Web bengali.cri.cn   
গ্রীষ্মকালীন চর্মরোগ প্রতিরোধে যে করণীয়
  2015-07-30 15:36:32  cri



এই গরমে জনজীবন প্রায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে, তাই না ? গরমের দিনগুলোতে সানবার্ন, হিটস্ট্রোকের পাশাপাশি ত্বকের সমস্যাও বেশি থাকে। তাই এ সময় ত্বকের জন্য প্রয়োজন বাড়তি যত্ন। কারণ ত্বক মানবদেহের বৃহত্তম অঙ্গ। শরীরের আবরণ হিসেবে কাজ করে এই ত্বক। তাই ঋতু পরিবর্তনের প্রভাব সবার আগে ত্বকে ফুটে ওঠে। আজকের এ অনুষ্ঠানে আমরা গ্রীষ্মকালীন চর্মরোগ প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে কিছু তথ্য জানিয়ে দিচ্ছি। চলুন তাহলে শোনা যাক আজকের অনুষ্ঠান।

গ্রীষ্মকালে সাধারণত যেসব চর্মরোগে দেখা যায়, সেগুলো হলো:

পাঁচড়া: শিশুদের মধ্যে পাঁচড়া রোগ বেশি দেখা যায়। এ রোগে আক্রান্ত হলে আঙ্গুলের মাঝখানে, কব্জিতে, কোমরের চারদিকে, যৌনাঙ্গের আশেপাশে, শরীরের অন্যান্য অংশেও ছোট ছোট ফুসকুড়ি দেখা যায়। আক্রান্ত স্থানে সবসময় চুলকানির ভাব অনুভূতি হয়, না চুলকিয়ে থাকা যায় না, চুলকাতে চুলকাতে চামড়া উঠে যায়, ফুসকুড়ি গুলোতে পানি জমে, পুনরায় চুলকালে পুঁজ ছড়িয়ে পড়ে ও চুলকানি অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে যায়। কখনও কখনও ব্যথায় শরীরে জ্বর আসে।

ছুলিঃ এটিও একটি ছত্রাকজনিত চর্মরোগ। ছত্রাকের যে জীবাণু দিয়ে এ রোগটি হয় তার নাম ম্যালাছাজিয়া ফার ফার। গরমকালে এ রোগটি হয় এবং শীতকাল এলে এমনিতেই যেন মিলিয়ে যায়। গরমকালে এই রোগ হওয়ার কারণ হলো, ত্বক ঘামে ভেজা থাকে ফলে ভেজা স্থানে এই রোগের জীবাণুর আক্রমণ ঘটে। এ রোগে আক্রান্ত স্থানে হালকা, বাদামি, সাদা গোলাকৃতির দাগ হতে দেখা যায়। সাধারণত বুক, গলার দু'পার্শ্ব, ঘাড়ের পেছন দিক, পিঠের ওপরের অংশ, বগলের নিচে, এমনকি সারা শরীরেও হয়ে থাকতে পারে। এ রোগে আক্রান্ত ত্বক দেখতে সাদা হয় তাই অনেকে আবার একে শ্বেতি বলেও ভাবতে শুরু করে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শ্বেতির সাথে এর কোনোই সম্পর্ক নেই।

দাদ: শরীরের যে কোন জায়গা ফাঙ্গাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে অধিকাংশ ক্ষেত্রে যাকে দাদ বলা হয়। দাদ দেহের যেকোনো স্থানে দেখা দিতে পারে। যে স্থানে দেখা দেয় সেই স্থানটিতে গোলাকার চাকার মতো দাগ দেখা যায়। যার মধ্যখানের চামড়া প্রায় স্বাভাবিক আকারে দেখতে হলেও দাগের পরিধিতে ছোট ছোট গোটা দেখা যায় এবং দাগের পরিধি উঁচু বিভক্তি লাইন আকারে লক্ষ্য করা যায়। চুলকালে সেখান থেকে কষ ঝরতে থাকে। শরীরের যে কোনো স্থানে এর আক্রমণ ঘটতে পারে। তবে দেখা গেছে, সাধারণত তলপেট, পেট, কোমড়, পাছা, পিঠ, মাথা, কুচকি ইত্যাদি স্থানে এর আক্রমণ বেশি ঘটতে দেখা যায়।

ঘামাচিঃ গরমকালের আর একটি বিব্রতকর সমস্যা হলো ঘামাচি। এটি গরমকালেই হয়। শীত এলে আপনা আপনিই ভালো হয়ে যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এই রোগটির নাম হলো মিলিয়ারিয়া। এটি একটি ঘর্মগ্রন্থির রোগ। ঘর্মগ্রন্থির নালী অতিরিক্ত আর্দ্রতা আর গরমে বন্ধ হয়ে এই রোগের সৃষ্টি করে। তবে অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল থাকলে এ রোগটি থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। যেমন ধরুন কোনো ব্যক্তি যদি ঘরে, অফিসে এবং গাড়িতে এয়ারকুলার ব্যবহার করেন তবে বলা যায়, তার এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা গরমকালেও নেই। যারা তা পারেন না তাদের সব সময়ই ঠাণ্ডা পরিবেশে থাকতে হবে। অর্থাৎ একটি ফ্যান অন্তত সার্বক্ষণিকভাবে মাথার ওপরে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। খোলামেলা অর্থাৎ আবদ্ধ ঘর না হওয়াই বাঞ্ছনীয়। গ্রীষ্মকালে দেহ থেকে প্রচুর পরিমাণে ঘাম নিঃসরণ হতে থাকে ফলে তখনকার এত বেশি পরিমাণ নিঃসরণ ঘর্মগ্রন্থির নালীকে ফুটো করে ত্বকের নিচে এসে জমা হতে থাকে, যা পানিভর্তি ছোট ছোট দানার আকারে ফুলে উঠতে দেখা যায় এবং যা চুলকায় এবং তাতে সামান্য জ্বালাপোড়া ভাবও থাকে। মূলত এটাই হচ্ছে ঘামাচি।

চর্মরোগ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে যে করণীয়:

পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাপড় চোপড় পরতে হবে। ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। প্রতিদিন অল্প গরম পানি দিয়ে গোসল করতে হবে। চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিত্সা করাতে হবে।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040