বন্ধুরা, এ অনুষ্ঠানে আপনাদের জন্য তুলে আনা হয়েছে পৃথিবীর নানা প্রান্তে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা। আর এ আয়োজনে আপনাদের সঙ্গে আছি আমি প্রকাশ এবং আমি আইরীন নিয়াজী মান্না।
প্রকাশ : তাহলে মান্না আপা আজ আমরা কি কি খবর নিয়ে আলোচনা করবো।
মান্না : ধন্যবাদ প্রকাশ। বাছাই করা একটি সংবাদ দিয়েই আজ আলোচনা শুরু করা যাক। আপনিই শুরু করুন।
প্রথম খবর : চীন-আসিয়ান তথ্যকেন্দ্র উদ্বোধন
সম্প্রতি চীনের কুয়াংসি চুয়াং জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানী নাননিংয়ে চীন-আসিয়ান তথ্যকেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়েছে। গেলো সপ্তাহের রোববার চীন-আসিয়ান তথ্যকেন্দ্র ফোরাম এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
চীনের জাতীয় ওয়েবসাইট কার্যালয়ের পরিচালক রেন লুওয়েই বলেন, আসিয়ানের সঙ্গে তথ্যকেন্দ্র নির্মাণ তহবিল প্রতিষ্ঠা ও তথ্যকেন্দ্রের ওয়েবসাইট তৈরি করবে চীন। আসিয়ানের সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে অর্থনীতি ও ব্যাংকিং, শিক্ষা ও বিজ্ঞান, চিকিত্সা, দুর্যোগ পূর্ব সর্তকতা তথ্য বিনিময় করতে চায় চীন।
কুয়াংসি চুয়াং জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কমিটির সম্পাদক ফেং ছিংহুয়া বলেন, কুয়াংসি চীন আসিয়ানের সঙ্গে ওয়েবসাইট যোগাযোগ করিডোর প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করবে।
দ্বিতীয় খবর : মিয়ানমারের আসন্ন নির্বাচনের জন্য ইশতেহার ঘোষণা করেছে দেশটির বিরোধীদলীয় নেত্রী অং সান সু চির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। এতে দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় সেনাবাহিনীর 'মর্যাদাপূর্ণ' ভূমিকার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ব্যয় কমাতে মন্ত্রণালয়ের সংখ্যা কমানোর কথা বলেছে দলটি। খবর রয়টার্সের।
আগামী ৮ নভেম্বরের বহুল প্রতীক্ষিত সাধারণ নির্বাচন সামনে রেখে এনএলডি গত সোমবার রাতে ২৮ পৃষ্ঠার ওই ইশতেহার প্রকাশ করে। দেশের সেনানিয়ন্ত্রিত রাজনীতিতে কয়েক দশক ধরে নিগ্রহের শিকার দলটি এবারের নির্বাচনে ভালো ফল করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দীর্ঘদিনের জান্তা সরকারের আমলে সু চির এনএলডি জাঁতাকলে পিষ্ট হয়েছে। তারপরও দলটির নির্বাচনী ইশতেহারে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি নরম সুরে কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী এমন একটি 'অপরিহার্য' প্রতিষ্ঠান, যাকে 'মর্যাদাপূর্ণ বাহিনী হতে হবে, যারা গণতন্ত্রের চর্চাকে সুরক্ষিত করবে'। সেনাবাহিনীর বিষয়ে ইশতেহারে সুনির্দিষ্টভাবে আর কিছু বলা হয়নি। তবে এটা বলা হয়েছে যে এই বাহিনীকে 'কৌশলগতভাবে দক্ষ' ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত করে তোলা হবে এবং দেশের নির্বাহী ব্যবস্থায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এসব বিষয় ইঙ্গিত দেয়, সু চি এখন অধিকতরভাবে আপস করে চলার পথে হাঁটছেন। অথচ কয়েক মাস আগেও সেনাবাহিনী প্রশ্নে তাঁর কণ্ঠে কিছুটা ভিন্ন সুর ছিল। তখন সংবিধান পরিবর্তনে সেনাবাহিনীর ভেটো ক্ষমতা খর্ব করতে একটি বিল উত্থাপন করে এনএলডি। তবে পার্লামেন্টে সেনাবাহিনীর সংরক্ষিত আসনের আইনপ্রণেতারা বিলটি আটকে দেন। দীর্ঘদিনের গৃহবন্দিদশা থেকে স্থায়ীভাবে মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই সু চি সেনাবাহিনীর বিষয়ে তুলনামূলকভাবে নমনীয় মনোভাব দেখিয়ে আসছেন।
ইশতেহারে কৃষকদের ইউনিয়ন গঠন, পরিবেশগত প্রভাব মোকাবিলায় বিনিয়োগ পুনর্নির্ধারণ এবং 'নিখাঁদ গণতান্ত্রিক ভিত্তি'কে সমর্থন করে এমন পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আর একটি 'দক্ষ' সরকার উপহার দিতে বাজেটের ওপরে চাপ কমানোর কথা বলা হয়েছে। এ জন্য মন্ত্রণালয়ের সংখ্যা কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এনএলডি।
কার্যত মিয়ানমারের বর্তমান নির্বাহী ব্যবস্থার কথা বিবেচনা করেই এনএলডি আপস করে চলার পথে হাঁটছে বলে মনে করা হচ্ছে। আসন্ন নির্বাচনে এনএলডি বেশির ভাগ আসনেই জিততে পারে। তবে তারপরও দলটির কেউ দেশের প্রেসিডেন্ট হবেন বা তারাই নতুন সরকার চালাবে, এমন নিশ্চয়তা নেই। কারণ, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে থাকেন পার্লামেন্টে ভোটাভুটির মাধ্যমে। আর পার্লামেন্টের আসনের ২৫ শতাংশই সেনাবাহিনীর জন্য সংরক্ষিত। আবার নির্বাচিত প্রেসিডেন্টই মন্ত্রিসভা গঠন করেন। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতর থেকে মন্ত্রী বানাবেন, এমন কোনো নিয়ম নেই। পাশাপাশি জান্তা সরকারের আমলে রচিত সংবিধানের কারণে শান্তিতে নোবেলজয়ী নেত্রী সু চি দেশের প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না।
গেল সপ্তাহে এনএলডির নির্বাচনী প্রচারণা উদ্বোধনের সময় দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় সু চি নির্বাচনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করা এবং নির্বাচনের পর ক্ষমতার মসৃণ পালাবদলের ওপরই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। একমাত্র সু চির ভাবমূর্তির ওপর ভিত্তি করে এনএলডি জনপ্রিয় দলে পরিণত হলেও তারা ক্ষমতায় গেলে কীভাবে সরকার চালাবে, তা নিয়ে কোনো স্পষ্ট ঘোষণা না থাকায় সমালোচনা রয়েছে।
আসন্ন নির্বাচনকে মিয়ানমারের রাজনৈতিক দৃশ্যপটে বড় ধরনের পরিবর্তন আসার সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তৃতীয় খবর : চীনের সি আনে শুরু হ'ল 'রেশমপথ আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা'
চীনের সি আন শহরে গেলো সপ্তাহে শুরু হয়েছে 'রেশমপথ আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা'। ৩৩টি দেশ ও অঞ্চল এতে অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে অ্যাস্তোনিয়া, ক্রোয়েশিয়া, শ্রীলংকা, জর্জিয়া, হাঙ্গেরি ও তুরস্কসহ ১৪টি দেশ প্রথমবারের মত এ মেলায় অংশ নিচ্ছে।
'রেশমপথ'-সংলগ্ন চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে অসংখ্য ঐতিহাসিক পর্যটনস্থান আছে। এ মেলার মাধ্যমে এসব স্থানকে বিদেশিদের সামনে তুলে ধরা হবে এবং অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশও তাদের নিজ নিজ পর্যটনসম্পদের প্রচারণা চালানোর সুযোগ পাবে।
0918.m4a
|