চুয়াং চিকিত্সাবিদ্যা

চুয়াং চিকিত্সাবিদ্যার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

       চীনের সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে চুয়াং জাতি সবচেয়ে বড়। থাং রাজামল থেকে চুয়াং চিকিত্সাবিদ্যার উন্নয়ন শুরু হয়। সে সময় ওই অঞ্চলের লোকেরা বিষক্রিয়া দূরকরার জন্যে কিছু কিছু ব্যবস্থাপত্র লেখে। চিকিত্সা শাস্ত্রে এই ব্যবস্থাপত্রকে লিং নান চিকিত্সা বলে অভিহিত করেছে। এটি চুয়াং আর দক্ষিণ চীনের অন্যান্য সংখ্যালঘু জাতির চিকিত্সাবিদ্যার উন্নয়নের প্রতীক। চুয়াং চিকিত্সাবিদ্যা মিং ও ছিং রাজামলে (১৩৬৮--১৯১১ খ্রীষ্টাব্দ) কিছুটা উন্নতি লাভ করে। তত্কালীন লেখক লি শি জেনের সংক্ষিপ্ত ম্যাটেরিয়া মেডিকা বা চীনা ভাষায় বেন ছাও কাং মু এবং অন্যান্য স্থানীয় গ্রন্থে এর উল্লেখ দেখা যায়। তাছাড়া, সে সময় কিছু চিকিত্সা ইন্সটিটিউট আর বিশেষজ্ঞের আবির্ভাবও উল্লেখযোগ্য।  

     চুয়াং চিকিত্সাবিদ্যার বিকাশ মুখেমুখে বংশপরম্পরায় বিকশিত হতে থাকে। অনেক ব্যবস্থাপত্র মানুষের হাতে হাতে পাওয়া যায়। এগুলো চীনা চিকিত্সাবিদ্যার একটি অংশে পরিণত হয়।

চুয়াং চিকিত্সাবিদ্যার বৈশিষ্ট্য

     এটি কোনো পূর্ণাঙ্গ চিকিত্সাবিদ্যা নয় , এর অংশ চুয়াং ওষুধপত্র থেকে এসেছে এবং বাকী এসেছে জনসাধারণের হাত থেকে। চুয়াং অঞ্চল আধা-গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে অবস্থিত, যেখানে রয়েছে প্রচূর গাছপালা আর প্রাণীবৈচিত্র্য। সেখানকার মানুষ বন্য প্রাণী, সাপ, ইদুর ইত্যাদি খায় বলে জানা যায়। সেজন্যে বন্য প্রাণীকে ওষুধের উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।  

     চুয়াং ওষুধ বিষক্রিয়া বন্ধে খুবই কার্যকর। অনেক ধরণের বিষ যেমন সাপে কাটার বিষ, পোকা-কামড়ের বিষ, খাদ্যে বিষক্রিয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে এ ওষুধ খুবই কার্যকর। চুয়াংরা সাপের বিষ প্রতিরোধের ওষুধ তৈরীতে নিপূর্ণ। চুয়াংরা যেমন সব ধরণের বিষক্রিয়া বন্ধ করা যায় বলে বিশ্বাস করে, তেমনি উপযুক্ত মাত্রার বিষপ্রয়োগে রোগ-বালাই দূর করা যায় বলেও মনে করে।