হোসির দামী পাথর অর্পণের কাহিনী


       ছু রাজ্যের পিয়েন হো নামে এক মানুষ ছু পাহাড়ে একটি অকাটা দামী পাথর খুঁজে বের করেন । তিনি এই দামী পাথর রাজা লিকে উপহার হিসেবে দিলেন । রাজা রাজপ্রাসাদের মিস্ত্রীকে এই দামী পাথর সত্যি কিনা নির্ণয়ের আদেশ দিলেন । মিস্ত্রী বললেন , এটা এক সাধারণ পাথর । রাজা লি মনে করেন , পিয়েন হো তাকে ঠকানোর জন্য তাকে এই পাথর দিয়েছে , তাই পিয়েন হোর বাঁ পা কেটে দেয়ার আদেশ দিলেন ।  

  রাজা লির মৃত্যুর পর উ ছু রাজ্যের রাজা হলেন । পিয়েন হো আবার সেই দামী পাথর রাজা উকে উপহার দিলেন । রাজা উ আবার তার মিস্ত্রীকে এই পাথর নির্ণয়ের আদেশ দিলেন । মিস্ত্রী আবার রাজাকে বলেন যে পিয়েন হোর উপহার এক সাধারণ পাথর মাত্র । রাজা উও মনে করেন , পিয়েন হো তাকে ঠকিয়েছে , তাই পিয়েন হো’র ডান পা কেটে দেয়ার আদেশ দিলেন । 

   রাজা উর মৃত্যুর পর উয়েন ছু রাজ্যের রাজা হলেন । পিয়েন হো এই দামী পাথর নিয়ে ছু পাহাড়ের পাদদেশে বসে তিন-দিন তিন-রাত কাঁদেন । শেষে চোখের অশ্রু শেষ হয়ে রক্ত বেরিয়ে আসে । রাজা উয়েন এই খবর পেয়ে তার একটানা তিন-দিন তিন-রাত কাঁদার কারণ জানার জন্য লোক পাঠালেন। রাজার লোক পিয়েন হোকে জিজ্ঞেস করেন , পৃথিবীতে দুই পা কাটার শাস্তি পাওয়া লোক তুমি একা নয় , কেন তুমি এতো দুঃখিত ? 

  পিয়েন হো উওরে বলেন , আমি আমার দুটি পায়ের জন্য দুঃখ করি না , আমার দুঃখের কারণ হলো রাজা আমার উপহার দেয়া দামী পাথরকে সাধারণ পাথর বলেন এবং আমার মতো অনুগত লোককে ফাঁকিবাজী বলে মনে করেন । তার এই কথা শুনে রাজা উয়েন মিস্ত্রীকে পিয়েন হোর দেয়া দামী পাথর ভালো করে কেটে নির্ণয়ের নির্দেশ দিলেন । কাটার পর রাজা উয়েন দেখেন পিয়েন হোর দেয়ার উপহার সত্যিই একটি অসাধারণ দামী পাথর । তিনি এই দামী পাথরকে ‘ হোসিচিপি ’ নাম দিলেন । এর অর্থ হলো হো পরিবারের উপহার দেয়া দামী পাথর । 

  এই উপকথার লেখক হান ফেই পিয়েন হোর দামী পাথর রাজাকে উপহার দেয়ার অভিজ্ঞতাকে নিজের সঠিক রাজনৈতিক প্রস্তাব রাজার গ্রহন না করার উপমা দিয়েনিজের দুঃখ প্রকাশ করেছেন । এই কাহিনী আমাদের জানিয়েছে , ঠিক যেমন মিস্ত্রীকে দামী পাথরকে চিনতে হবে , তেমনি রাজাকে যোগ্য ব্যক্তির দক্ষতা জানতে হবে । এই কাহিনী আমাদের আরও জানিয়েছে , দামী পাথর অর্পনকারীকে ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত থাকতে হয় ।