0613muktarkotha
|
পাত্তালাম শ্রীলংকার প্রথম কয়লা বিদ্যুতকেন্দ্র। এটি চীন ও শ্রীলংকার বৃহত্তম অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রকল্প। সাত বছর লেগেছে কেন্দ্রটি নির্মাণ করতে। গত বছরের ১৬ মে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও শ্রীলংকার তত্কালীন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাক্শে এ কয়লা বিদ্যুতকেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রিয় বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানের শুরুতেই আমি আপনাদেরকে জানাবো এ কেন্দ্রসম্পর্কিত কিছু তথ্য।
পাত্তালাম কয়লা বিদ্যুতকেন্দ্রটি রাজধানী কলম্বোর ১৩০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। চায়না মেশিনারি এঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশান (সিএমইসি) ২০০৭ সালে কেন্দ্রটির নির্মাণকাজ শুরু করে। আর এ খাতে চীনের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেয়।
২০০৭ সালে শ্রীলংকায় গৃহযুদ্ধ চলছিল। এর বিরূপ সময়ে চীন সরকার শ্রীলংকার প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। এ প্রসঙ্গে শ্রীলংকার বিদ্যুত ও জ্বালানিসম্পদমন্ত্রী পাভিথ্রা ওয়ান্নিয়ারেচ বলেন,
(রে ১)
'শ্রীলংকায় গৃহযুদ্ধের সময় অনেক দেশ আমাদেরকে সহায়তা দিতে নাজার ছিল। বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন করা আমাদের জন্য কঠিন কাজ ছিল। কিন্তু চীন সরকার আমাদেরকে বরাবরের মতো তখনও সহায়তা দিয়েছে।'
পাত্তালাম কয়লা বিদ্যুতকেন্দ্রের দু'টি পর্যায় রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে চীন ৪৪ কোটি ৫ লাখ মার্কিন ডলারের ঋণ সরবরাহ করে। ২০১১ সালের মার্চ মাসে প্রথম পর্যায় কার্যকর হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে চীন ৮৯ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ দেয়। এ বিদ্যুতকেন্দ্রের উত্পাদন ক্ষমতা ৯ লাখ কিলোওয়াট। অন্যভাবে বললে, শ্রীলংকায় উত্পাদিত মোটি বিদ্যুতের তিন ভাগের এক ভাগই এ কেন্দ্রে উত্পাদিত হয়। সিএমইসির পাত্তালাম কয়লা বিদ্যুতকেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার ওয়াং লুদং বলেন,
(রে ২)
'পিক আওয়ারে গোটা শ্রীলংকায় মোটি বিদ্যুতের চাহিদা ২১ লাখ কিলোওয়াট এবং অফ পিক আওয়ারে চাহিদা ১৮ থেকে খ কিলোওয়াট। পাত্তালাম দেশের ৪০ শতাংশ বিদ্যুত সরবরাহ করে।'
এখন শ্রীলংকার ৯৭ শতাংশ নাগরিক বিদ্যুত সুবিধা পাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে লংকান নাগরিক পুর্ণিমা বলেন,
(রে ৩)
'শ্রীলংকায় বিদ্যুতের দাম বেশি ছিল। কিন্তু চীনের সহায়তায় শ্রীলংকা সরকার এ সম্পর্কিত ব্যবস্থা নেয়। বিশেষ করে পাত্তালাম কয়লা বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মিত হবার পর বিদ্যুতের দাম অনেক কমেছে।'
পাত্তালাম বিদ্যুতকেন্দ্র শ্রীলংকার সমাজ ও অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুতশক্তি উত্পাদন করছে। এ সম্পর্কে পাভিথ্রা ওয়ান্নিয়ারেচ বলেন,
(রে ৪)
'এর আগে শ্রীলংকায় বিদ্যুত উত্পাদিত হতো তেল থেকে। তেল দিয়ে বিদ্যুত উত্পাদনে খরচ হয় প্রতি কিলোওয়াটে ২৫ থেকে ৪০ রুপি। কিন্তু কয়লা বিদ্যুত্ উত্পাদনের খরচ হল প্রতি কিলোওয়াট ৮ রুপি। সেজন্য ঋণ পরিশোধের পর আমরা বিদ্যুতের দাম আরও কমিয়ে দেব। পাত্তালাম বিদ্যুতকেন্দ্র আমাদের খুই গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ।'
আসলে এর আগে কেউ কেউ পাত্তালাম বিদ্যুতকেন্দ্র প্রকল্প নিয়েই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। এ সম্পর্কে শ্রীলংকার বিদ্যুত্ ও জ্বালানিসম্পদ মন্ত্রী পাভিথ্রা ওয়ান্নিয়ারেচ বলেন,
(রে ৫)
'চীনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের মান বিশ্ব পর্যায়ের। চীনা প্রযুক্তি নিয়ে সন্দেহ করার কোনো কারণ নেই। শ্রীলংকার সড়ক, বন্দর ও বিদ্যুত উত্পাদনের ক্ষেত্রে চীনা শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নেয়। এ পর্যন্ত আমরা কোনো সমস্যা পাইনি। আমি আশা করি, ভবিষ্যতে অব্যাহতভাবে চীন সরকারের সহায়তা পাবো। শ্রীলংকা অবকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে চীনের সাথে সহযোগিতা চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক।'
গান
বন্ধুরা, শুনছিলেন চীনা কোম্পানি কর্তৃক নির্মিত শ্রীলংকার পাত্তালাম কয়লা বিদ্যুতকেন্দ্র সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন। এখন আপনাদের চিঠিপত্রের উত্তর দেওয়ার পালা।
বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার সোনালী বাঁধন ফ্যান ক্লাবের সভাপতি মোছাঃ শাহনেওয়াজ পারভীন তার ইমেলে লিখেছেন, সুপ্রিয় মুক্তা আপু, কেমন আছেন? আশা করি মহান রাব্বুল আলামিনের কৃপায় ভাল আছেন এবং আপনার নিজ কর্মে অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন। আর আমিও এখানে আমার ক্লাবের সকল সদস্যকে সাথে নিয়ে নিয়মিতভাবে অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে আপনাদের প্রচারিত প্রতিদিনের অত্যন্ত শ্রুতিমধুর সকল অনুষ্ঠানগুলো শুনে যাচিছ। বেশ মজা পাই এসব অনুষ্ঠান শুনে। আমি একজন নারী। আমার ক্লাবের সকল সদস্য আপনাদের প্রতিদিনের বাংলা অনুষ্ঠানগুলোর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। আমাদের ক্লাবের সবার সম্মিলিত মত হলো, সি আর আই বাংলা বিভাগের অনুষ্ঠানগুলোর কোনো তুলনা হয় না। কী পরিবেশনায়, কী তথ্যগত মানের দিক থেকে, সর্বক্ষেত্রে আপনাদের বাংলা অনুষ্ঠান সবার চেয়ে ভালো। আপা, শনিবারের মুক্তার কথা অনুষ্ঠানের সময় আরো বাড়ানো আশু প্রয়োজন। আমার প্রস্তাব হচেছ, অনুষ্ঠানে খুব দীর্ঘ চিঠিগুলো পুরো পড়ে অন্য অনেকের চিঠি পড়বেন না, এটা মোটেই সমীচীন নহে। আপু আমি বলতে চাচিছ, একজন শ্রোতার চিঠির মূল কথাগুলো শুধু পড়ে শোনাবেন। এতে করে প্রতি সপ্তাহের অনুষ্ঠানে আপনারা বেশ কিছু চিঠির জবাব দিতে পারবেন। মতামতটি গুরুত্ব দিয়ে ভেবে দেখলে খুশি হব জানবেন। এ ছাড়া যেসব শ্রোতাবন্ধুর চিঠিতে তেমন কিছু থাকে না, সেসব চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার সপ্তাহের অন্য একদিন করলে ভাল হয়। যারা আমাদের লিখেছেন-এই শিরোনামে পাঁচ দশ মিনিটের একটি প্রাপ্তি স্বীকার অনুষ্ঠান করলে ভাল হয়। মতামতটি ভেবে দেখবেন কি? আর একটি কথা, যারা মুক্তার কথা অনুষ্ঠানে চিঠি পাঠান বা যাদের চিঠি অনুষ্ঠানে পড়ে শোনানো হয়, তাদের মধ্য থেকে অন্তত দু-একজনকে মাসের শ্রেষ্ঠ শ্রোতা বা পত্রলেখক হিসাবে ঘোষণা দিয়ে তাদের উপহার প্রদান করা যেতে পারে। সুন্দর এ প্রস্তাব ভেবে দেখতে কর্তৃপক্ষকে বিনীত অনুরোধ রাখছি। আমার মতে, মুক্তার কথা অনুষ্ঠানে গান না শুনিয়ে বরং আরো বেশি শ্রোতার চিঠির জবাব দেওয়া একান্তভাবে উচিত। সাতদিন ধরে শ্রোতারা উন্মুখ হয়ে অপেক্ষা করেন, এই বুঝি তাদের নাম বা তাদের চিঠি অনুষ্ঠানে পড়ে শোনানো হবে! আর একটি কথা, প্রতি সপ্তাহের মুক্তার কথা অনুষ্ঠানের সময় অন্তত দশ মিনিট বাড়ালে খুব ভাল হয়। আজ শেষ করছি। সবাই ভাল ও সুস্থ থাকুন এই কামনায়।
আচ্ছা, বন্ধু মোছাঃ শাহনেওয়াজ পারভীন, আপনি অনেক সুন্দর চিঠি লিখেছেন। আপনাকে ধন্যবাদ। আপনি মুক্তার কথা অনুষ্ঠানে দীর্ঘ চিঠি না-পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। অথচ দেখুন, আপনি নিজেই দীর্ঘ চিঠি লিখেছেন! আমরা কিন্তু আপনার গোটা চিঠি পড়ে শুনিয়েছি। কারণ, চিঠির পুরো বক্তব্যই গুরুত্বপূর্ণ। ঠিক এভাবেই গুরুত্বপূর্ণ চিঠিগুলো আমরা পড়ে থাকি। কোনো গুরুত্বহীন চিঠি আমরা মুক্তার কথা অনুষ্ঠানে পড়ি না। তা ছাড়া, আমাদের শ্রোতারা মানে আপনারা গুরুত্বহীন চিঠি লেখেনই না! আপনি মুক্তার কথা অনুষ্ঠানের সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন। আমরা আপনার প্রস্তাব বিবেচনা করে দেখবো। ভাল থাকবেন।
বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার ইন্টারন্যাশনাল সিআরআই নারী জাগরণ লিসেনার্স ক্লাবের সালমা আক্তার সাথী তার ইমেলে লিখেছেন, ভাইয়া ও আপু আমাদের বাগানে ফোটা গন্ধরাজ ফুলের শুভেচ্ছা নিবেন। আমার এই জীবনে জ্ঞান ও বিনোদনের সঙ্গী হিসাবে সিআরআইকে পেয়ে আমি ধন্য। বিশ্বে অনেক বেতার শুনেছি কিন্তু একমাত্র সিআরআই মনের চাহিদা পূরণ করে থাকে। সিআরআই সকল শ্রেণির মানুষের জন্য বস্তুনিষ্ঠ অনুষ্ঠান প্রচার করে। 'মুক্তার কথা' 'এশিয়া টুডে' 'দৃষ্টির সীমানা' 'চলতি প্রসঙ্গ' ও বিশ্ব সংবাদ আমার খুব ভাল লাগে। আমার রেডিও সেটটি নষ্ট হয়ে গেছে অনেক কষ্ট করে শর্টওয়েবে সিআরআই শুনে থাকি।
বন্ধু সালমা আক্তার সাথী, চিঠি লেখার জন্য ধন্যবাদ জানাই। আপনার রেডিও সেটটি নষ্ট হয়ে গেছে শুনে খারাপ লাগলো। কষ্ট করে আপনি আমাদের অনুষ্ঠান শুনে যাচ্ছেন শুনে ভালো লাগলো। আপনাকে ধন্যবাদ। আশা করি নিয়মিত আমাদের লিখবেন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার হামিম হোসেন মণ্ডল (বুলবুল) লিখেছেন, স্ব-রচিত রম্য রচনা লিখে পাঠালাম। ভালো লাগলে পড়ে শোনাবেন। এটি বাস্তব ঘটনা থেকে তুলে কিছুটা মডিফাই করে লেখা হয়েছে। প্রিয় শ্রোতা, শুনুন বুলবুলের রম্যরচনা।
....
হামিম হোসেন মণ্ডল (বুলবুল)-এর রম্যরচনাটা কিন্তু মজার হয়েছে। ভাই বুলবুল, আপনাকে ধন্যবাদ। আশা করি অন্য শ্রোতারাও আমাদের এ ধরনের লেখা পাঠাবেন।
এখন আমরা শুনবো বাংলাদেশের পাবনা জেলার পাছশুয়াইল রেডিও শ্রোতা ক্লাবের এস এম হান্নানের পাঠানো অডিও মতামত।
(রেকর্ডিং)
আচ্ছা, বন্ধু এস এম হান্নান, আপনাকে মতামত দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাই। আশা করি আপনার মতো আরও শ্রোতা আমাদের অডিও মতামত পাঠাবেন।
বাংলাদেশের রংপুর জেলার আন্তর্জাতিক সন্ধ্যামালতী বেতার শ্রোতা ক্লাবের সম্পাদক ধনোপতি সরকার তার ইমেলে লিখেছেন, প্রিয় মুক্তা আপু প্রথমে চন্দ্রমল্লিকা ফুলের শুভেচ্ছা নিবেন। মুক্তা আপু, আমি Cri এর একজন নিয়মিত ও অনেক পুরাতন শ্রোতা। আমি বেতার ১৯৯৮ সাল থেকে শুনি। মুক্তা আপু Cri এর সকল অনুষ্ঠান শুনি। অনেক ভাল লাগে। হাল শৈলী। সুরের ধারা। মুক্তার কথা। পুবের জানালা। খোলামেলা। এ সব অনুষ্ঠান আমার কাছে বেশি ভাল লাগে। মুক্তা আপু আপনাদের ওয়েবসাইট অনেক সুন্দর। তাই নিয়মিত আমি ভিজিট করে থাকি।
ভাই সরকার, আপনাকে ধন্যবাদ। আমা করি আপনি ভবিষ্যতেও আমাদের সঙ্গে থাকবেন।
প্রিয় শ্রোতা, এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাদের সবাইকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনারা আমাদের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কিছুটা হলেও আনন্দ পেয়ে থাকেন, তাহলে মনে করবো আমাদের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। আপনাদের জন্যই আমাদের সকল প্রচেষ্টা ও আয়োজন। আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং শুনতে থাকুন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান। আমাদের সঙ্গে থাকুন, আমাদের অনুষ্ঠান শুনুন আর আপনার যে-কোনো মতামত বা প্রশ্ন পাঠিয়ে দিন চিঠি বা ই-মেইলের মাধ্যমে।
আমাদের ই-মেইল ঠিকানা হচ্ছে ben@cri.com.cn এবং আমার নিজস্ব ইমেইল ঠিকানা হল caiyue@cri.com.cn। 'মুক্তার কথা' অনুষ্ঠান সম্পর্কিত ইমেইল আমার নিজস্ব ইমেইল ঠিকানায় পাঠালে ভালো হয়। আজ তাহলে এ পর্যন্তই। আশা করি, আগামী সপ্তাহের একই দিনে, একই সময়ে আবার আপনাদের সঙ্গে কথা হবে। ততোক্ষণ সবাই ভালো থাকুন, আনন্দে থাকুন। (ছাই/আলিম)