Web bengali.cri.cn   
আর্থিক খাতে চীন-ব্রিটেনসহযোগিতা জোরদার হচ্ছে
  2015-10-26 19:56:43  cri

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন ও ব্রিটেনের মধ্যে পারস্পরিক বিনিয়োগ বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে আর্থিক খাতে দু'দেশের সহযোগিতাও। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সাম্প্রতিক ব্রিটেন সফর আর্থিক খাতে দু'দেশের পারস্পরিক সহযোগিতাকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাদের বিশ্বাস, প্রেসিডেন্ট সি'র সফর চীনা মুদ্রা রেনমিনপি'র আন্তর্জাতিকীকরণ প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং চীন-ব্রিটেন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি স্বর্ণযুগের সূচনা করবে।

লন্ডন শহরের আয়তন প্রায় ৫ বর্গকিলোমিটার। এ এলাকাকে ব্রিটেনের 'আর্থিক হৃত্পিণ্ড' গণ্য করা হয়। এখানে ৫০০টিরও বেশি ব্যাংক এবং ১৮০'র মতো শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় কেন্দ্র আছে। গত ১৯ অক্টোবর এ শহরের আর্থনীতিক কর্মকাণ্ডে যোগ হয় অতিরিক্ত চীনা উপাদান। এ দিন চায়না কনস্ট্রাকশান ব্যাংকের লন্ডন শাখা এখানে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সফরসঙ্গী হিসেবে লন্ডনে গিয়েছিলেন কনস্ট্রাকশান ব্যাংকের বোর্ড চেয়ারম্যান ওয়াং হোং চাং। তিনি তথ্যমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেন, "এ শাখার মাধ্যমে কনস্ট্রাকশেন ব্যাংক লন্ডনে তার ব্যবসা আরও সম্প্রসারিত করতে সক্ষম হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকটি তার আর্থিক শক্তি ও ব্যবস্থাপনা ক্ষমতা ব্যবহার করবে।"

২০০৯ সালে কনস্ট্রাকশন ব্যাংক লন্ডনে প্রতিষ্ঠা করে 'লন্ডন কনস্ট্রাকশান ব্যাংক'। ২০১২ সালে কনস্ট্রাকশান ব্যাংক লন্ডনে রেনমিনপি'তে ঋণপত্র প্রকাশের মাধ্যমে প্রথম চীনা পুঁজি ব্যাংকে পরিণত হয়। ২০১৪ সালে কনস্ট্রাকশান ব্যাংক ব্রিটেনে প্রথম রেনমিনপি'তে লেনদেন শুরু করে। এ পর্যন্ত লন্ডনে কনস্ট্রাকশান ব্যাংকের রেনমিনপি লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪.৫ ট্রিলিয়ন ইউয়ান। এ থেকে ব্রিটেনে কনস্ট্রাকশান ব্যাংকের ব্যবসা সম্প্রসারণের গতি বোঝা যায়।

আর্থিক খাতে চীন-ব্রিটেন সহযোগিতার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ওয়াং হোং চাং বলেন, "আর্থিক খাতে চীন ও ব্রিটেনের সহযোগিতা দিন দিন বাড়ছে। কারণ, দু'দেশের সরকার, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, অর্থ ও তত্ত্বাবধান বিভাগগুলো এ সহযোগিতাকে যথাযথভাবে সমর্থন করে যাচ্ছে।"

আসলে লন্ডন কনস্ট্রাকশান ব্যাংক আর্থিক খাতে দু'দেশের সহযোগিতার একটি ছোট্ট উদাহরণ মাত্র। ২০১১ সালে লন্ডন সিএনএইচ মার্কেট প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হওয়ার পর ব্রিটেন দ্বিপক্ষীয় মুদ্রা বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষর করে। এরপর একে একে রেনমিনপির মাধ্যমে লেনদেন, রেনমিনপির ঋণপত্র প্রকাশ, চীনা পুঁজি ব্যাংকের শাখা প্রতিষ্ঠার মতো বেশকিছু উদ্যোগ নেওয়া এবং তা বাস্তবায়ন করা হয়।

প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ব্রিটেন সফরের আগে রয়টারস্‌কে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন, লন্ডনের সাথে আর্থিক সহযোগিতা জোরদার হ'লে দু'পক্ষই লাভবান হবে।আর বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আর্থিক খাতে দু'দেশের সহযোগিতা চীনের আর্থিক সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ প্রক্রিয়াকে আরও স্থিতিশীল ও সুষ্ঠ পথে পরিচালিত হতে সাহায্য করবে। চীনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক গবেষণালয়ের গবেষক থাং চিয়ান ছুন মনে করেন, আর্থিক খাতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাড়ানোর ব্যাপারে ঐকমত্য হচ্ছে প্রেসিডেন্ট সি'র ব্রিটেন সফরের অন্যতম সালফ্য।

তিনি বলেন, "আমাদের আর্থিক সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ব্রিটেনের আর্থনীতিক উন্নয়নের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষাগ্রহণ করলে আমাদের সংস্কার ও উন্নয়ন দ্রুততর হবে। আর্থিক ক্ষেত্রে দু'দেশেরসহযোগিতা হবে লক্ষণীয় দিক। আমরা দেখেছি, চীনের আর্থিক খাতের অনেক বড় বড় কর্মকর্তা প্রেসিডেন্ট সি'র সঙ্গে ব্রিটেন সফর করেছেন।"

চীনের আধুনিক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক একাডেমির গবেষক চেন ফাং ইং মনে করেন, চীন ও ব্রিটেনের সহযোগিতা হচ্ছে চীন ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতার একটি শ্রেষ্ঠ দৃষ্টান্ত। তিনি বলেন, "পশ্চিমা শিল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে ব্রিটেনই সর্বপ্রথম এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকে যোগ দেওয়ার আবেদন করে। এর পর জার্মানি, ফ্রান্সও যোগ দেয়। পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যেলন্ডনই সবচে' দ্রুত গতিতে রেনমিনপি'র সিএনএইচ মার্কেট প্রতিষ্ঠা করেছে। আমরা দেখি, অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে সহযোগিতার বেলায়ও ব্রিটেন অগ্রগামী ছিল। ব্রিটেন ও চীনের সহযোগিতা হচ্ছে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সহযোগিতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।" (ইয়ু/আলিম)

মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040