দক্ষিণ সিনচিয়াংয়ের লোবুপো জায়গার উত্তর পশ্চিম দিকে অবস্থিত প্রাচীনতম লৌলান নগর রেশমী পথের প্রবেশ করার এক গুরুত্বপূর্ণ পথ ছিলো । লৌলান এক জনশুন্য জায়গা । চারিদিকে মরুভূমি,ইয়াতান- ল্যান্ডফোর্মস আর শক্ত লবনের খোল দ্বারা পরিবেষ্টিত হয় বলে তার পরিবেশ অত্যন্ত জঘন্য ।
লিপিবদ্ধ ইতিহাস থেকে জানা গেছে , খ্রীষ্টপূব ২ শতাব্দীতে লৌলান পশ্চিমাঞ্চলের এক সমৃদ্ধতম এলাকা ছিলো । কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার হলো এই যে , নামকরা লৌলান রাজ্য সমৃদ্ধশালী হওয়ার পাঁচ-ছ শ বছর পর হঠাত অদৃশ্য হলো । প্রাচীনতম লৌলান নগর কিভাবে অদৃশ্য হলো? সমস্যাটি সূদীর্ঘকাল ধরে দেশীবিদেশী প্রত্নতত্ত্ববিদ আর বৈজ্ঞানিকদের আকৃষ্ট করার এক সমস্যা ছিলো। লৌলান দেশীবিদেশী এক্সপ্লোরারদের যেতে চাওয়ার এক রহস্যপূর্ণ জায়গাও।
এ পর্যন্ত প্রত্নতত্ত্বেরআবিস্কারের পর জানা গেছে , প্রাকৃতিক আর কৃত্রিম নানান ধরনের জটিল কারনে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে এবং অবশেষে বাতাস ও বালির আক্রমনে লৌলান মরুভূমিতে অদৃশ্য হয়েছে । আবিস্কার করা হয়েছে যে প্রাচীনতম লৌলান নগরের আয়তন এক লক্ষ ২০ হাজার বর্গমিটার । এর দেয়াল মাটি , খাগড়া আর গাছের ডাল দিয়ে তৈরী হয় । উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিক পর্যন্ত এক প্রাচীনতম নদী নগরটির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিলো । লৌলানে এখন শুধু বুদ্ধধর্মের মন্দির আর তার আশেপাশে নির্মানগুলো আছে । তাছাড়া নগর আর তার আশেপাশে আছে প্রাচীনকালের আলোক-সংকেত টাওয়ার,খাদ্যশস্যের গুদাম আর প্রাচীনকালের কবরস্থান । লৌলানের প্রাচীনকালের কবর থেকে ৩৮০০ বছর আগের শুকনো মৃতদেহ---“লৌলান সুন্দরী” উদ্ধার করা হয়েছিলো । প্রাচীনতম লৌলান নগরে এখনো ভাঙ্গা মৃত্পাত্রাদির টুকরা,পশমী কাপড়ের টুকরা,তাম্র মুদ্রা,অস্ত্রশস্ত্র,রেশমী কাপড়ের টুকরা প্রভৃতি ইতিহাসের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে ।
( ম্যাপ: মরুভূমিতে প্রাচীনতম লৌলান নগর)
|