চীনের বিখ্যাত নারী একাডেমীশিয়ান
 

       লিন ছিয়াওচি 

  চিকিস্যাবিদ , তিনি ফুচিযেন প্রদেশের সিয়ামেন শহরের লোক ।১৯২৯সালে তিনি সিয়েহো মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে স্নাতক হয়ে চিকিত্সাবিদ্যায় ডক্টরেট ডিগ্রীলাভ করেন। তিনি সিয়েহো হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিজ্ঞান ও ধাত্রীবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ও প্রধান , পেইচিং স্ত্রীরোগ ও ধাত্রী বিদ্যা হাসপাতালের অবৈতনিক পরিচালক এবং চীনা চিকিত্সা বিজ্ঞান একাডেমীর উপপরিচালক ছিলেন । আগে তিনি গর্ভকোষে ভ্রূনের শ্বাসনিঃশ্বাস সম্পর্কে গবেষণা চালিয়েছেন, নারিশিং সেল টিউমারের কারণ ও বড় হওয়ার নিয়ম , নারীর পেল্ভিক ক্ষয়রোগের কারণ ও এর চিকিত্সা নিয়ে গভীরভাবেগবেষণা চালিয়েছেন এবং বিপুলভাবে বিজ্ঞানের জনপ্রিয়তা সম্প্রচার ও নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্যরক্ষার কাজ করেছেন । চিকিত্সক হিসেবে তাঁর নৈপুন্য ছিল চমত্কার । ১৯৫৫ সালে তিনি চীনা বিজ্ঞান একাডেমির একাডেমিশিয়ান নির্বাচিত হন ।  

  সিয়ে সিতে 

   পদার্থ বিজ্ঞানী,ফুচিয়েন প্রদেশের ছুয়েনচৌ শহরের লোক ।১৯৪৬ সালে তিনি সিয়ামেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন। ১৯৫১ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মাস্সাচুসেট্টস টেকনোলোজি ইনস্টিটিউটে পদার্থবিদ্যায় ডক্টরেটডিগ্রি লাভকরেন এবং ইনস্টিটিউটটিতে পোষ্টডক্টরাল গবেষণা চালান । তিনি পরপর যুক্তরাষ্ট্র , বৃটেন,কানাডা, জাপান ও হংকং বিশেষ প্রশাসনিক এলাকার ১২টি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান থেকে সাম্মানিক ডক্টরেটডিগ্রি এবং জাপানের তোয়ো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাম্মানিক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন । ১৯৮৮ সালেতিনি তৃতীয় বিশ্বের বিজ্ঞান একাডেমীর একাডেমিশিয়ান নির্বাচিত হন । তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাহিত্য ও সাইন্স বিজ্ঞান একাডেমির বিদেশী একাডেমিশিয়ান ও সাংহাই ফুতান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ছিলেন । তিনি প্রধানত সেমিকন্ডাক্টর পদার্থবিদ্যা, কঠিন পদার্থের শক্তি-বর্ণালী ও ভৌত পদার্থপ্রভৃতিক্ষেত্রে অধ্যাপনা ও গবেষণা করতেন এবং বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেছেন । তিনি এক্ষেত্রের বৈজ্ঞানিক গবেষণার একজন প্রধান প্রতিষ্ঠাতা ও সংগঠক ছিলেন । ৯০-এর দশকে তিনি প্রধানত সেমিকন্ডাক্টরের বাহ্যির ও শর্ট পীরিয়ডের সুপার ল্যাটিসের শব্দ-বর্ণালী নিয়ে গবেষণা চালাতেন এবং গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেছেন ।১৯৮০ সালে তিনি চীনা বিজ্ঞান একাডেমীর একাডেমীশিয়ান নির্বাচিত হন ।  

  হো চেহুই  

  পরমানু পদার্থ বিজ্ঞানী । সানসি প্রদেশের লিনসি জেলার লোক , চিয়াংসু প্রদেশের সুচৌ শহরে তাঁর জন্ম হয় ।১৯৩৬ সালে তিনি ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন । ১৯৪০ সালে তিনি জার্মানির বার্লিন উচ্চ শিল্প বিশ্ববিদ্যালয় থেকেইন্জিনিয়ারিং ডক্টরেটডিগ্রি লাভ করেন । তিনি চীনা বিজ্ঞান একাডেমির উচ্চ শক্তি পদার্থবিদ্যা গবেষণালয়ের গবেষক । জার্মানির হাইডেলবার্গ রাজকীয় ইনস্টিটিউট—কে.ডাব্লিউ.আইতে পরমানু পদার্থবিদ্যা গবেষণা করাকালে তিনি পজিটিভ-নেগেটিভ ইলেক্ট্রনের এক্সচেন্জ-শক্তির সংঘর্ষ আবিস্কার ও গবেষণা করেছেন । ফ্রান্সের প্যারিসের ফ্রাসী ইনস্টিটিউটের পরমানু রাসায়নিক পরীক্ষাগারেকাজ করার সময় তিনি সহযোগীদের সঙ্গে ইউরেনিয়ামের তিনভাগে বিশ্লিষ্টকরণও চারভাগে বিশ্লিষ্টকরণআবিস্কার ও গবেষণা করেছেন । নয়া চীন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রথম দিকে তিনি সহযোগীদের সঙ্গে আত্মনির্ভরশীল হয়ে সাফল্যের সঙ্গে পারমানবিক শাঁসের ইমালশন পরিমাপক যন্ত্রপাতি তৈরী করেছেন । পরীক্ষাগার, উচ্চ পাহাড়ে মহাজাগতিক রশ্মি পর্যবেক্ষণকেন্দ্র , মহাকাশ বেলুন তৈরীতে নেতৃত্বদান ও মহাকাশ পদার্থবিদ্যা পরিচালনা প্রভৃতি ক্ষেত্রের গবেষণায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। ১৯৮০ সালে তিনি চীনা বিজ্ঞান একাডেমীর একাডেমিশিয়ান নির্বাচিত হন । 

  চিয়াং লিচিন 

  রসায়ন বিজ্ঞানী,তিনি পেইচিংয়ে জন্মগ্রহণ করেন । তিনি এখন চীনা বিজ্ঞান একাডেমীর রসায়ন গবেষণালয়ের গবেষক । ১৯৪৪ সালে তিনি পেইচিং ফুরেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রি লাভ করেন এবং ১৯৪৬ সালে মাষ্টার ডিগ্রি লাভ করেন । ১৯৫১ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেটডিগ্রিলাভ করেন। তিনি পরপর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যান্সাস বিশ্ববিদ্যালয় ও মাস্সাচুসেট্টস টেকনোলোজি ইনস্টিটিউটে পোষ্টডক্টরাল গবেষণা চালান । ৫০-এর দশকে তিনি কোর্টিসোনের গৌণ পদার্থের ও ভিটামিন-ডির আংশিক সংযুক্তির কাজ করেন । ১৯৫৫সালে স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের পর তিনি চীনের ল্যাকার ফেনলের গবেষণা,বোরন-নাইট্রোজেন-৬ চক্রাকাররাসায়নিক মিশ্রিত পদার্থের সংযুক্তি এবং হাই-সেন্সিটিভফিল্মের সহায়ক পদার্থ বিশ্লেষণ করার কাজ করেন । ১৯৭৮ সালের পর তিনি ফটোকেমিক্যালগবেষণার কাজ শুরু করেন । তিনি প্রধানত এক চীনা ভেষজ ওষুধ—ব্যাম্বু রেড ফাংগাস ও তার গৌণ পদার্থের সংযুক্তি ও ফটোথেরাপিব্যবস্থা, দুই, আলগি’র কাঠামো এবং ফটোসিনথেসিসেরশক্তি প্রেরণ প্রভৃতিগবেষণা করেন ।এই দুটো গবেষণা যথাক্রমে চীনা বিজ্ঞান একাডেমীর ১৯৯০সাল ও ১৯৯৩ সালে প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের দ্বিতীয় শ্রেণীর পুরস্কার পেয়েছে । ১৯৮০ সালে তিনি চীনা বিজ্ঞান একাডেমীর একাডেমিশিয়ান নির্বাচিত হন । 

   ইয়েন ওয়েনইন 

  কীটতত্ত্ববিদ। তিনি হোপেই প্রদেশের পিংসিয়াং জেলার লোক । ১৯৪৭ সালে তিনি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিদ্যা বিভাগ থেকে স্নাতক হন । তিনি চীনা বিজ্ঞান একাডেমীর সাংহাই কীটপতঙ্গ গবেষণালয়ের গবেষক । অতীতে তিনি মাছজাত পরজীবী ও মাছরোগ প্রতিরোধের গবেষণা করতেন । ১৯৬০ সালের পর তিনি ধারাবাহিকভাবে সারকারিয়ার শ্রেণী বিভাগ,বাহ্যিক অবয়ব, অভ্যাস, ভ্রূণের বর্ধন, জৈবভূগোল, তুলনামূলক শুক্রকীটবিদ্যা ও সাব-মাইক্রো কাঠামো প্রভৃতি বিষয় গবেষণা করেছেন । তিনি চীনের ১৬৪ ধরণের সারকারিয়া নিয়ে গবেষণা করে এরউত্সসম্পর্কে নতুন ধারণা পেশ করেছেন । এর মধ্যে ১৪১ নতুন আকার , ১৮ নতুন মহাজাতি ও ৪ নতুন জাতি আছে ।এর ভিত্তিতে সারকারিয়ার শ্রেণী বিভাগের নতুন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয় । ১৯৯৯ সালে “চীনের জন্তুসমূহ:দি ক্লাস অবসারকারিয়া ” প্রকাশিত হয় । ১৯৮৫ সালের পর তিনি মাটি ও প্রাণিবিদ্যারওপর ধারাবাহিক গবেষণা পরিচালনা করেছেন । তিনি ৬০জন পন্ডিতের সহযোগিতায় ৬টি আবহাওয়া মন্ডলে মাটি ও প্রাণির অবয়ব(তিনহাজার ধরণের), পরিবর্তনশীল নিয়ম আর মাটি পদার্থের পরিবর্তনে এর ভূমিকা এবং পরিবেশ দূষণের প্রভাব প্রভৃতি পরীক্ষা ও গবেষণা চালিয়েছেন । তিনি “ চীনের উপ-গ্রীষ্মমন্ডলের মাটি ও প্রাণী”, “চীনের মাটি ও প্রাণীর মানচিত্র” ও “ চীনের মাটি ও প্রাণী” প্রভৃতি বই সংকলন করেছেন । ১৯৯১ সালে তিনি চীনা বিজ্ঞান একাডেমীর একাডেমিশিয়ান নির্বাচিত হন ।