Web bengali.cri.cn   
সঠিকভাবে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের কিছু পরামর্শ!
  2015-10-15 15:47:31  cri


ওজন কমাতে অনেকেই অনেক ভাবে চেষ্টা করে থাকেন। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই তা কাজে আসে না। অনেকেই হয়তো শারীরিক ব্যায়াম করছেন, ক্যালরি কমানোর চেষ্টা করছেন এবং কি কি খাবার খাচ্ছেন সেদিকেও খেয়াল রাখছেন। ওজন কমানোর জন্য অনেকে অনেক ধরণের নিয়মও মেনে চলছেন, কিন্তু তাতে কাজ হচ্ছে না। ওজন কিছুতেই কমছে না। তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে কোথাও কোনো সমস্যা আছে। যেমন অনেকে ওজন দ্রুত কমাতে গিয়ে এমন সব উপায়ে ডায়েট করেন যা একদম স্বাস্থ্যকর নয়। এই যেমন, দিন –রাতে শুধুমাত্র দই বা আপেল খেয়ে ওজন কমানো। সুপ্রিয় শ্রোতা, আজকের এ অনুষ্ঠানে আমরা বিজ্ঞানীদের সঠিকভাবে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের কিছু পরামর্শ জানিয়ে দেবো।

চলুন শোনা যাক আজকের অনুষ্ঠান।

১. প্রথমে ওজন কমাতে মনকে শক্ত করুন

আপনি যদি মন শক্ত করতে না পারেন তাহলে কিছুই কাজ করবে না। আপনি মন শক্ত রেখে ডায়েট এবং ব্যায়াম করতে পারলেই আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রেখে চিরকাল স্লিম থাকতে পারবেন। কিন্তু যদি আপনি মাঝ পথে মানসিক শক্তি হারিয়ে ফেলেন তাহলে ওজন কমানো কঠিন হবে।

২. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন

ওজন কমাতে গেলে একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা খুব গুরুত্বপূর্ণ। অস্বাস্থ্যকর সব খাবারকে না বলুন। স্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে নজর দিন। আপনার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় বেশি বেশি শাক-সবজি, ফলমূল, অলিভ অয়েল এবং বেশি করে প্রোটিন ও ফাইবার রাখুন। এগুলো ক্ষুধা কম রাখে ফলে ওজন কমাতে সহায়ক। প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার অভ্যাস না করাই ভালো। তবে এর মানে আপনি একেবারেই কেক, আইসক্রিম বা ফাস্ট ফুড খেতে পারবেন না, এই নয়। এ দিকে শুধু পরিমাণ কমিয়ে আনতে হয়।

৩. তিন বেলার পরিবর্তে ৫/৬ বেলা খাবেন

৩ বেলার পরিবর্তে ৫-৬ বেলা অল্প করে খাবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন। তবে ৩ বেলায় যা খেতেন সেটাই ভাগ করে ৫-৬ বেলায় নিয়ে আসুন। একবারে বেশি খেলে খাবার হজম হতে দেরি হবে, যার কারণে দেহে মেদ জমে যায়। ৫-৬ বার খাবার খেলে একবারে কম খাওয়া হবে, মেদও জমবে না।

৪. কম ক্যালরি গ্রহণ করুন

ক্যালরি যতো গ্রহণ করবেন ততোই আপনার ওজন বাড়বে। নিজের ওজন অনুযায়ী দৈনন্দিন কত ক্যালরি গ্রহণ করা উচিত, এ পরিমাণ ঠিক করুন। এরপর শরীরের চাহিদা নির্ধারণ করে যে পরিমাণ ক্যালরি প্রয়োজন, তার চেয়ে কম ক্যালরি গ্রহণ করুন। ওজন বাড়ার পেছনে অনিয়ন্ত্রিত খাওয়া অনেক বড় ভূমিকা পালন করে সেজন্য খাবারের পরিমাণের দিকে কঠোর নিয়ন্ত্রণ করুন। একদম মেপে মেপে খাবার খান।

৫. ড্রিংক্স পান করবেন না

আপনি মনে করতে পারেন ড্রিংক্স বা বিভিন্ন ধরনের কোমল পানীয়তে কম ক্যালোরি রয়েছে। আসলে তা ঠিক না। এ ধরনের কোমল পানীয় বা সফ্‌ট ড্রিংক্সে থাকে সমৃদ্ধ চিনি। চিনি সমৃদ্ধ পানীয় পান করলে ওজনের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাবে। পানি ছাড়া অন্যান্য যে কোনো ড্রিংক্স সম্পর্কে সর্তক থাকুন। সফট ড্রিংক্স বা জুস যা-ই হোক না কেন পানীয়ের বাড়তি চিনি আপনার ওজন বাড়াবে।

৬. খাবারে বৈচিত্র্য রাখুন

একই খাবার প্রতি সপ্তাহে খেলে বিরক্ত লাগবেই। যারা ডায়েট করছেন তাদের জন্য এটা বেশি প্রয়োজন। দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় নতুন নতুন শাক-সবজি ও ফলমূল যোগ করুন। কিন্তু অস্বাস্থ্যকর খাবার যোগ করবেন না।

৬. ব্যায়াম করুন

ব্যায়াম করার জন্য আলাদা সময় বের না করতে পারলেও শারীরিক পরিশ্রমকে না বলবেন না কখনোই। স্লিম হওয়ার ব্যাপারটা ধরে রাখতে চাইলে পরিশ্রম করার অভ্যাস তৈরি করে ফেলুন। সেটা বাইরের কাজও হতে পারে বা ঘরের কাজ হতে পারে।

৭. রাতে ভালো করে ঘুমান

ঘুমও ওজন কমানোর ক্ষেত্রে খুবই প্রয়োজনীয়। কারণ আমরা যখন বেশি ক্লান্ত ও ঘুম-ঘুম অবস্থায় থাকি তখন শরীর বেশি ক্যালোরির খাবার চায়। যার কারণে যারা সারা রাতে জেগে থাকেন, তাদের অনেকেই আবার ব্রেকআউট হিসেবে উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার খান। এ ছাড়া ভালো করে ঘুমালে তা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। যা ডায়েট করতে সহায়ক হবে।

বন্ধুরা, ওজন কমানো একদম সহজ কাজ নয়। প্রতিদিন কি খাবেন না খাবেন, এ বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। ডায়েটের খাদ্য তালিকায় আপনি রাখতে পারে যে খাবারগুলো, সেগুলো হলো:

গ্রিন টি

গ্রিন টি ওজন কমাতে খুবই সহায়ক একটি পানীয়। গ্রিন টিতে থাকা কাটেচিন নামক এক ধরনের এন্টিঅক্সিডেন্ট যা ফ্যাট বার্ণ করে। এটি অতিরিক্ত চর্বি কমিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, গ্রিন টি এক দিনে ৭০ ক্যালরি পর্যন্ত ফ্যাট বার্ন করে। তার মানে নিয়মিত গ্রিন টি পানের মাধ্যমে বছরে ৩ কেজি পর্যন্ত ওজন কমানো সম্ভব।

পানি

দেহের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে পানি আপনাকে খুব সহায়তা করে। একটি গবেষণায় দেখা যায় যে, প্রতিদিন সকাল, দুপুর এবং রাতের খাবারের পূর্বে ২ গ্লাস অল্প গরম পানি পান করলে বছরে ১৭ হাজার ৪'শ এক্সট্রা ক্যালরি কমানো সম্ভব। তার মানে বছরে ৪ কেজি পর্যন্ত ওজন কমাতে পারেন উষ্ণ পানি পানের মাধ্যমে।

ডিম

অনেকেই হয়তো অবাক হয়েছে যে, ডিম কিভাবে ওজন কমাতে সহায়ক হয় ! অবাক হবার কিছু নেই। ডিম হচ্ছে প্রোটিনে সমৃদ্ধ এমন একটি খাবার যা অনেক সময় পর্যন্ত পেট ভরা থাকতে সাহায্য করে, যার কারণে ক্ষুধা ভাব কম হয়। প্রতিদিন সকালে যদি ডিম ডায়েটে যোগ করা যায়, তাহলে আপনি সারাদিনে তুলনামূলক কম ক্যালরি গ্রহণ করবেন,যা ওজন কমাতে সহায়ক।

বাদাম

ডায়েট করা সহজ একটি কাজ নয়। এর মধ্যে কোনো স্ন্যাকস না খাওয়া সম্ভব নয়। বাদাম হচ্ছে একটি ভালো স্ন্যাকস। কারণ এতে রয়েছে হেলদি ফ্যাট, প্রোটিন এবং ফাইবার। যা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। অনেকে ফ্যাটের কথা শুনে ভয় পান। এখানে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এই ফ্যাট হচ্ছে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট যা মস্তিষ্ক এবং হৃদয়কে সুস্থ রাখে।

মাশরুম

নিয়মিত মাশরুম খাবার খেলে আপনি আপনার অতিরিক্ত চর্বি কমিয়ে নিতে পারেন। এটি যেমন স্বাস্থ্যকর তেমনি এতে খুব কম ক্যালরি রয়েছে। এক কাপ মাশরুমে মাত্র ৪৪ ক্যালরি থাকে।

অলিভ অয়েল

অতিরিক্ত ওজন কামাতে অলিভ অয়েল খুব কার্যকর একটি উপাদান। এতে আছে মনো-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট যা ক্যালরি বার্ন করতে সাহায্য করে। আপনি মাঝেমধ্যেই সালাদের সাথে অলিভ অয়েল মিশিয়ে খেতে পারেন, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040