাহিনী


       এক অগভীর কুয়োতে একটি বেঙ থাকতো । বেঙটি নিজের জীবন সুখী মনে করতো । একদিন বেঙটি পূর্বসাগর থেকে আসা একটি বড় কাছিমকে বললো , তার ভাগ্য ভালো , বাইরে যেতে চাইলে সে কুয়োর মুখের বেড়ায় লাফাতে পারে , বিশ্রাম করতে চাইলে সে কুয়োর দেওয়ালের ভাঙ্গা ইটের উপর দাড়াতে পারে । কুয়োর তলদেশের কাদা মাটি তার পা পর্যন্ত থাকে। পোকা ও কাকড়ারা কেমন করে তার সঙ্গে তুলনা করতে পারে । তাছাড়া সে একা একটি কুয়োতে থাকে , যা ইচ্ছা তাই করতে পারে । কাছিম নেমে তার এই সুন্দর কুয়ো পরিদর্শন করতে পারেন ?  

  বেঙের থাকা কুয়োটি এতো ছোট যে সামুদ্রিক কাছিমের বাঁ পা ঢোকার পর ডান পা আর ঢুকতে পারে না । তাই বাধ্য হয়ে বাঁ পা কুয়ো থেকে বাইরে রেখে কাছিমটি সমুদ্রের দৃশ্য কুয়োর বেঙকে বর্ণনা করতে শুরু করে । সামুদ্রিক কাছিম বলে , হাজার কিলোমিটারের ব্যবধান সে দূর মনে করতে পারেন , কিন্তু তা’সমুদ্রের বিস্তীর্ণ বর্ণনা করতে যথেষ্ট নয় । হাজার মিটার সে লম্বা মনে করতে পারে , কিন্তু সমুদ্রের গভীরতা তার চেয়েও বেশী । সিয়া ও ইয়ুর আমলে দশ বছরের মধ্যে নয় বছরই বন্যা হতো , কিন্তু সমুদ্রের পানি উপচে উঠে না , শান রাজবংশের সময় প্রায়ই খরা দেখা দিতো , কিন্তু সমুদ্রের পানিও কমেনি । সমুদ্রের পানি বৃষ্টির কমবেশীর জন্য পরিবর্তন হয় না , তাই পূর্বসাগরে থাকা সত্যিই এক আনন্দের ব্যাপার ।  

  কুয়োর বেঙ সামুদ্রিক কাছিমের কথা শুনে হতভম্ব হয়ে গেলো । সামুদ্রিক কাছিমের বাসস্থান তার অগভীর কুয়োর সঙ্গে তুলনা করা যায় না , ফলে বেঙ নিজেকে ছোট মনে করে । 

  এই উপকথা আমাদের জানিয়েছে , আমাদের নিজের সীমিত গুণ বা অবদানের জন্য অহংকার করা উচিত নয় ।