ইতিহাস ও বর্তমান অবস্থা

      খ্রীষ্টাব্দ পূবে ছিংহাই-তিব্বত মালভূমিতে বসবাসকারী তিব্বতজাতির পূর্ব পুরুষরা চীনের অভ্যন্তরে বসবাসকারী হানজাতির সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখতেন । সুদীর্ঘকাল ধরে তিব্বত মালভূমিতে ছড়িয়ে পড়া বহু উপজাতি ধাপেধাপে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বর্তমানের তিব্বত জাতিতে পরিনত হয় ।

  খ্রীষ্টাব্দের সপ্তম শতাব্দীর প্রথম দিকে চীনের মধ্য সমতলভূমি এলাকার তিন শতাধিক বছরের বিশৃঙখলা ও বিচ্ছিন্নতার অবস্থা শেষ হয়েছে । একই সময়ে তিব্বতের জাতীয় বীর সোংচানগান্বু আনুষ্ঠানিকভাবে থুফান রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন এবং লাসায় রাজধানী স্থাপন করেন । সোংচানগাবু ক্ষমতাসীনকালে থাং রাজবংশের প্রগতিশীল উত্পাদন-কৌশল ,রাজনীতি ও সংস্কৃতির ফলাফল গ্রহন করে রাজনীতি, অর্থনীতি ,সংস্কৃতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে থাংরাজবংশের সঙ্গে অত্যন্ত বন্ধুত্বময় সম্পর্ক বজায় রেখেছেন ।

  ত্রয়দশ শতাব্দীর মধ্যকালে তিব্বত অঞ্চল আনুষ্ঠানিকভাবে চীনের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত হয় । এরপর চীনের কয়েক রাজবংশের উত্থান-পতন এবং বহুবার কেন্দ্রীয় প্রশাসনের রদবদল হলেও তিব্বত কেন্দ্রীয় সরকারের শাসনাধীনে আছে । 

   ১৬৪৪ সালে ছিং রাজবংশ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ছিং সরকার আরও কড়াকড়িভাবে তিব্বত প্রশাসন করে । ফলে তিব্বতে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাবভৌমত্ব পালন করার কাজ ব্যবস্থাযুক্ত ও আইনগত করা হয়েছে । ১৭২৭ সালে তিব্বতে রাজবংশের কাযালয় খোলা হয় । তারা কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে তিব্বতের স্থানীয় প্রশাসনপালনে তত্ত্বাবধান করে । 

   ১৯৪৯ সালে চীন গণ প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় । কেন্দ্রীয় গণ সরকার তিব্বতের ইতিহাস আর বর্তমানের অবস্থা অনুসারে শাস্তিপূর্ণভাবে তিব্বত মুক্ত করার নীতি গ্রহন করে । তিব্বতী জনগণের ইচ্ছানুযায়ী কেন্দ্রীয় গণ সরকার তিব্বতে গণতান্ত্রিক সংস্কার চালায়, সামন্ততান্ত্রিক দাস ব্যবস্থা বাতিল করে । লক্ষ লক্ষ ভূমি-দাস ও দাস মুক্তি পান । ভূমি-দাস মালিকদের ব্যক্তিগত সম্পদ হিসেবে তাদের কেনা-বেচা ,হস্তান্তর , বিনিময় বা ঋন দেয়া হবে না,তাদের ভূমি-দাস মালিকের অত্যাচারে পরিশ্রম করতে হবে না এবং এর পর থেকে তারা মানুষের স্বাধীনতা পেয়ে নতুন সমাজের মালিক হন । আরও কয়েক বছরের স্থিতিশীল বিকাশের পর ১৯৬৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় । 



চীনের থাংরাজবংশ আমলের সোংচানগাবু ও রাজকুমারী ওয়েনছেন-এর প্রতিমূর্তি