

0822muktarkotha
|
প্রিয় বন্ধুরা, কেসু গ্রাম চীনের তিব্বতের শাননান অঞ্চলের নাইদং জেলার ছাংচু থানায় অবস্থিত। কেসু গ্রাম তিব্বতের প্রথম গণতান্ত্রিক গ্রাম। আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদেরকে এ গ্রামের মানুষের জীবন সম্পর্কে কিছু কথা বলবো।
গ্রামে প্রবেশ করলেই চোখো পড়বে সুন্দর সড়ক, তিব্বতের বৈশিষ্ট্যময় বাড়িঘর। এখানকার মানুষ আবেগপ্রবণ, অতিথিপরায়ণ।
৫৪ বছর বয়সী দাওয়ার পরিবারে মোট ৭ জন সদস্য। তাঁর বড় ছেলে শিগাতসেতে কাজ করেন। ছোট ছেলে ছাংচু থানায় ট্যাক্সি চালান। ছোট মেয়ে এ বছরই শাংহাই পরিবহন বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিত্সা একাডেমি থেকে স্নাতক হয়েছেন। দাওয়া ১৯৮৯ সাল থেকে কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার হিসেবে কাজ করেছেন। তারপর তিনি টি-হাউসের ব্যবসা করেছেন, পর্যটন বাস ও ট্রাক চালিয়েছেন। ২০১০ সাল থেকে তিনি চালাচ্ছেন ট্যাক্সি। পরিবহন ব্যবসা খাতে তিনি বিনিয়োগ করেছেন ৯ লাখ ৩০ হাজার ইউয়ান। ২০১৪ সালে তাঁর পরিবারের সদস্যদের মাথাপিছু গড় আয় ছিল ৩০ হাজার ইউয়ান রেনমিনপি। তিনি বলেন,
(রে ১)
'আমি প্রথমে দু'টি ট্রাক দিনে পণ্য পরিবহনের ব্যবসা শুরু করি। এখন আমি ট্যাক্সি চালাই। আমাদের ব্যবসা ভালো যাচ্ছে।'
কেসু গ্রাসে ২৪০টি পরিবারে মোট সদস্যসংখ্যা ৮৮০ জন। এর মধ্যে ৪৩টি পরিবার পরিবহন ব্যবসার সাথে জড়িত। এসব পরিবারের মোট ৩৮টি বিভিন্ন ধরণের গাড়ি আছে এবং প্রতি বছর তাদের মোট আয় হয় ৬০ লাখ ৮০ হাজার ইউয়ান রেনমিনপি। এখন কেসু গ্রামের মানুষের পেশা মূলত তিনটি: কৃষিকাজ, পরিবহন ব্যবসা, ও বাইরে চাকরি। এ ছাড়া, এখানে সেবা ও প্রক্রিয়াকরণ শিল্পও দিন দিন উন্নত হচ্ছে। ২০১৪ সালে এ গ্রামের মানুষের মাথাপিছু গড় আয় ছিল ১২ হাজার ইউয়ান রেনমিনপি। এর মধ্যে কৃষিখাত থেকে মোট আয়ের ১৫.৮ শতাংশ, পরিবহন খাত থেকে ২২.২ শতাংশ এবং বাইরের কাজ থেকে ৬২ শতাংশ এসেছে।
কেসু গ্রামের কমিউনিস্ট পার্টির কমিশনের সম্পাদক পেনপা সেরিং বললেন, এখন গ্রামের মানুষের জীবনমান অনেক উন্নত হয়েছে। প্রতিটি পরিবার এলপি গ্যাস ব্যবহার করছে, বিনা খরচে টেপের পানি পাচ্ছে, কম খরচে বিদ্যুত সুবিধাও ভোগ করছে। ২০১৩ সাল থেকে গ্রামে ভুট্টার চাষও হচ্ছে। তিনি বলেন,
(রে ২)
'বিগত কয়েক বছরে কেসু গ্রামের লক্ষণীয় পরিবর্তন ঘটেছে। আগেম আমরা ঘোড়া ও গরু দিয়ে জমি চাষ করতাম। এখন আমারা জমিচাষে যন্ত্র ব্যবহার করছি। আগে আমাদের ছিল মাটি ও কাঠ দিয়ে তৈরি ঘরবাড়ি। আর এখন আমাদের প্রায় সবারই পাকা দালান আছে। এ ছাড়া পানি, বিদ্যুত্ ও সড়ক সুবিধাও আগের চেয়ে বেড়েছে।"
কেসু গ্রামের বাসিন্দা ৬৬ বছর বয়সী সোনাম দুন্দ্রুপের পরিবারে মোট ৫ জন সদস্য রয়েছে। বড় ছেলে শহরে ব্যবসা করেন। ছোট ছেলেও ব্যবসায়ী, করেন ডেকোরেশানের কাজ। আগে তাঁদের আয় কম ছিল। ২০০০ সালে স্থানীয় সরকার তাঁদের নতুন বাড়িঘর নির্মাণ করে দেয়। এখন তাঁদের জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত হয়েছে। গ্রামের চেহারাও পরিবর্তিত হয়েছে। গ্রামে এখন ক্লিনিক আছে। অসুস্থ হলে গ্রামের মানুষকে আর থানার হাসপাতালে যেতে হয় না। এ সম্পর্কে পেনপা সেরিং বলেন,
(রে ৩)
'আমরা গ্রামে যৌথ চিকিত্সাব্যবস্থায় অংশ নেই। এখন আমাদের অনেক সুবিধা। বাইরে হাসপাতালে যেতে হয় না।'
বিগত কয়েক বছরে কেসু গ্রামের মানুষের আয় বেড়েছে; শিক্ষা ও চিকিত্সাক্ষেত্রে তারা উন্নত সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। আগে গ্রামে পরিবেশ সুরক্ষার চেতনা ছিল না। এখন গ্রামে প্রতি শনিবার ও শুক্রবার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা দিবস পালন করা হয়। এখন কেসু গ্রাম অনেক পরিচ্ছন্ন।
গ্রামের ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা সম্পর্কে পেনপা সেরিং বলেন,
(রে ৪)
'ভবিষ্যতে আমরা পর্যটনশিল্প উন্নত করবো। এ জন্য আমরা আমাদের ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প এবং তিব্বতী জাতির বৈশিষ্ট্যময় খাবার পর্যটকদের সামনে আকর্ষণীয়ভাবে তুলে ধরার পরিকল্পনা করছি। আমরা বিশ্বাস করি, কেসু গ্রামের ভবিষ্যত উজ্জ্বল।'
প্রিয় শ্রোতা, আপনারা শুনছিলেন চীনের তিব্বতের কেসু গ্রামের ওপর একটি প্রতিবেদন। এখন আপনাদের চিঠিপত্রের উত্তর দেওয়ার পালা।
বাংলাদেশের চুয়াডাংগা জেলার গ্লোবাল সিআরআই রেডিও লিসনার্স ক্লাবের সভাপতি প্রফেসর আশরাফুল ইসলাম তার ই-মেইলে লিখেছেন, সুপ্রিয় মুক্তা আপু ও আলিম ভাই আপনারা কেমন আছেন? আপনাদের এক রাশ প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। 'মুক্তার কথা' আমাদের প্রাণের অনুষ্ঠান। তাই এই অনুষ্ঠান নিয়ে আমাদের ভাবনাও অনেক। অনুষ্ঠানটিকে মানসম্মত ও যুগোপযোগী করতে আমার কিছু পরামর্শ নিম্নে উপস্হাপিত হলোঃ ১। প্রতিটি 'মুক্তার কথা' অনুষ্ঠানে চীনসম্পর্কিত শ্রোতাদের কিছু ছোট প্রশ্নের উত্তর দিলে ভাল হয়। ২। শুধুমাত্র শ্রোতাদের অনুরোধকৃত গানই অনুষ্ঠানে বাজানোর চেষ্টা করবেন। ৩। আগামী সপ্তাহের উল্লেখযোগ্য কিছু অনুষ্ঠানের অগ্রিম ঘোষণা এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তুলে ধরবেন। এ ছাড়াও জরুরি যে-কোনো ঘোষণা এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শ্রোতাদেরকে অগ্রিম অবহিত করা যেতে পারে। ৪। সংক্ষিপ্তভাবে শ্রোতাদের একটি টেলিফোন সাক্ষাত্কার অনুষ্ঠানে নিয়মিত প্রচার করা যেতে পারে, যার সময় হবে সর্বোচ্চ ৫ মিনিট। ৫। সময় বাঁচানোর খাতিরে শ্রোতার লেখা চিঠি সম্পূর্ণ পাঠ না-করে শুধু চিঠির মুল বিষয় বা সারাংশ পাঠ করার অনুরোধ রইল। ৬। অনুষ্ঠানে অধিক শ্রোতাকে আকৃষ্ট করতে প্রতিটি পর্বে কিছু কিছু শ্রোতার চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করা যেতে পারে।
আমার প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করবেন আশা করি। আপনারা উভয়ে সুস্হ ও সুন্দর থাকুন।
বন্ধু আশরাফুল ইসলাম, আপনি অনেকগুলো সুন্দর প্রস্তাব দিয়েছেন। আমরা শ্রোতাদের প্রশ্ন পেলে সেগুলোর উত্তর দেওয়া চেষ্টা করি নিয়মিত। আপনাদের কাছ থেকে অনুরোধ এলে সে অনুসারে গান প্রচারের চেষ্টাও আমরা করি। আর চিঠি সংক্ষেপে পড়া অনেক সময়ই সম্ভব হয় না, কারণ আপনারা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা লিখে থাকেন। যেমন আপনার আজকের চিঠিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ ছিল। এখন বলুন, এ চিটি কাটছাট করে পড়া কি সম্ভব? আপনার বাকি পরামর্শগুলোও আমরা বিবেচনা করবো, কথা দিচ্ছি। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবা।
বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার সোর্স অফ নলেজ ক্লাবের সভাপতি খোন্দকার রফিকুল ইসলাম তার ই-মেইলে লিখেছেন, মুক্তা আপু, আমার সালাম নিবেন। আশা করি আপনিসহ বাংলা বিভাগের সবাই নিজ নিজ কর্মে অত্যন্ত ব্যস্ত আছেন। আমাদের ক্লাবের সকল সদস্য নিয়মিতভাবে আপনাদের অনুষ্ঠান বেতারে শুনছে এবং আপনাদের সুন্দর, ঝকঝকে ওয়েব পেইজ নিয়মিতভাবে দেখছে। সবাই সুস্থ ও ভাল থাকুন। সুন্দর থাকুন। আজ শেষ করি।
বন্ধু খোন্দকার রফিকুল ইসলাম, আপনাকে চিঠির জন্য ধন্যবাদ।
বাংলাদেশের চুয়াডাংগা জেলার গ্লোবাল সিআরআই রেডিও লিসনার্স ক্লাবের সভাপতি প্রফেসর আশরাফুল ইসলাম তার ই-মেইলে লিখেছেন, সুপ্রিয় মুক্তা আপু আপনার মুক্তার কথা অনুষ্ঠানে আমার একটি প্রশ্ন রয়েছে আশা করি উত্তর দিয়ে বাধিত করবেন। প্রশ্নটি হচ্ছে: আমরা জানি চীন হচ্ছে চা-এর দেশ। তাহলে চীনের মানুষ কি কফি পান করেন?
আচ্ছা, বন্ধু আশরাফুল ইসলাম, আপনি ঠিকই বলেছেন, চীন হল চা-এর দেশ। আসলে আগে চীনা মানুষ শুধু চা-ই পান করতো, কফি খাওয়ার অভ্যাস তাদের ছিল না। কিন্তু এখন অনেকেই নিয়মিত কফি পান করেন। আমিও প্রতিদিন কফি খাই। চীনের ইউননান প্রদেশে কফি চাষ হয়। প্রদেশটির কফি বিদেশেও সমাদৃত। আপনার প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ জানাই।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার ইন্টারন্যাশনাল মিতালি লিসনার্স ক্লাবের মহ: হাফিজুর রহমান তার ই-মেইলে লিখেছেন, আন্তরিক সালাম, শুভেচ্ছা ও ভালবাসা গ্রহণ করবেন, আশা করি ভালো আছেন। আপনাদের দোয়ায় আমরা সবাই ভালো আছি আর চীন আন্তর্জাতিক বেতারের অনুষ্ঠান শুনছি নিয়মিতভাবে। সেইসাথে নিয়মিত আপনাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করছি। প্রতিটি অনুষ্ঠান ভীষণ ভালো লাগছে। চীন আন্তর্জাতিক বেতার থেকে প্রচারিত চীনের সংবাদ ও প্রতিবেদন এবং বিশ্ব সংবাদ ও প্রতিবেদন অত্যন্ত বস্তুনিষ্ঠ ও তরতাজা। চীন আমার স্বপ্নের দেশ। এই দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি, সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি সম্পর্কে জানতে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের অনুষ্ঠান সাহায্য করছে। চীন বেতারের অনুষ্ঠান বর্তমানে নতুন আঙ্গিকে প্রচারিত হচ্ছে। বিষয়গুলি খুবই উপভোগ্য ও আকর্ষণীয়। বর্তমানে খুব বেশি গান প্রচারিত হচ্ছে। এত বেশি গান অনুষ্ঠানের সৌন্দর্য নষ্ট করছে বলে মনে করি। গান একটু কম প্রচার করে যদি তার পরিবর্তে চীনের জনজীবন নিয়ে ধারাবাহিক অনুষ্ঠান প্রচার করেন যাতে চীনের সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে আলোচনা থাকবে, তাহলে খুব ভালো হয়। এতে আমরা সাধারণ চীনা মানুষের কথা আরো জানতে পারব এবং আমার স্বপ্নের দেশ চীনের সঙ্গে আরো একাত্ম হতে পারব। আর ইন্টারনেটে তো অনুষ্ঠানের অর্ধেক অংশও শোনা যাচ্ছে না। ইন্টারনেটে মাত্র প্রথম অধিবেশনের ২০ মিনিটের অনুষ্ঠান দেওয়া হচ্ছে বাকিটা গান। সব পরিবেশনা যাতে ইন্টারনেটে পর পর দেওয়া হয় তার সুব্যবস্থা গ্রহণ করে উপকৃত করবেন। চীন আন্তর্জাতিক বেতারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই । ভালো থাকবেন।
বন্ধু হাফিজুর রহমান, আপনাকে নিয়মিত আমাদের মতামত দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাই। আপনার পরামর্শ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। আপনি ভালো থাকবেন।
প্রিয় শ্রোতা, এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাদের সবাইকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনারা আমাদের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কিছুটা হলেও আনন্দ পেয়ে থাকেন, তাহলে মনে করবো আমাদের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। আপনাদের জন্যই আমাদের সকল প্রচেষ্টা ও আয়োজন। আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং শুনতে থাকুন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান। আমাদের সঙ্গে থাকুন, আমাদের অনুষ্ঠান শুনুন আর আপনার যে-কোনো মতামত বা প্রশ্ন পাঠিয়ে দিন চিঠি বা ই-মেইলের মাধ্যমে।
আমাদের ই-মেইল ঠিকানা হচ্ছে ben@cri.com.cn এবং আমার নিজস্ব ইমেইল ঠিকানা হল caiyue@cri.com.cn। 'মুক্তার কথা' অনুষ্ঠান সম্পর্কিত ইমেইল আমার নিজস্ব ইমেইল ঠিকানায় পাঠালে ভালো হয়। আজ তাহলে এ পর্যন্তই। আশা করি, আগামী সপ্তাহের একই দিনে, একই সময়ে আবার আপনাদের সঙ্গে কথা হবে। ততোক্ষণ সবাই ভালো থাকুন, আনন্দে থাকুন। (ছাই/আলিম)




