প্রথমে চলুন সিঙ্গাপুরের দিকে নজর দেই। সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্ট ভবনে গত ৭ নভেম্বর বিকেলে দেশটির প্রেসিডেন্ট টনি তান কেং ইয়ামের সঙ্গে বৈঠক করেন সফররত চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং।
বৈঠকে দু'নেতা দু'দেশের সম্পর্ক এবং সার্বিক অংশীরদারিত্বের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে একমত হন।
এ সময় তারা চীন-সিঙ্গাপুর অবাধ বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনাও করেছেন।
বৈঠকে প্রেসিডেন্ট সি বলেন, চীন-সিঙ্গাপুর কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ২৫তম বার্ষিকীর সময় এ সফরে তিনি অনেক আনন্দিত। গত ২৫ বছরে দু'দেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্যায়ে কার্যকর সহযোগিতার সম্পর্ক তৈরি করেছে। চীন সিঙ্গাপুরের সঙ্গে অভিন্ন প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি নতুন ভবিষ্যত রচনা করতে চায়।
প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেন, চীন সিঙ্গাপুরের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের লেনদেন বজায় রাখবে, সময়ের সঙ্গে এগিয়ে যাবে ও কার্যকর সহযোগিতার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করবে। এ ছাড়া, 'এক অঞ্চল, এক পথ' ধারণার প্রেক্ষাপটে নতুন সহযোগিতার পদ্ধতির উন্নয়ন করবে এবং আর্থিক সহযোগিতার সম্ভাবনা খুঁজবে। সেই সঙ্গে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়গুলোতে সমন্বয় ও সহযোগিতা জোরদার করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট সি জোর দিয়ে বলেন, চীন প্রতিবেশী দেশগুলোকে অনেক গুরুত্ব দেয়। এটি চীনের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির ভিত্তি। পেইচিং সিঙ্গাপুর ও অন্য এশীয় দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে ইচ্ছুক বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে টনি তান কেং ইয়াম দু'দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ২৫তম বার্ষিকীতে প্রেসিডেন্ট সি'র সফরকে স্বাগত জানান।
তিনি বিশ্বাস করেন, প্রেসিডেন্ট সি'র এ সফরের মাধ্যমে দু'দেশের সম্পর্ক নতুন পর্যায়ে পৌঁছবে।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দু'দেশের সম্পর্ক অনেক উন্নত হয়েছে। চীনের প্রস্তাবিত এশিয়া অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংককে পূর্ণ সমর্থন দেয় সিঙ্গাপুর। সিঙ্গাপুর চীনের সঙ্গে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে আরো ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বন্ধুরা আপনারা কি জানেন, গত ৯ নভেম্বর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি ভাষা ভবনে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক উত্সব। চীনের উত্থাপিত 'এক অঞ্চল, এক পথ' কর্মসূচির আওতায় এ উত্সবের আয়োজন করা হয়।
এ সময় চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের বাণিজ্য কাউন্সিলর মো. মাহফুজুল আলম খান, বাংলা ভাষার অনুবাদক তুং ইউরো ছেন, চীন আন্তর্জাতিক বেতার বিভাগের প্রুফ রিডার, অনুবাদক সি চিং উ এবং ভারতীয় ভাষা ও সাহিত্য বিশেষজ্ঞ ডক্টর ওয়ে মিং লি উপস্থিত ছিলেন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে চীনের বাংলা ভাষার শিক্ষার্থীরা গান ও নাচ পরিবেশন করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পোশাকও এখানে প্রদর্শন করা হয়। এ ছাড়া, দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী নাচ অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা হয়।
এ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের একটি মজার দিক ছিল। সেটি শুনুন এবার।
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা মাত্র দেড় মাস ধরে বাংলা ভাষা শিখছে। এতো অল্প সময়ে নতুন কোনো ভাষা শিখে সে ভাষায় কথা বলা কিন্তু সত্যিই অনেক কঠিন ব্যাপার। তারপরও ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কোনো শিক্ষার্থী কিন্তু ভালোই বাংলা বলতে পারে। বিশ্বাস হচ্ছে না? অবশ্যই শুনুন এ সপ্তাহের অনুষ্ঠান।
বন্ধুরা, পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব শিক্ষার্থীদের বাংলা ভাষা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন বাংলাদেশের জনাব কিশোর কুমার। চীনের থাং রাজবংশের একজন বিখ্যাত কবি লি পাইয়ের একটি কবিতা অনুবাদ করেছেন, তিনি। প্রিয় বন্ধুরা সে অনুবাদ কি শুনতে চান?
প্রথমে চীনা ভাষায় শুনুন কবিতাটি। এরপর তার অনুবাদ
চীনা ভাষা:
窗前明月光
疑是地上霜
举头望明月
低头思故乡
সরল অনুবাদ:
শয্যালগ্ন স্নিগ্ধ জোছনা ছটা
ভ্রমে ভাবি ভূতল তুষারে সাঁটা
আঁখি তুলি হেরি ভরা চাঁদ
জাগে মনে স্বদেশের স্বাদ
প্রিয় শ্রোতা, আজকের অনুষ্ঠান আপনাদের কেমন লাগলো? আপনারা যদি 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' বিষয়ক কোনো কিছু জানতে বা আলোচনা করতে চান, তাহলে আমাকে চিঠি লিখবেন বা ই-মেইল করবেন। আপনাদের কাছ থেকে চমৎকার পরামর্শ আশা করছি। আর আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি, আমার ইমেইল ঠিকানা হলো, hawaiicoffee@163.com।
চিঠিতে প্রথমে লিখবেন, 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' অনুষ্ঠানের 'প্রস্তাব বা মতামত'। আপনাদের চিঠির অপেক্ষায় রইলাম।
শ্রোতাবন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এখানেই শেষ করছি। অনুষ্ঠান শোনার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আগামী সপ্তাহে একই দিন, একই সময় আপনাদের সঙ্গে আবারো কথা হবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাই চিয়ান (জিনিয়া/তৌহিদ)