0923
|
১৯৮৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার আগে মাত্র ১৮ বছর বয়সি সু ওয়ে একটি গিটার নিয়ে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যান। শুরু করেন তার ভবঘুরে জীবন। এ সময় তিনি চীনের নানা শহর ঘুরতে শুরু করেন। যেখানেই যান সেখানেই গিটার বাজিয়ে গান গাইতে শুরু করেন। ভবঘুরে অভিজ্ঞতা থেকে তিনি অনেক কিছু শিখেছেন। এ সময়ই তিনি প্রথমবারের মতো বুঝেছেন বাইরের বিশ্ব কত বড়! পরে সু ওয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তবে তিনি সৈনিক চিকিত্সক হওয়ার সুযোগ ছেড়ে দেন। কারণে তার মনে হয়েছে তার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সংগীত। তার স্ত্রীর সঙ্গে তার প্রথম পরিচিত হয় সেনাবাহিনীতে গিয়েই। পরে তারা বিয়ে করেন।
১৯৯৭ সালে সু ওয়ে রাজধানী পেইচিংয়ে এসে তার দ্বিতীয় ব্যক্তিগত অ্যালবাম 'ওই বছর' প্রকাশ করেন। এ অ্যালবামে দুটি গান তিনি তার স্ত্রীর জন্য রচনা করেন। এখন আমরা উপভোগ করবো এ দু গানটি। প্রথমে শুনুন 'জন্মস্থান' নামের গানটি।
দ্বিতীয় গান হিসেবে আমরা শুনবো 'উষ্ণতা' শিরোনামের গানটি।
সু ওয়ে যে শুধু একজন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী তা নন। তিনি একজন নিঃসঙ্গ শিল্পীও বটে। অনেক রক অনুরাগী তার গান পছন্দ করেন। তবে তার প্রথম দুইটি অ্যালবাম আসলে সাফল্য অর্জন করতে পারে নি। ওই সময় থেকে সু ওয়ে বিষন্নতা রোগে আক্রান্ত হন। তিনি সি আন শহরে ফিরে যান। বেশ কয়েক বছর আর কোনো অ্যালবাম প্রকাশ করেন নি।
২০০০ সালে এক বন্ধুর আমন্ত্রণে তিনি পেইচিংয়ে আবার আসেন। ২০০১ সালে নতুন একটি সংগীত কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এ বছর তার তৃতীয় অ্যালবাম 'Through The Time' বড় সাফল্য অর্জন করে। এখন আমরা শুনবো এ অ্যালবামের তিনটি গান। প্রথমে শুনুন সু ওয়ের সবচেয়ে বিখ্যাত গান 'নীল পদ্ম'।
এবার যে গানটি আমরা শুনবো তার নাম 'নিখুঁত জীবন'। এ গানে সু ওয়ে গেয়েছেন : 'রোমাঞ্চতা ও নিঃসঙ্গতা, আনন্দ ও ভালোবাসা, অনুভব করো। এটা আমার ও তোমার নিখুঁত জীবন'। শুনুন তাহলে গানটি।
তৃতীয় যে গানটি আমরা উপভোগ করবো তার নাম 'সময়'।
যখন রক সংগীতের কথা আসে তখন মনে পড়ে যে শব্দগুলো তা যেন 'উচ্চ কণ্ঠ, ক্রিটিক্যাল' ইত্যাদি। তবে সু ওয়ের গানে আমরা শুধু খুঁজে পাই উষ্ণতা ও মমতা। তিনি প্রাকৃতিক জীবনের জন্য গান গান। রোদ, বাতাস যে কোনো একটি জিনিস আমাদের মনে শান্তি এনে দেয়। তিনি গানে তা-ই গেয়েছেন। সু ওয়ে বলেছেন, আমাদের জীবন নিখুঁত নয়। তাই বলে আমাদের অভিযোগ করা উচিত নয়। কারণ অভিযোগের কোনো অর্থ নেই। জীবনের সুখ নিজেকেই আবিস্কার করতে হয়।
Through The Time' এ অ্যালবামের পর সু ওয়ে আবারও সবার দৃষ্টির আড়াল হয়ে যান। দীর্ঘ সময় পর্যন্তও তিনি কোনো পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে অংশ নেন নি এবং কোনো সাক্ষাত্কার দেন নি।
এরপর ২০০৪ ও ২০০৬ সালে তিনি যথাক্রমে উপহার দেন দুটি অ্যালবাম। এ দু অ্যালবামে রয়েছে আমার দুটি প্রিয় গান। একটা হলো 'যে মানুষ তুমি ছিলে' এবং অন্যটি 'বাতাসের মতো মুক্ত'।
'যে মানুষ তুমি ছিলে' গানে সু ওয়ে যৌবনের প্রতি তার শ্রোদ্ধা জানান। গানে তিনি গেয়েছেন, প্রতিবার দুঃখ লাগলে, একা একা সাগর দেখি। জীবনের সব কিছু ভুলে গেলেও ভুলে যাবো না আন্তরিক ও উষ্ণ এ মৃদুহাসি।
আজকের অনুষ্ঠানের শেষ গান হিসেবে আপনাদের শুনবো 'বাতাসের মতো মুক্ত' শিরোনামের শ্রুতিমধুর গানটি।