0712jiankang
|
বৃক্ক (ইংরেজি: Kidney) প্রাণী দেহের এক জোড়া বীন সদৃশ অঙ্গ বিশেষ, যা উদরের পিছনের দিকে অবস্থিত, এবং যা মূত্র উত্পাদন করে ও বের করে দেয়। পাশাপাশি কিডনি শরীরের পানি ও ইলেকট্রলাইট (সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ইত্যাদি) এর ভারসাম্য বজায় রাখে ও অন্তক্ষরা গ্রন্থি হিসাবে কাজ করে। বৃক্কের অবস্থান পেরিটোনিয়ামের পিছনে। দুটি কিডনি পিঠের দিকের প্রাচীরের কাছে মেরুদন্ডের ঠিক পাশেই দু'দিকে বক্ষদেশীয় কশেরুকার (t12) অঞ্চল থেকে শুরু হয়ে তৃতীয় কশেরুকা (L3) পর্যন্ত অবস্থান করে। ডান বৃক্ক বাম বৃক্ক অপেক্ষা সামান্য নীচে থাকে। ডান বৃক্ক মধ্যচ্ছদার নীচেই যকৃতের পিছনে এবং বাম বৃক্ক মধ্যচ্ছদার নীচে প্লীহার পিছনে থাকে। বৃক্কের উপরিভাগ ১১তম এবং ১২তম পর্শুকা (RIB) দ্বারা আংশিক আবৃত থাকে। এখানে অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি রয়েছে। সমস্ত বৃক্ক পেরিরেনাল ও প্যারারেনাল ফ্যাট এবং রেনাল পর্দা (Renal Fascia) দ্বারা আবৃত। পুরুষের বৃক্কের ওজন ১২০ থেকে ১৭০ গ্রাম এবং নারীদের ১১৫ থেকে ১৫৫ গ্রাম হয়ে থাকে। সচরাচর বাম বৃক্ক ডান বৃক্ক থেকে সামান্য বড় হয়। সাধারণভাবে, মানুষ একটি কিডনি নিয়েই বেঁচে থাকতে পারে। তাই, একজন সুস্থ মানুষ অন্য আরেকজন মানুষকে প্রয়োজনে একটি কিডনি দান করতে পারে।
পরামর্শ এক: বেশি বেশি পানি পান করুন
আমাদের দেহে বিপাক প্রক্রিয়া থেকে সৃষ্ট বর্জ্য পদার্থ শরীর থেকে বের করে দেওয়ার কাজটি করে মূলত যকৃত বা লিভার ও বৃক্ক বা কিডনি। এর মধ্যে কিডনির গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে শরীরে পানি ও ইলেকট্রলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখা। তো, কিডনিকে কার্যকর রাখতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত পানির। সুতরাং, প্রতিদিন আমাদের বেশি করে পানি পান করার অভ্যাস করতে হবে। যথেষ্ট পানি পান করলে পাথর রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
পরামর্শ দুই: বিয়ার কম খান
বিয়ার অনেকের পছন্দ, কিন্তু, এটিও এক ধরনের ওয়াইন বা মদ। আর মুসলমানদের জন্য যেহেতু মদ্যপান নিষিদ্ধ, তাই আমাদের শ্রোতাদের অধিকাংশই বিয়ার খান না, এ কথা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। কিন্তু তারপরও যাদের অভ্যাস আছে, তাদের জন্য বলছি: বেশি বিয়ার পান করা আমাদের কিডনির জন্য ক্ষতিকর। তাই, যারা বিয়ার পান করেন, তাদের উচিত যতদূর সম্ভব কম বিয়ার খাওয়া। আরেকটি কথা আমি এখানে শ্রোতাদের বলতে চাই। কিডনির সুস্থতা ঝাচাইয়ের প্রাথমিক মাপকাঠি হচ্ছে মুত্র। মুত্র পরীক্ষা করেই কিডনির প্রাথমিক অসুস্থতা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। তাই যদি আপনাদের প্রস্রাবে সমস্যা থাকে, তবে দ্রুত চিকিত্সকের পরামর্শ নিন। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেও কিডনির সমস্যার কথা জানা যায়, তবে ততক্ষণে হয়তো অনেক বেশি ক্ষতি হয়ে যাবে।
পরামর্শ তিন: কিডনি রোগীর কম শাক-সবজি ও ফল খাওয়া উচিত
সাধারণভাবে শাক-সবজি ও ফল যত বেশি খাওয়া যায়, ততই আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। কিন্তু, যারা কিডনির রোগে আক্রান্ত, তাদের উচিত খাওয়ার ব্যাপারে অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করা। শাক-সবজি ও ফলের মধ্যে প্রচুর পটাশিয়াস থাকে। অসুস্থ বা দুর্বল কিডনির জন্য এই পটাশিয়াম ক্ষতিকর। তাই, কিডনি রোগীদের উচিত শাক-সবজি ও ফল কম খাওয়া। এক্ষেত্রে চিকিত্সকের পরামর্শ মেনে চলা উচিত।
পরামর্শ চার: কোমল পানীয়ের পরিবর্তে পানি পান করুন
আপনি কি কোমল পানীয়, এই যেমন ধরুন, কোকা কোলা, পেপসি ইত্যাদি খেতে পছন্দ করেন? হ্যাঁ, অনেকেই কিন্তু দেখা যায়, সারাদিন এ ধরনের কোমল পানীয়ের ওপরই নির্ভর করে। তারা পানি কম খান বা একেবারেই খান না। সমস্যা হচ্ছে, কোনো কোনো কোমল পানীয়তে ক্যাফেইন থাকে, যা আমাদের রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে, উচ্চরক্তচাপ কিডনির জন্য ক্ষতিকর। সুতরাং বিশেষজ্ঞরা কিডনির যত্নে বিভিন্ন কোমল পানীয়র পরিবর্তে যতদূর সম্ভব সাধারণ পানি পানের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
পরামর্শ পাঁচ: কম মাংস খান
আপনি কি মাংস খেতে পছন্দ করেন? বিশেষজ্ঞরা বলেন, একদিনে একজন মানুষের উচিত ৩০০ গ্রামের বেশি মাংস না-খাওয়া। এর বেশি মাংস খেলে শরীরের কিডনির ওপর চাপ পড়ে। আর যদি আপনি কিডনির রোগী হন, তাহলে মাংস খাওয়ার পরিমাণ আপনাকে আরো কমাতে হবে। এ ব্যাপারে চিকিত্সক আপনাকে যথাযথ পরামর্শ দিবেন।
পরামর্শ ছয়: লবণাক্ত খাবার কম খান
লবণ কিডনির বোঝা বাড়িয়ে দেয়। খাবারে থাকা লবণের ৯৫ শতাংশই কিডনির মাধ্যমে বিপাক হয়ে যায়। এর মানে, আপনি যত বেশি লবণ খাবেন, আপনার কিডনিকে তত বেশি কাজ করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রতিদিন একজন মানুষের ৬ গ্রামের বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়। আসলে, আমাদের উচিত প্রতিদিন লবণ গ্রহণের পরিমাণ ৩ থেকে ৫ গ্রামের মধ্যে সীমিত রাখা। আরেকটি কথা বলতে চাই যে, ইনস্ট্যান্ট নুডুলসের মধ্যে লবণের পরিমাণ বেশি থাকে; তাই তা আমাদের কম খাওয়া উচিত।
(ওয়াং হাইমান/আলিম)