Web bengali.cri.cn   
কুয়াং চৌ বন্দর
  2015-07-29 19:51:35  cri


দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও পারস্য উপসাগরের দেশগুলের সাথে চীনের বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ে দক্ষিণ চীনের কুয়াং চৌ বন্দর প্রাচীন কাল থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রাচীন সামুদ্রিক রেশমপথের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল কুয়াং চৌ বন্দর । সম্প্রতি চীন সরকার ২১ শতকের সামুদ্রিক রেশমপথ ধারণা উপস্থাপন করার পর কুয়াং চৌ-এর গুরুত্ব আরও বেড়ে গেছে। আজকের অনুষ্ঠানের শুরুতে আমরা কুয়াং চৌ বন্দর সম্পর্কে আপনার খানিকটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব।

কুয়াং চৌ বন্দর কোম্পানির প্রশাসনে চু চিয়াং নদীর দু'পারে আছে নেইকাং, হুয়া ফু, সিন সা ও নান সা—এই চারটি বন্দর। ২১ শতকের সামুদ্রিক রেশমপথ প্রস্তাব এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সাথে সমন্বয় করার জন্য চারটা বন্দরই নিজ নিজ নতুন পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নের কাজও শুরু করেছে। নান সা বন্দর চলতি বছর ৭টি নতুন রুট খুলেছে। কুয়াং চৌ বন্দর কোম্পানির ভাইস মহাব্যবস্থাপক সুং সিয়াও মিং বললেন, "'এক অঞ্চল, এক পথ'-সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর বিভিন্ন স্পট থেকে নান সা বন্দর পর্যন্ত নতুন ৭টি রুট খোলা হয়েছে। আসলে আগে নান সা বন্দরের মূল রুট ছিল আফ্রিকার সাথে। নতুন ৭টি রুটের একটি জাপান, দু'টি ফিলিপিন্স, দুটি মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুর ও একটি আফ্রিকার সাথে নান সা-কে যুক্ত করেছে।"

পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত কুয়াং চৌর চারটি বন্দরের ১৪৭টি রুট ছিল। এগুলোর মধ্যে বৈদেশিক বাণিজ্যসংশ্লিষ্ট রুট ৫৯টি। এসব রুট ব্যবহার করে ইউরোপ, আমেরিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও অষ্ট্রেলিয়ায় যাওয়া যায়।

কুয়াং চৌ নৌ পরিবহন বিনিময়কেন্দ্রের প্রধান ছেন সি ইউয়ং বললেন, মাল বোঝাই ও খালাসের দিক দিয়ে কুয়াং চৌ বন্দর চীনের চতুর্থ এবং বিশ্বের পঞ্চম স্থানে রয়েছে। প্রতি বছর ৫০ কোটি টন পণ্য কুয়াং চৌ বন্দরের মাধ্যমে রপ্তানি ও আমদানি করা হয়।'

চু চিয়াং নদীর বদ্বীপ অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ একটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যবন্দর হিসেবে কুয়াং চৌ বন্দরের মাল হ্যান্ডলিং ক্ষমতা অনেক ভাল। গত বছরের শেষ নাগাদ পর্যন্ত কুয়াং চৌ বন্দরে ৮৪৯টি নোঙ্গরস্থান ছিল, যেগুলোর মধ্যে ৬৮টিতে দশ হাজার টন বা তার বেশি মাল হ্যাল্ডলিং করতে পারে। নান সা বন্দর থেকে চু চিয়াং নদীর মোহনা পর্যন্ত পানির গভীরতাও ১৭ মিটার, যার ফলে এ বন্দরে বিশ্বের সবচে বড় জাহাজও প্রবেশ করতে পারে।

২ হাজার বছর বয়সী কুয়াং চৌ বন্দর একটি সমৃদ্ধ বড় বন্দর। তবে এ বন্দরের দুর্বতাও আছে। কুয়াং চৌ নৌ-পরিবহন বিনিময়কেন্দ্রের প্রধান ছেন সি ইউয়ং বললেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে বন্দরটি এখনো পিছিয়ে আছে। তিনি জানালেন, এক্ষেত্রে গ্যাপ পূরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। বন্দরটিকে একটি আন্তর্জাতিক মানের বন্দরে পরিণত করতে সম্ভাব্য সবকিছু করা হবে।

লন্ডন ও হংকংয়ের মত আন্তর্জাতিক বন্দরগুলোর মানে পৌঁছাতে পারবে কি এ বন্দর? কুয়াং চৌ বন্দর কোম্পানির ভাইস মহাব্যবস্থাপক সুং সিয়াও মিং এ প্রসঙ্গে বলেন, "প্রতিটি বন্দরের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য আছে। লন্ডন ও নিউয়র্ক বন্দর বেশি মাল হ্যান্ডলিং করে না। নিউইয়র্ক বন্দরের মাল বোঝাই ও খালাসের পরিমাণ প্রায় ৫০ লাখ টন এবং লন্ডনের ২০ লাখ টন। তবে এ দুই বন্দরে অন্য অনেক কর্মকাণ্ড হয়, যার ফলে এগুলো আন্তর্জাতিক মানের বন্দরে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে হংকং ও সিঙ্গাপুর বন্দরে স্থানীয় মাল বেশি হ্যান্ডলিং করা হয় না, তবে বিশ্বের অনেক পণ্য এ দু'বন্দরের মাধ্যমে স্থানান্তরিত হয়। এ দু'বন্দর মধ্যবর্তী একটি বন্দর হিসেবে কাজ করে। কুয়াং চৌ নান সা বন্দর অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক—এ দু'খাতেই সেবা দেয়। ফলে এ বন্দরের ভূমিকা খানিকটা ভিন্ন।" কুয়াং চৌ বন্দর কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদি কর্ম-পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। পরিকল্পনা অনুসারে, ২০৩০ সাল নাগাদ কুয়াং চৌতে পাওয়া যাবে আধুনিক নৌ-পরিবহন সেবা।(শিশির)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040