Web bengali.cri.cn   
ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নিহতের ২০তম বার্ষিকীতে স্মরণসভা
  2015-12-18 17:49:20  cri

চলতি বছর ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইযজাক রবিন নিহত হওয়ার ২০তম বার্ষিকী পালিত হয়েছে। এদিন ৩১ অক্টোবর সন্ধ্যায় এক লাখেরও বেশি মানুষ তেল আভিভ-এর রবিন চত্বরে মিলিত হয়ে শান্তির প্রতি অঙ্গীকার করে ও তাদের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে স্মরণ করেছে। মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন স্মরণ অনুষ্ঠানে অংশ নেন এবং ইসরাইল-ফিলিস্তিন শান্তি বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। বিস্তারিত খবর জানতে জেরুজালেমে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সংবাদদাতা জাং চিনের রিপোর্ট শুনুন।

আমি আজ নিজেকে মনে করছি একজন শান্তি সেনা। আজ যুদ্ধাভিযানে মৃত্যু ও ক্ষতচিহ্ন নেই, রক্তক্ষয় ও বেদনা নেই। এটা হচ্ছে একমাত্র উদ্দীপনাময় যুদ্ধ; শান্তি যুদ্ধ।

২০ বছর আগে, তত্কালীন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী রবিন বিশ্বের কাছে ফিলিস্তিন-ইসরাইল শান্তি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিল। ১৯৯৩ সালে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন 'অসলো চুক্তি' স্বাক্ষর করেছিল। এটাকে দু'পক্ষের শান্তি বাস্তবায়নে বড় ধরনের অগ্রগতি হিসেবে মনে করা হয়। ১৯৯৪ সালে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য রবিন তত্কালীন ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাত ও ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী শিমন পেরেস যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরষ্কার লাভ করেন। এ শান্তি প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার সময় ১৯৯৫ সালের ৪ নভেম্বর তেল আভিভে একটি শান্তি সমাবেশে উগ্র ডানপন্থী ইহুদি রাজনীতিকের গুলিতে ৭৩ বছরের রবিন নিহত হন।

২০ বছর পর ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে বর্তমানে অত্যন্ত উদ্বেগজনক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গত অক্টোবর অব্যাহতভাবে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা বাড়ছে। হামলায় নিহত হয়েছে কমপক্ষে ১১ জন ইহুদী। প্রায় ৭০ ফিলিস্তিনি বিক্ষোভ সংঘর্ষ অথবা হামলায় অংশ নেয়ার কারণে ইসরাইলি পুলিশের গুলিতে মারা গেছে।

স্থানীয় সময় ৩১ অক্টোবর সন্ধ্যায় প্রায় ১ লাখ ইসরাইলি রবিনের স্মরণে মহাচত্ত্বরে মিলিত হয়।

তিনি ছিলেন খুবই ইতিবাচক একজন মানুষ। তিনি জানতেন তিনি কি করছেন। তার সারাটা জীবন আমাদের দেশের জন্য কাজ করেছেন। এখন আমরা খুব কঠিন সময়ে রয়েছি। কিন্তু তিনি ছিলেন শান্তির জন্য লড়াই করা একজন মানুষ। তাকে মনে না রাখলে, তার নীতিকে সামনে এগিয়ে না নিলে, আমাদের অবস্থা খুবই খারাপ হবে।

জন সমাবেশে ইহুদী ছাড়া কিছু আরব চেহারার মানুষও দেখা যায়। ১৭ বছরের এক অ্যারাবিয়ান মেয়ে বলেন, সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে তারা খুব উৎকণ্ঠিত। কিন্তু রবিনকে স্মরণ করা ও শান্তির প্রতি আহ্বানও জানাতে হবে। তিনি বলেন,

এখন আগের মতো সবসময় বাইরে যাই না। হামলা এবং ইহুদীদের সঙ্গে আমাদের সাম্প্রতিক সম্পর্কের কারণে। বা-বামা আমাদের বাইরে যেতে দেন না। কিন্তু রবিনের জন্য আমরা এখানে এসেছি। আমরা শান্তির প্রত্যাশায় তাকে স্মরণ করি। আমরা শান্তির উপাসনা করি। আমরা শান্তি চাই, আমরা শান্তি প্রত্যাশা করি।

সে সময় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের নেতৃত্বে 'অসলো চুক্তি' স্বাক্ষরিত হয়েছে। তিনি স্মরণ সভায় অংশ নিয়েছেন এবং ভাষণ দিয়ে ইসরাইলিদের ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন,

আপনাদের সবাইকে প্রধানমন্ত্রী রবিনের অপূরণীয় স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। ফিলিস্তিন-ইসরাইল শান্তির জন্য আগামীতে রবিনের পথ অনুসরণ করতে হবে। রবিন মনে করতেন নিজেদের প্রতিবেশীর সঙ্গে যৌথভাবে ভবিষ্যত্ উপভোগ করা উচিত, যাতে তাদের সন্তানরা ভবিষ্যতে শান্তি প্রতিষ্ঠার সুযোগ পায় এবং এজন্য ভূমিকা রাখতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও ভিডিও'র মাধ্যমে রবিনের স্মরণসভায় যোগ দেন। তিনি বলেন, বন্দুকের গুলি এক জনের জীবন কেড়ে নেয়। কিন্তু তার মনোভাব, শান্তির স্বপ্ন কখনও কেড়ে নিতে পারে না, নির্মূল করতে পারে না।

এ সম্পর্কে ওবামা বলেন,

শান্তি তো প্রয়োজনীয়। কারণ এটা হলো ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের স্থায়ী নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার একমাত্র পদ্ধতি। শান্তি হলো ন্যায়সঙ্গত। ইহুদিদের নিজেদের জন্মস্থানে জীবনযাপন করার অধিকার আছে। ফিলিস্তিনিদের নিজেদের ভূমিতে অবাধ স্বাধীনতা ভোগের অধিকার রয়েছে। তাই শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। দুই পক্ষ সত্যিকারভাবে আপোস এবং সংকট সমাধান করতে চাইলে একটি গণতান্ত্রিক ইহুদি দেশ এবং একটি বাস্তব ও কার্যকর, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র নিরাপদে সহাবস্থান করতে পারবে।

(প্রেমা/তৌহিদ)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040