বন্ধুরা, এ অনুষ্ঠানে আপনাদের জন্য তুলে আনা হয়েছে পৃথিবীর নানা প্রান্তে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা।
আর এ আয়োজনে আপনাদের সঙ্গে আছি আমি প্রকাশ এবং আমি আইরীন নিয়াজী মান্না।
প্রকাশ : তাহলে মান্না আপা আজ আমরা কি কি খবর নিয়ে আলোচনা করবো।
মান্না : ধন্যবাদ প্রকাশ। বাছাই করা একটি সংবাদ দিয়েই আজ আলোচনা শুরু করা যাক।
প্রথম খবর : সাংস্কৃতিক বিনিময় পরিকল্পনার আলোকে চীনা ও বিদেশি শিক্ষার্থী আদান প্রদান প্রকল্প শুরু
সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের লক্ষ্যে পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হলো মঙ্গলবার চীন ও বিদেশি শিক্ষার্থী বিনিময়ের ৪র্থ 'রংধনু সেতু' প্রকল্প। এ প্রকল্পে ২০ জন মেধাবী চীনা শিক্ষার্থী এবং ৩৬জন মার্কিন শিক্ষার্থী সুযোগ পাবে। তারা দু'দেশের সাংস্কৃতিক বিষয়ে জ্ঞানার্জনে আর্থিক বৃত্তি পাবে।
চীনের ১০ম জাতীয়গণকংগ্রেসের স্থায়ীকমিটির চেয়ারম্যান কু সিউ লিয়ান চলতি বছরের 'রংধনু সেতু' প্রকল্প উদ্বোধন করেন এবং অনুষ্ঠানের পতাকা হস্তান্তর করেন।
এদিন এক অনুষ্ঠানে প্রকল্পে অংশগ্রহণকারী চীনা শিক্ষার্থীরা ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন থিমের আবৃত্তি পরিবেশন করেন।
দ্বিতীয় খবর : বঙ্গবন্ধুর হত্যার দায়ে মৃতুদণ্ড প্রাপ্ত ছয় খুনিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার দায়ে মৃতুদণ্ড প্রাপ্ত ছয় খুনিকে শিগগির ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে রক্ষা করা হচ্ছে সর্বোচ্চ গোপনীয়তা।
খুনিদের ফিরিয়ে আনতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কয়েক বছর ধরে কাজ করছে এবং উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলেই জানা গেছে।
বঙ্গবন্ধু হত্যায় চূড়ান্ত রায়ে ১২ আত্মস্বীকৃত খুনির ফাঁসির রায় দেন সর্বোচ্চ আদালত। এদের মধ্যে ফাঁসি কার্যকর হয়েছে পাঁচ জনের। একজন মারা গেছেন। অপর ছয় জন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পলাতক রয়েছেন।
পলাতকরা হলেন, লে. কর্নেল (বরখাস্ত) খন্দকার আবদুর রশিদ, মেজর (বরখাস্ত) শরিফুল হক ডালিম, লে. কর্নেল (অব.) এ এম রাশেদ চৌধুরী, মেজর (অব.) এসএইচএমবি নূর চৌধুরী, ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেম উদ্দিন খান।
২০১০ সালের জানুয়ারিতে ফাঁসি কার্যকর হয়েছে সৈয়দ ফারুক রহমান, মহিউদ্দিন আহমেদ, সুলতান শাহারিয়ার রশিদ খান, বজলুল হুদা ও একে এম মহিউদ্দিনের। আর পলাতক অবস্থায় জিম্বাবুয়েতে মারা গেছেন অপর খুনি আজিজ পাশা।
পলাতক জীবিতদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড এলার্ট জারি রয়েছে।
জানা গেছে, বেশ কয়েকজন খুনির অবস্থান সনাক্ত করা হয়েছে। এসব খুনি যুক্তরাষ্ট্র, লিবিয়া ও কানাডায় অবস্থান করছে।
জানা গেছে, পলাতক থাকা খুনিদের ফিরিয়ে আনতে আইনী প্রক্রিয়ায় সহায়তা পেতে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার দুইটি ল' ফার্মের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে সরকার।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশের সহায়তাও চাওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও লিবিয়ার কাছে চিঠিও পাঠানো হয়েছে।
এদিকে দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, খুনি রাশেদ চৌধুরী রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে। তিনি কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টায় রয়েছেন।
নূর চৌধুরী রয়েছেন কানাডায়। খন্দকার আব্দুর রশিদ রয়েছেন লিবিয়ার বেনগাজি শহরে।
শরিফুল হক ডালিম কেনিয়ায় ব্যবসা করলেও তার যাতায়াত রয়েছে লিবিয়া ও পাকিস্তানে।
আব্দুল মাজেদ ও মোসলেম উদ্দিন পাকিস্তান কিংবা লিবিয়ায় থাকতে পারেন। তবে প্রায়শই তারা দেশ বদল করছেন বলে জানা গেছে।
এসব দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোকে তাদের ওপর নজর রাখার বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
তৃতীয় খবর : শাংহাইয়ে শুরু হলো 'এক অঞ্চল, এক পথ' সংক্রান্ত কর্মসূচি 'অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড'
চীনের প্রস্তাবিত 'এক অঞ্চল, এক পথ' সংক্রান্ত কর্মসূচি 'অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড' শনিবার শাংহাইয়ে শুরু হয়েছে। আগামী অক্টোবরের শুরুতেই ইতালির মিলান শহরে অনুষ্ঠেয় 'বিশ্বমেলা-২০১৫'তে গিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত হবে।
এ কর্মসূচিতে 'রেশম পথ অর্থনৈতিক অঞ্চল' বরাবর দেশগুলো জড়িত হবে। যাত্রা পথের মোট দৈর্ঘ্য ১৬ হাজার কিলোমিটার।
চীনের সামাজিক শিল্পবিজ্ঞান কমিটির ভাইস-প্রেসিডেন্ট লি ইউয়ান হু বলেন, আন্তঃদেশীয় শিল্প হলো সাংস্কৃতিক শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ শক্তি। 'এক অঞ্চল, এক পথ' বরাবর দেশগুলোর সংস্কৃতি ও ধর্মে ভিন্নতা রয়েছে। এ সাংস্কৃতিক বিনিময় বাড়লেই কেবল সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর জনগণের আস্থা ও পারস্পরিক মনোভাব জোরদার করা সম্ভব হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
চতুর্থ খবর : ফেসবুকে সমালোচনা করায় পিটিয়ে হত্যা
সামাজিক সাইট ফেসবুকে এক খেলোয়াড়ের সমালোচনা করায় আজারবাইজানে একজন সাংবাদিককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
১১ আগষ্ট শনিবার রাতে ছয় দুর্বৃত্ত সাংবাদিককে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করেন। পরে হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় রোববার ভোরে ওই সাংবাদিক মারা যান।
নিহত ওই সাংবাদিকের নাম রাসিম আলিয়েভ। তিনি স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
যুক্তরাজ্যের প্রখ্যাত দ্য গার্ডিয়ান মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানায়, মারা যাওয়ার আগে সাংবাদিক রাসিম আলিয়েভ হাসপাতালে একটি সাক্ষাত্কার দিয়েছেন।
সেই সাক্ষাত্কারে তিনি বলেছেন, ফেসবুকে সমালোচনা করার পর ওই খেলোয়াড় তাকে চা খাওয়ার আমন্ত্রণ জানান। এরপর তিনি নির্দিষ্ট স্থানে গেলে ছয়জন দুর্বৃত্ত তাকে বেদম মারপিট করে। এতে তিনি মারাত্মক আহত হন।
এদিকে, সাংবাদিক রাসিম আলিয়েভের মৃত্যুর পর তার সহকর্মী সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, আলিয়েভের মৃত্যুর কারণে দেশে চরম অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।
সাংবাদিক আলিয়েভ স্থানীয় ফুটবল খেলোয়াড় জাভিদ হুসেনভের সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দেন। তিনি জাভিদের সমালোচনা করে লেখেন, নিজের দেশকে অসম্মানজনকভাবে উপস্থাপন করা কারোরই উচিত নয়।
মূলত, ফুটবল খেলোয়াড় জাভিদ হুসেনভ স্থানীয় ক্লাব 'গাবালা' এবং জাতীয় দলে খেলে থাকেন। কিন্তু সাইপ্রাসে ইউরোপা লিগ ম্যাচে জাভিদ গ্রিক সাংবাদিকের সামনে তুরস্কের জাতীয় পতাকা নাড়েন। এ সময় ওই সাংবাদিক তার কাছে জানতে চান, কেন তিনি এ কাজ করলেন!
এরপরই সাংবাদিক আলিয়েভ ফেসবুকে জাভিদ সম্পর্কে এ মন্তব্য করেন।
এদিকে, ফেসবুকে এ ধরনের পোস্ট দেখে খেলোয়াড় জাভিদ এবং তার আত্মীয়-স্বজন আলিয়েভকে বার বার ফোন দিয়ে জানতে চান, কেন তিনি এ ধরনের কথা লিখেছেন। এক পর্যায়ে তাকে ফোন দিয়ে ঘটনার মীমাংসা করতে চান জাভিদ এবং তাকে চা খাওয়ার দাওয়াতও দেন। এরপর নির্দিষ্ট স্থানে যাওয়া মাত্রই ছয়জন দুর্বৃত্ত আলিয়েভকে মারপিট শুরু করেন।
তবে অভিযোগ সম্পর্কে জাভিদ হুসেনভ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এ ঘটনার পর ক্লাব থেকে জাভিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি খেলতে পারবেন না।
রাসিম আলিয়েভ ইনস্টিটিউট ফর রিপোর্টার্স ফ্রিডম অ্যান্ড সেফটির (আইএফআরএস) একজন সাংবাদিক হিসেবে কাজ করতেন। আগস্ট ১১, ২০১৫
শ্রোতা বন্ধুরা, আলাপে আলাপে অনেক সময় চলে গেলো। এবার বিদায়ের পালা। যাবার আগে বলি, 'চলতি প্রসঙ্গ' অনুষ্ঠানটি আপনাদের কেমন লাগেছে জানাবেন। আপনারা আপনাদের যে কোনো মতামত জানাতে পারেন, লিখতে পারেন চিঠি। আমাদের লেখার ঠিকানা : ........................।
আজ তাহলে এ পর্যন্তই। ভালো থাকুন বন্ধুরা; কল্যাণে থাকুন। আবার কথা হবে। চাই চিয়েন। (প্রকাশ/মান্না)
0814cp.m4a
|