Web bengali.cri.cn   
আত্মবিশ্বাসী হন, সফলতা অর্জন করুন
  2015-11-12 09:31:42  cri


আত্মবিশ্বাস একটি গুরুত্বপূর্ণ মানসিক শক্তি। ব্যক্তি জীবনের প্রতিটি কাজের জন্য এ শক্তি প্রয়োজন।

এই বিশ্বে সফল হতে হলে আত্মবিশ্বাসী হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। যার আত্মবিশ্বাস যত বেশি, জীবনের সব ক্ষেত্রে তার সফলতা ততো বেশি। আর আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে প্রয়োজন কিছু বিষয়কে অনুসরণ করা। সুপ্রিয় শ্রোতা আজকের এ অনুষ্ঠানে আমরা আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের কিছু পরামর্শ জানিয়ে দেবো। চলুন জেনে নেয়া যাক সে সব পরামর্শ।

আচ্ছা বন্ধুরা এ ধরনের পরামর্শ জানার আগে আমরা সবাই প্রথমে নিজেদের জিজ্ঞাসা করি, আমাদের আত্মবিশ্বাস কেমন? বা আমরা কতটুকু আত্মবিশ্বাসী?

এখানে আমরা কিছু বিষয় নিয়ে আত্মপর্যালোচনা করবো।

১. নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে অনুশোচনা

কম আত্মবিশ্বাসী মানুষ সবসময় নিজের নেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়ে অনুশোচনা করে এবং যথাযথ আত্মবিশ্বাসী মানুষ আফসোস ছাড়াই বাঁচতে চায়। ভুল হোক কিংবা সঠিক হোক, নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে কখনো দ্বিতীয় বার ভাবে না তারা। কারণ ভুল সিদ্ধান্ত যদি নিয়েও থাকে সেটা আর পাল্টানো সম্ভব না।

২. বক্তৃতা দিতে ভয় পাওয়া

মানুষের সামনে কম আত্মবিশ্বাসী লোকেরা বক্তব্য দিতে ভয় পান। নিজের মতামত প্রকাশ করতে চান না। তারা সবসময় চিন্তা করতে থাকেন যে, যদি অন্যেরা আমার সঙ্গে একমত না হয়, আমার বিরোধিতা করে, তাহলে কি হবে? যথাযথ আত্মবিশ্বাসী মানুষ যে কোনো পরিস্থিতিতে যে কোনো জায়গায় মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের গুছিয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারে।

৩. মাথা নিচু করে চলা

আপনারা দেখেছন কি? কম আত্মবিশ্বাসী মানুষ মাঝেমধ্যেই মাথা নিচু করে চলাফেরা করে। অপর দিকে আত্মবিশ্বাসী মানুষ তার শারীরিক অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমেই নিজের আত্মবিশ্বাস দেখিয়ে দেন। সব সময় তাদের মাথা উঁচু থাকে এবং তাদের শারীরিক ভঙ্গি থেকে বোঝা যায় যে, তারা অনেক আত্মবিশ্বাসী।

৪. সবসময় অন্যের কাছ থেকে নিজের মূল্যায়ন চান।

কম আত্মবিশ্বাসী মানুষ সবসময় অন্যের কাছ থেকে নিজের কাজের মূল্যায়ন চান। অন্যের কথায় কান দেয় এবং চিন্তা করতে থাকে। বাকিরা কে, কী করল তার বদলে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করে।

৫. নিজের মতের বাইরে কাজ করা

কম আত্মবিশ্বাসী মানুষ মাঝেমধ্যেই নিজেদের বিশ্বাসের বাইরে কাজ করে যায়। তারা কোনো কিছু মন থেকে বিশ্বাস না করলেও সেটা নিয়ে কাজ করে। আত্মবিশ্বাসী মানুষ নিজের বিশ্বাসের বাইরে কাজ করে না।

৬. একা থাকা

কম আত্মবিশ্বাসী মানুষ একা থাকতে পছন্দ করে। একা থাকাকে নিরাপদ মনে করেন তারা। একা থাকলে অন্যদের আলোচনায় যোগ দেওয়ার প্রয়োজন নেই, তাদের সামনে বক্তৃতা ও মতামত প্রকাশ করার দরকার নেই। আত্মবিশ্বাসী মানুষরা সবসময় অন্য মানুষের সঙ্গে থাকতে চায়। মানুষের সঙ্গে মিশে কাজ করতে চায় তারা। আত্মবিশ্বাসী মানুষ মানেই সামাজিক মানুষ।

৭. কাঙ্খিত লক্ষ্য থেকে দূরে সরে যায়

কম আত্মবিশ্বাসী মানুষ সবসময় নিজেদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য থেকে দূরে সরে যায়। বাধা আসলে ও অসম্ভব মনে করলে তারা সরে দাঁড়ায়। আত্মবিশ্বাসী মানুষ- যত বাধাই আসুক, যত অসম্ভবই মনে হোক তারা সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে সামনে এগিয়ে যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, উপরোক্ত দোষগুলো তিনটির বেশি থাকলে আপনি যথাযথ আত্মবিশ্বাসী নন বলে প্রমাণিত হবে। নিজেকে আত্মবিশ্বাসী হিসাবে গড়ে তুলতে চান কি না, তা নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন। যদি চান, তাহলে আর দেরি না করে বদলে ফেলুন নিজেকে। জেনে নিন এবং অনুসরণ করুন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শগুলো।

১. সর্বপ্রথমে নিজের নেতিবাচক ও ইতিবাচক দিকগুলো জেনে নিন। নিজেকে প্রশ্ন করুন, আপনি কতটুকু আত্মবিশ্বাসী। এই আত্মবিশ্বাসের কারণ কি? খারাপ দিকটি কি ও কেন? সততার সাথে নিজের এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিন। তাহলে আপনি খুঁজে পাবেন আপনার আত্মবিশ্বাসী হওয়ার পথে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলো। এবার নেতিবাচক দিকগুলো সংশোধনের চেষ্টা করুন। আর ইতিবাচক দিকগুলো আরো শক্তিশালী করার চেষ্টা করুন।

২. আত্মবিশ্বাসী হয়ে গড়ে ওঠার প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করুন। নিজেকে মন থেকে আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তোলার গুরুত্বটা বোঝানোর চেষ্টা করুন। আত্মবিশ্বাসী হতেই হবে, এ প্রতিজ্ঞা করুন।

৩. অন্যকে লক্ষ্য করুন। আত্মকেন্দ্রিকতা ভুলে অন্যের কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করা আত্মবিশ্বাসী হয়ে গড়ে ওঠার অন্যতম উপায়।

৪. জীবনটাকে একটা পরিবর্তনের সুযোগ করে দিন। সুযোগটা কাজে লাগান। একটা নতুন কিছু করুন। হতে পারে, নতুন কোন একটা খেলা শিখতে পারেন, বা ভালো কোন একটা বই পড়তে পারেন…। যা কিছু ভালো একটা কিছু করুন। এতে আপনার মনের উপর চাপ কমবে। মনের উপর বাড়তি চাপ রেখে আত্মবিশ্বাসী হওয়া যায় না।

৫. অন্যকে উপহার দিন। মনে রাখবেন আপনি অন্যকে যতটুকু দিবেন ঠিক ততটুকুই ফেরত পাবেন। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। অন্যর প্রতি নিজের বিশ্বাস ও আস্থা রাখুন। বিনিময়ে আপনার প্রতি তার বিশ্বাসটুকু ঠিকই ফেরত পাবেন বলে আশা করা যায়।

৬. অন্যের ব্যক্তিত্বের ইতিবাচক দিকগুলো ভাবুন। হতে পারে সে আপনার আপনজন, বা অনেক দুরের কেউ। তার আত্মবিশ্বাসের ভিত্তি খুঁজে বের করুন। তারপর নিজের সঙ্গে তুলনা করুন। চেষ্টা করুন তার ইতিবাচক দিকগুলোকে গ্রহণ করার।

৭. নিজের ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে ভাবুন। হতে পারে আপনি ভালো ক্রিকেট খেলতে পারেন, হতে পারে আপনি ভালো গান গাইতে পারেন, হতে পারে আপনি ভালো অংক করতে পারেন, হতে পারে আপনি একজন ভালো বন্ধু, আরো অনেক কিছু হতে পারে। তার মানে আপনার মাঝে অনেক ভালো বিষয় আছে। সেগুলোর উপর জোর দিন। সেগুলোকে ভিত্তি করে হয়ে উঠুন আত্মবিশ্বাসী।

৮. নিজের লাইফ স্টাইল বদলে ফেলুন। হতে পারে এটা আপনার পোশাক-পরিচ্ছদের পরিবর্তন, হতে পারে পোশাকের রঙ পরিবর্তন, হতে পারে চুলের ষ্টাইল পরিবর্তন। অর্থাত্ নিজেকে বদলানোর ইচ্ছাটা যেমন ভিতরে ভিতরে প্রয়োজন, তেমনি তার বহিঃপ্রকাশও প্রয়োজন।

৯. কখনোই বিষণ্ণতায় ভুগবেন না। বিষণ্ণতা আপনার নিজেরই সৃষ্ট একটি মানসিক রোগ। যার প্রতিকার একমাত্র আপনার হাতেই। তাই বিষণ্ণতা এড়িয়ে এগিয়ে চলুন সামনের দিকে।

১০. ইতিবাচক মনোভাবাপন্ন মানুষের সাথে মিশুন। তাতে করে আপনার মনেও তার ছোঁয়া পরবে। আর যদি নেতিবাচক মনোভাবাপন্ন মানুষের সাথে মিশেন তাহলে তার প্রভাবও আপনার ওপর পড়বে। তাই বেছে নিন আপনার ইতিবাচক বন্ধুটিকে।

১১. অতীতকে ভুলে যান। অতীতটা শুদ্ধ হোক বা ভুল, তাকে কিছু আসে যায় না। কারণ অতীতকে আপনি বদলাতে পারবেন না। বরং অতীতের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে আজ থেকেই নতুন করে শুরু করুন, নতুন এক ভবিষ্যতের জন্যে।(ওয়াং তান হোং/তৌহিদ)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040