1014music
|
আজকের অনুষ্ঠানে আপনাদের চীনের তাইওয়ান প্রদেশের তরুণ গায়িকা সু জিয়া ইংয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো। আর তার সুললিত কণ্ঠে গাওয়া বেশ কয়েকটি গান শুনাবো।
সু জিয়া ইং ১৯৮৪ সালের ২০ সেপ্টেন্বর তাইওয়ান প্রদেশের তাইচুং শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি সঙ্গীত খুব পছন্দ করেন। ৮ বয়সে তিনি পিয়ানো শিখতে শুরু করেন। উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার সময় ইং গিটার ও ড্রাম বাজাতে শেখেন।
সে সময় থেকেই সু জিয়া ইং নানা ধরনের গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে শুরু করেন। সঙ্গীতের প্রতি তার আগ্রহ আরো বেড়ে যায়। গান গাওয়া ছাড়া তিনি নিজে সুর সৃষ্টি করতে শুরু করেন। তার সঙ্গীত প্রতিভা ক্রমশ সকলের সামনে প্রকাশিত হতে শুরু করে।
২০০৮ সালে সু জিয়া ইং তাইওয়ানে 'সুপার স্টার এভিনিউ' নামে গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর সু জিয়া ইং নিজের পেশা নার্সের কাজ ছেড়ে দেন। একজন পেশাদর গায়িকা হিসেবে সঙ্গীত জীবন শুরু করেন।
২০০৯ সালের মে মাসে তিনি তার প্রথম অ্যালবাম—'সু জিয়া ইং' প্রকাশ করেন। এই অ্যালবামের জন্য তিনি দশম চীনা সঙ্গীত মিডায়া পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ ম্যান্ডারিন গায়িকা এবং শ্রেষ্ঠ সুরকারের পুরস্কার পান। ২০১০ সালের জুলাই মাসে সু জিয়া ইং দ্বিতীয় অ্যালবাম 'সীমা' প্রকাশ করেন। একই সালে তিনি তার প্রথম কনসার্টেরও আয়োজন করেন।
২০১২ ও ২০১৪ সালে সু জিয়া ইং যথাক্রমে তার তৃতীয় অ্যালবাম 'আদর্শ জীবন' এবং চতুর্থ অ্যালবাম 'অনুসন্ধান নোর্টিশ' প্রকাশ করেন। ২০১৫ সালে তিনি চতুর্থ অ্যালবাম 'অনুসন্ধান নোর্টিশ'–এর মাধ্যমে তাইওয়ানের 'গোল্ডেন সুর' পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পান।
সু জিয়া ইংয়ের কণ্ঠস্বর খুবই মিষ্টি ও স্পষ্ট। বয়সে তরুণ হলেও তার গাওয়া গানে প্রবল আবেগ অনুভব করা যায়। এছাড়াও তার নিজের রচিত গানগুলো খুবই বৈশিষ্টমন্ডিত ও নান্দনিক।
প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে আপনাদের প্রথম যে গানটি শোনাবো তার শিরোনাম 'সাদা ঘোড়ায় চড়া'। এই গানটি তাইওয়ান প্রদেশের লোকযাত্রা কো জেয়াই সি থেকে নিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই কো জেয়াই সিতে দু'জনের মর্মস্পর্শী প্রেম ও ভালোবাসা বর্ণনা করা হয়েছে। গানটিতে বর্ণনা করা প্রধান চরিত্র ১৮ বছর ধরে সীমান্তে যুদ্ধ করে পরে বিজয়ী হয়। পরে সে সাদা ঘোড়ায় চড়ে তার প্রমিকার কাছে ফিরে আসে। সেই পুনর্মিলনের দৃশ্যই মূলত এ গানে তুলে ধরা হয়েছে। সু জিয়া ইং এই গানের জন্য গানের প্রতিযোগিতা 'সুপার স্টার এভিনিউ' জয় করেন। তিনি পূর্ন নম্বর পেয়ে এই প্রতিযোগীতায় বিজয়ী হন। এখন আমরা এক সাথে গানটি শুনবো।
প্রিয় বন্ধুরা, এই সুন্দর গানটি শুনে আপনারা কি মুগ্ধ? আশা করছি গানটি শুনে আপনাদের ভালো লেগেছে। এখন শুনি সু জিয়া ইং-এর অন্য একটি গান। নাম 'দুঃখের বালিয়াড়ি'। এই গান একটি হারানো সম্পর্ককে নিয়ে। এ গানে এক প্রেমিকার তার প্রেমিককে হারানোর দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। প্রেম থেকে বিচ্যুত হওয়ার পর মেয়েটি খুব ভেঙ্গে পরে। সে একা নদীর বালু চড়ে ঘুরে বেড়ায়। প্রবাহিত নদীর দিকে তাকিয়ে ভাবে অতীতের আনন্দদায়ক দিনগুলোর কথা। সে ভাবে এই নদীর জলের মত আর ফিরে আসবে না সেই সোনালি দিনগুলো। এমন দুঃখকে সে বিদায় করে বাস্তবতা গ্রহণ করতে শিখতে চায়। সবারই হয়তো প্রেম থেকে বিচ্যুত হওয়ার অভিজ্ঞতা আছে। সু জিয়া ইংয়ের গাওয়া এই 'দুঃখের বালিয়াড়ি' গানটি শুনলে সেসব স্মৃতি ও অভিজ্ঞতা কি আপনার মনের কোণে ভেসে ওঠে? চলুন এই গানটি এখন আমরা শুনবো।
বন্ধুরা, আমাদের এবারের গানের নাম 'বৃষ্টি হবে'। এই গানটি চীনা একটি টিভি নাটকের থিম সঙ্গীত। এই টিভি নাটকে মিং রাজবংশের একজন নারী ডাক্তারের জীবনকাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। এই গানে ওই নারীর ডাক্তার হিসেবে বিখ্যাত হওয়ার প্রক্রিয়ায় নানা রকম কষ্ট ও প্রচেষ্টার কথা বলা হয়েছে। টিভি নাটকটি এখন সম্প্রচার করা হচ্ছে না। কিন্তু অনেকেই খুব প্রত্যাশা করছে নাটকটি সম্প্রচার করা হবে। চলুন, এখন একসাথে আমরা গানটি শুনি।
প্রিয় শ্রোতা, আমাদের পরের গানের নাম 'সীমা'। এই গানে নিজের সীমা অতিক্রম করার আশা প্রকাশ করা হয়েছে। গানে বলা হয়েছে, এখানেই আমার সীমা/অধঃপতিত হলে আর চলে না/আগে আমাকে হারানোর ব্যথা স্বীকার করতে হবে/তোমার সীমাও এখানেই রয়েছে/খুব আবেগময় হলে চলে না/যদি আমি তুমি হতাম/আমি সেটা করতাম না।
শ্রোতাবন্ধুরা, আপনারা কি চাঁদ পছন্দ করেন? নিশ্চয়। চাঁদ বা চাঁদের আলো পছন্দ করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। পরের গান চাঁদকে নিয়ে। গানের নাম 'একই চাঁদের আলো'। এ গানে বলা হয়েছে, আর একসঙ্গে না থাকলে এই সুন্দর চাঁদের আলো দেখে সবসময় সেই বিশেষ মানুষের কথা কথা মনে পড়বে। বন্ধু, এই গানটি শুনে আপনার কি বিশেষ কাউকে মনে পড়বে? চলুন এখন একসাথে গানটি শুনি।
বন্ধুরা, পরের গানের নাম 'অনুসন্ধান নোর্টিশ'। এ গানে কোনো মানুষকে অনুসন্ধান করা হয়েছে, এমন নয়। যা অনুসন্ধান করা হয়েছে তা হয়তো একজন মানুষ; হয়তো একটি ভুলে যাওয়া স্মৃতি; হয়তো জীবনের কোনো একটি দিক; হয়তো বা ভবিষ্যতের জন্য আরো ভালো কিছু।
প্রিয় বন্ধুরা, গান শুনতে শুনতে অনুষ্ঠানের শেষ দিকে চলে এলাম আমরা। আর একটি গান শোনাবো আপনাদের। এ গানের নাম 'আদর্শ জীবন'। আমরা সবাই আদর্শ ও নিখুঁত জীবন কাটানোর জন্য নানা চেষ্টা করি। কিন্তু অবশেষে বুঝতে পারি নিখুঁত জীবন পৃথিবীতে নেই। তাই আমরা শুধু আশা করি ভবিষ্যতের জীবন নিশ্চয় গতকালের চেয়ে ভালো হবে। আর সুখের জীবনের জন্য প্রচেষ্টা করার ইচ্ছেও থাকে। চলুন, এখন একসাথে গানটি শুনি।
প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, এসব গান শুনে আজকের অনুষ্ঠানও শেষ করছি। আশা করি আপনারা এসব গান পছন্দ করেন, শুনে ভালো লাগে। সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন ও সুস্থ্য থাকুন। আবার কথা হবে। যাই চিয়ান। (তুহিনা/মান্না)