|
|
|
|
|
দুই তীরের আর্থ-বাণিজ্যিক আদানপ্রদানের বর্তমান অবস্থা
|
|
১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত ৩০ বছরে তাইওয়ান প্রণালী অঞ্চলের তীব্র সামরিক সংঘর্ষ আর উত্তেজনাময় সামরিক অচলাবস্থার দরুন দুই তীরের মধ্যে আর্থ-বাণিজ্যিক আদানপ্রদান মোটামুটি বন্ধ থাকে। অবশ্য তাইওয়ানের একান্ত প্রয়োজনীয় এবং অপরিহার্য অল্প কয়েক ধরনের সামগ্রী মূলভূখণ্ড থেকে হংকং হয়ে তাইওয়ানে রপ্তানী করা হয়, যদিও পরিমাণ খুবই সামান্য।
১৯৭৯ সালের পর দুই তীরের মধ্যেকার অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য চীন সরকার ধারাবাহিক ব্যবস্থা নিয়েছে। তাইওয়ান কর্তৃপক্ষও বাধ্য হয়ে মূলভূখণ্ড সম্পর্কে তার আর্থ-বাণিজ্যিক নীতির সংশোধন করে এবং ধাপে ধাপে দুই তীরের আর্থ-বাণিজ্যিক আদানপ্রদানে বাধানিষেধ শিথিল করে দেয়। ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ দুই তীরের মধ্যে বাণিজ্যের মোট পরিমাণ ছিল ৩০৯.১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, তার মধ্যে তাইওয়ানের কাছে মূলভূখণ্ডের রপ্তানী ছিল ৪৮.৮৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার , আর তাইওয়ান থেকে মূলভূখণ্ডের আমদানী ছিল ২৬০.২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, তাতে চীনের মূলভূখণ্ডের বাণিজ্যিক ঘাটতি ছিল ২১১.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার । ১৯৯১ সাল থেকে মূলভূখণ্ড তাইওয়ানের বাণিজ্যিক উদ্বৃত্তের বৃহত্তম উত্স হয়ে দাঁড়ায় । একই সময়ে তাইওয়ান মাতৃভূমির মূলভূখণ্ডের বৈদেশিক পুঁজির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উত্স হয়ে দাঁড়ায়।
বর্তমানে দুই তীরের আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নের কিছু মৌলিক বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায় । প্রথমত, দুই তীরের অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের এমন এক কাঠামো মোটামুটিভাবে গড়ে উঠেছে যে, তা প্রধানত হলো পরোক্ষ বাণিজ্য আর মূলভূখণ্ডে তাইওয়ানী ব্যবসায়ীদের পুঁজি বিনিয়োগ । এই সম্পর্কের প্রধান বিষয়বস্তু ও পদ্ধতি হলো : শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত আদানপ্রদান, আর্থিক আদানপ্রদান এবং কর্মী প্রশিক্ষণ ইত্যাদি। দ্বিতীয়ত, দুই তীরের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক হচ্ছে একতরফা, পরোক্ষ এবং ভারসাম্যবিহীন । তাইওয়ান কর্তৃপক্ষের আরোপিত বাধানিষেধের দরুণ তাইওয়ানী ব্যবসায়ীরা মাতৃভূমির মূলভূখণ্ডে প্রধানত পরোক্ষভাবেই পুঁজি বিনিয়োগ করে থাকেন, অর্থাত্ তৃতীয় স্থানে নিবন্ধিত কোম্পানির মাধ্যমেই কেবল মূলভূখণ্ডে পুঁজি বিনিয়োগ করতে পারেন, অবশ্য ১০ লক্ষ মার্কিন ডলারের কম পুঁজি সরাসরি তাইওয়ানী কোম্পানির নামে বিনিয়োগ করতে পারেন, কিন্তু এই পুঁজি তবুও তৃতীয় স্থান হয়ে মাতৃভূমির মূলভূখণ্ডে পাঠাতে হয় । তাইওয়ান কর্তৃপক্ষ দুই তীরের সরাসরি বাণিজ্য প্রত্যাখ্যান করে, ফলে দুই তীরের মধ্যে বাণিজ্য শুধু তৃতীয় স্থানের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে চলতে পারে । কারণ তাইওয়ান কর্তৃপক্ষ তাইওয়ান দ্বীপে মাতৃভূমির মূলভূখণ্ডের পুঁজি বিনিয়োগ কড়াকড়িভাবে নিষিদ্ধ করে, তাই একতরফা পুঁজি বিনিয়োগের অস্বাভাবিক পরিস্থিতি দেখা দেয় এবং দুই তীরের মধ্যে বাণিজ্যের অ-ভারসাম্যমূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তৃতীয়ত, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই তীরের অর্থনৈতিক সম্পর্কে পরস্পর-নির্ভরশীলতার মাত্রা ক্রমেই জোরদার হচ্ছে, পরস্পরের পরিপূরক অবস্থা গড়ে উঠছে ।
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|