Web bengali.cri.cn   
ইউননান প্রদেশের তালি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা
  2015-09-05 18:24:20  cri

সুপ্রিয় বন্ধুরা, আপনারা শুনছেন সুদূর পেইচিং থেকে প্রচারিত চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান 'মুক্তার কথা'। আপনাদের সঙ্গে আছি আমি আপনাদের বন্ধু মুক্তা।

বন্ধুরা, সম্প্রতি আমি ইউননান প্রদেশের তালি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছি। তারা সবাই দক্ষিণ এশিয়ার নাগরিক। আজকের অনুষ্ঠানের শুরুতেই সেই গল্প শোনাবো।

তালি বিশ্ববিদ্যালয় ইউননান প্রদেশের 'রোমান্টিক' এলাকা তালিতে অবস্থিত। তালি বিশ্ববিদ্যালয় চীনের সবচেয়ে তরুণ বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তালি একাডেমি। আর সেই একাডেমিই গত পয়লা মে চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়।

২০০২ সাল থেকেই তালি বিশ্ববিদ্যালয় বিদেশি ছাত্রছাত্রী সংগ্রহ শুরু করে। খুব দ্রুত বাড়ছে এর বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা। বিদেশি শিক্ষার্থীরা নিজেদের স্বপ্ন ও চীন সম্পর্কিত কৌতুহল নিয়ে তালি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন।

তালি বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিত্সাবিদ্যা একাডেমিতে ঢুকলেই চোখে পড়ে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উদ্যান এবং সেখানে বসে থাকা বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থী। প্রথম দেখায় মনে হবে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি। ভারতের ছাত্র দিবাঙ্কর কুমার চাকি ২০১৩ সালের নভেম্বর থেকে তালি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছেন। তিনি কম কথা বলেন, তবে সবসময় হাসিখুশি। তালি সম্পর্কে তিনি বললেন, তালির সবকিছুই সুন্দর। তিনি আরও বলেন,

(রে ১)

'তালি ভীষণ সুন্দর। আসলে কোনো মানুষ তালির সৌন্দর্যকে এড়িয়ে চলতে পারে না। সবাইকে এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে হবে।'

পাকিস্তানের শিক্ষার্থী নায়েব সওকত তালি বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিত্সাবিদ্যা একাডেমিতে লেখাপড়া করছেন দেড় বছর ধরে। তিনি জানালেন, তাঁর একজন আত্মীয় এর আগে তালি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন। তাঁর কাছেই তালি সম্পর্কে জানা হয়েছে। তিনি আরও বললেন, চীনে লেখাপড়া করা সুবিধা অনেক। দেশে থাকতে তিনি চীন-পাকিস্তান সুসম্পর্কের কথা শুনেছেন। এখানে এসে তিনি সেটা উপলব্ধি করেছেন। তিনি বলেন,

(রে ২)

'এখানে অন্যান্য দেশের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। আমার এখানে কোনো সমস্যাই হচ্ছে না।'

নেপালের ছাত্র সোভিত কুমার গুরুং তালি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন বছর ধরে পড়ছেন। তাঁর বাবা মনে করতেন চীনের চিকিত্সা-বিজ্ঞান উন্নত; এখানকার শিক্ষার মানও উঁচু। একারণেই সোভিতের চীনে আসা। গত এপ্রিলে নেপালে ভয়াবহ ভূমিকম্পে তার পরিবারের অনেক ক্ষতি হয়েছে। তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাকে জানিয়েছেন যে, উদ্ধারকাজে চীনা কর্মীরা অনেক দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিলেন। সোভিত মনে করেন, ভূমিকম্পের পর চীন যেভাবে নেপালের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল, তা একটি দায়িত্বশীল বড় দেশ হবার প্রমাণ বহন করে। চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সিদ্ধান্তকেও তিনি সঠিক বলে মনে করেন। তিনি বলেন,

(রে ৩)

'আমি নেপালী ছাত্রছাত্রীদেরকে বলতে চাই যে, কোনো চিন্তা নাই। লেখাপড়ার জন্য চীনে চলে আসুন। চাইলে তালিতে বা চীনের যে কোনো অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারেন। আর এর জন্য আপনাকে অনুতপ্ত হতে হবে না।'

২৪ বছর বয়সী বাংলাদেশি ছাত্র মোহাম্মাদ মামুন সরকার চীনে লেখাপড়া করছেন গত ছয় বছর ধরে। গত মে মাসে তিনি তালি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন। তিনি জানালেন, চীন সরকার দক্ষিণ এশিয়ার ছাত্রছাত্রীদেরকে বৃত্তিসহ বিভিন্ন সুবিধা দেয়। তালি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও বিবিধ ফি অন্যান্য বড় শহরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চেয়ে কম, অথচ এখানকার শিক্ষার মান নিম্ন না। তালির পরিবেশ খুবই ভাল। এ জন্যই তিনি এখানে এসেছেন। ছয় বছরে তিনি চীনের বিরাট পরিবর্তন অনুভব করেছেন। শহরের অবকাঠামো উন্নত হয়েছে, জনগণের জীবনমান উন্নত হয়েছে। তালি ছাড়াও তিনি পেইচিং, শাংহাই, কুয়াংচৌ, শানতু ও ছেংদু ভ্রমণ করেছেন। তাঁর চোখে প্রতিটি শহর উন্মুক্ত, সহনশীল ও আধুনিক। তিনি চীনা ভাষায় আমার সঙ্গে কথা বললেন। তিনি বললেন,

(রে ৪)

'আমি চীনে ছয় বছর ধরে আছি। এ ছয় বছরে আমি চীনের বিরাট পরিবর্তন দেখেছি। চীন দিন দিন উন্নত হচ্ছে এবং বিশ্বে আগের যে-কোনো সময়ের তুলনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। চীন হল বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। চীনা স্বপ্ন হল সারা বিশ্বের স্বপ্ন।'

আসলে তালি বিশ্ববিদ্যালয় চীনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিনিধি। আর বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মামুন সরকারও ঠিকই বলেছেন। তিনি বলেছেন, চীনা স্বপ্ন হ'ল গোটা বিশ্বের স্বপ্ন। আমরা আশা করি, এসব বিদেশি শিক্ষার্থী চীনে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারবেন। (ছাই/আলিম)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040