Web bengali.cri.cn   
বিদেশে চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসার সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ
  2015-08-31 18:48:01  cri

'এক অঞ্চল, এক পথ'-সংশ্লিষ্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে দক্ষিণ এশিয়া অনেক চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সম্প্রতি পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত এক আলোচনাসভায় বিষয়টি নিয়ে মতবিনিময় করেন বিশ্লেষকরা। চায়না অ্যান্ড গ্লোবালাইজেশান থিংক ট্যাঙ্ক দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক এ আলোচনাসভার আয়োজন করে। বস্তত এ সভার উদ্দেশ্যই ছিল দক্ষিণ এশিয়ার বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে আলোচনা করা এবং চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এ সংক্রান্ত পরামর্শ দেওয়া।

গত ২৬ অগাস্ট পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত হয় 'এক অঞ্চল, এক পথ'-সংশ্লিষ্ট দক্ষিণ এশিয়া আলোচনাসভা। চায়না অ্যান্ড গ্লোবালাইজেশান থিংক ট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠিত হবার পর এটি ছিল এর তৃতীয় আয়োজন। আলোচনাসভার উদ্দেশ্য ছিল দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগের সুবিধা ও ঝুঁকি নিয়ে আলোচনা করা। বলা বাহুল্য, দক্ষিণ এশিয়া চীনের 'এক অঞ্চল, এক পথ' কৌশলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।এ কথা সত্য যে, অঞ্চলটিকে রাজনীতি, অর্থনীতি ও পরিবেশসংশ্লিষ্ট নানান সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তবে এতদঞ্চলের দেশগুলোর ভৌগোলিক অবস্থান ভালো এবং জনসম্পদও প্রচুর। তাই চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ অঞ্চলের বড় আকর্ষণী শক্তি আছে। তাদের জন্য এসব দেশে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে পর্যটন, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও সাংস্কৃতিক বিনিময় খাতে চীনের সাথে এসব দেশের সহযোগিতার বিশাল সুপ্ত সম্ভাবনা রয়েছে।

চায়না অ্যান্ড গ্লোবালাইজেশান থিংক ট্যাংকের পরিচালক ওয়াং হুই ইয়াও আলোচনাসভায় বলেন, 'এক অঞ্চল, এক পথ' ধারণা চীনকে আরও বহির্মুখী করবে, আরও উন্মুক্ত করবে। এ ধারণা বাস্তবায়নকালে অনেক দৃষ্টান্তমূলক প্রকল্প প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। তিনি এ প্রসঙ্গে ভারতে বিনিয়োগের সুপ্ত সম্ভাবনার কথা বলেন। তিনি বলেন, অপেক্ষাকৃত দ্রুত বিকশিত ও ব্রিকসভুক্তজনবহুল দেশ হিসেবে ভারতে বিনিয়োগের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সামনে।

চায়না অ্যান্ড গ্লোবালাইজেশান থিংক ট্যাঙ্কের 'এক অঞ্চল, এক পথ' গবেষণালয়ের উপ-পরিচালক ছু ইন ভারতে বিনিয়োগের সুযোগ সম্পর্কে বলেন, "ভারতে শিল্প স্থাপন করা খুব কঠিন। তবে শুরুতে পর্যটনশিল্পে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। ভারত থেকে বিভিন্ন পণ্য ও সেবা আমদানি করা যায়। ভারতের উচ্চশিক্ষার মান খুব ভাল। আমরা দেশটিতে ব্যাপকভাবে বুনিয়াদী ব্যবস্থা নির্মাণেকাজ করার প্রস্তাব করছি না।"

আসলে ভারতসহ দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর পর্যটনসম্পদ প্রচুর। অন্যান্য শিল্পের তুলনায় এ শিল্পে নীতিগত ও আইনগত সীমাবদ্ধতা অনেক কম। ভারতে পর্যটনশিল্প উন্নয়নেবিনিয়োগ করা যায়।

চায়না অ্যান্ড গ্লোবালাইজেশান থিংক ট্যাঙ্কের 'এক অঞ্চল, এক পথ' গবেষণালয়েরনির্বাহী পরিচালক হুয়াং রি হান বলেন, "রাষ্ট্রের সাথে রাষ্ট্রের বিনিময়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মানুষে-মানুষে বিনিময়। পর্যটনশিল্পের উন্নয়নের মাধ্যমে এ বিনিময় ত্বরান্বিত করা যায়। এ খাতে প্রবাসী চীনারা ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে পারেন।"

শিল্পখাতে বিনিয়োগের প্রশ্নে দক্ষিণ এশিয়ার আরেকগুরুত্বপূর্ণ দেশ পাকিস্তানের কথা আসে। ২০১৩ সালে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি খ্য ছিয়াং দেশটি সফরকালে চীন-পাকিস্তানঅর্থনৈতিক করিডোর প্রতিষ্ঠা এবং দু'দেশের মধ্যে পরিবহন, জ্বালানি ও সমুদ্রসহ নানা ক্ষেত্রে বিনিময় ও সহযোগিতা জোরদার করার প্রস্তাব দেন। বস্তুত, চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর হচ্ছে 'এক অঞ্চল, এক পথ' ধারণার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ করিডোর দক্ষিণ এশিয়া, মধ্য-এশিয়া, উত্তর আফ্রিকা ও উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোকে পরস্পরের সাথে সংযুক্ত করবে।

পাকিস্তান সক্রিয়ভাবে চীনের সাথে সহযোগিতা করার চেষ্টা করছে।অন্যদিকে, পাকিস্তানের বিদ্যুত, স্থাপত্য ও চিকিত্সা খাতের উন্নয়নে চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো আরও ভূমিকা রাখতে পারে। ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পাকিস্তান গবেষণাকেন্দ্রের উপ-পরিচালক সুন লি চৌ বলেন, "পাকিস্তানে বিদ্যুত খাতে বিনিয়োগের বিশাল সুপ্ত সম্ভাবনা রয়েছে। দেশটির অভিজাত অঞ্চলে প্রতিদিন তিন থেকে চারবার বিদ্যুত চলে যায়। তাই চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোদেশটির জলবিদ্যুত্, তাপবিদ্যুত্, বায়ুবিদ্যুত বা পারমাণবিক বিদ্যুত্ উত্পাদন খাতে বিনিয়োগ করে লাভবান হতে পারে। পাকিস্তানে সৌর বিদ্যুতের মত নতুন জ্বালানি খাতে ভর্তুকি দেওয়া হয়। এ খাতে বিনিয়োগ করলে কিছু অতিরিক্ত সুবিধাও পাওয়া যায়। এ বিষয়টিও কম আকর্ষণীয় নয়।" (ইয়ু/আলিম)

মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040