Web bengali.cri.cn   
গ্রীষ্মকালীন রোগ- হিট স্ট্রোক
  2015-07-09 15:57:52  cri


প্রচণ্ড গরম পড়ছে। তীব্র গরমে সকলের প্রাণ প্রায় ওষ্ঠাগত। ভারত ও পাকিস্তান ইতোমধ্যেই প্রচণ্ড গরমে হাজারেরও বেশি লোক মারা গেছে। প্রচণ্ড গরমে নানা রোগ, যেমন হিট স্ট্রোক, সান র্বানে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। অতিরিক্ত গরমে দিনে কিভাবে নিজেকে সুরক্ষা করতে পারেন, আজ থেকে হাল শৈলীর পরবর্তী কয়েকটি অনুষ্ঠানে আমরা সে সম্পর্কে জানিয়ে দেবো। সুপ্রিয় শ্রোতা, আজ আমরা গ্রীষ্মকালীন রোগ- হিট স্ট্রোক সম্পর্কে জানাবো। চলুন শোনা যাক আজকের অনুষ্ঠান।

অনেকে জিজ্ঞাস করতে পারেন যে, হিট স্ট্রোক কি? হিট স্ট্রোক হচ্ছে দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে সৃষ্টি হওয়া এক ধরনের শারীরিক সমস্যা। মানুষের দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট। যদি এটি ১০৪ ফারেনহাইটের বেশি হলে তখন হিট স্ট্রোকের আশঙ্কা তৈরি হয়। হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে তাত্ক্ষণিকভাবে চিকিত্সা না দেয়া হলে রোগী মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়তে পারে।

হিট স্ট্রোকের কারণ:

পানিশূন্যতা হিট স্ট্রোকের প্রধান কারণ। হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে প্রচণ্ড গরমে দেহে পানির পরিমাণ কমে গিয়ে যেন পানিশূন্যতা তৈরি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত। বেশি গরমে শারীরিক পরিশ্রমের কাজে না জড়ানো ভালো।

কারা হিট স্ট্রোকে সহজে আক্রান্ত হয়?

ছোট বাচ্চা, বয়স্ক লোক, রোদে ভারি কাজ করেন যারা হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা তাদের খুবই বেশি। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এটি খুবই বিপদজনক। বাচ্চাদের শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ করার পদ্ধতি উন্নত হয়নি বলে তাদের হিট স্ট্রোকের আশঙ্কা বেশি থাকে। পার্ক করা গাড়ির ভেতর অসাবধানে বাচ্চাকে রেখে দিয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। বিশ্বে এমন ঘটনাও কিন্তু কম নয়।

রোদের মধ্যে পার্ক করা অবস্থায় গাড়ির ভেতরের তাপমাত্রা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। সেজন্য যাই হোক না কেনো, আপনি যতো কাছে বা দূরেই যান না কেনো, বাচ্চাকে সঙ্গে নিয়ে যান, গাড়ির মধ্যে রেখে যাবেন না। বৃদ্ধদেরও তাপ নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সিস্টেম দুর্বল হয়ে যায়। সেজন্য তারা সহজে হিক স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়।

এ পর্যায়ে অনেকে হয়ত জিজ্ঞাস করবেন? কিভাবে জানবেন যে, কখন হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলেন ! সুপ্রিয় শ্রোতা, আপনার যদি মাথা ঝিম ঝিম করে, বমি বমি ভাব হয়, অবসাদ, দুর্বলতা, মাথা ব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা সহ বেশ কয়েকটি লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে আপনার সতর্ক হওয়া উচিত। এ সময় আপনি ছায়ায় বা ঠাণ্ডা জায়গায় একটু বিশ্রাম নিতে পারেন এবং পানি পান করতে পারেন। সঠিক সময় সঠিক কাজটি করলে এ লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে। বেশ কয়েক বার এসব লক্ষণ দেখা গেলে অবশ্যই চিকিত্সকের কাছে যেতে দ্বিধা করবেন না। বন্ধুরা এ লক্ষণগুলোর কথা আমি আবারো বলছি। শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, দেহের তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেশি হওয়া, ঘাম না হওয়া, চামড়া অতিরিক্ত লাল হয়ে যাওয়া, অশান্ত বোধ করা এবং খিঁচুনি হওয়া ইত্যাদি।

হিট স্ট্রোক আক্রান্ত হলে তাড়াতাড়ি চিকিত্সার ব্যবস্থা নিতে হয়। হিট স্ট্রোকে আক্রান্তদের ছায়া বা ঠাণ্ডা স্থানে নিয়ে আসুন, গায়ের কাপড় খুলে দিন। যদি আক্রান্ত লোকটি পানি খাওয়ার মতো অবস্থায় থাকে তাহলে তাকে ঠাণ্ডা পানি বা অন্য কোনো পানীয় পান করতে দিন।

হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয়

গরমের সময় দেহকে পানিশূন্যতা হতে না দেওয়া উচিত। আপনার উচিত প্রতিদিন অল্প গরম পানি পান করা। এতে আপনার শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ ঘাম বের হবে এবং দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকবে। যারা ভারি ব্যায়াম করছেন তাদের উচিত প্রতি ঘণ্টায় অন্তত দুই থেকে চার গ্লাস অল্প গরম পানি পান করা।

খুব গরমের সময় বেশি পরিশ্রম করবেন না

দিনের বেলা ব্যায়াম বা অতিরিক্ত পরিশ্রমের কোনো কাজ করবেন না। আর যদি করতেই হয় তাহলে বিরতি নিন এবং প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল পদার্থ পান করুন।

হালকা জামা-কাপড় পরুন

অতিরিক্ত জামা-কাপড় বা ভারি পোশাক পরলে আপনার দেহ তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এতে হিট স্ট্রোকের আশঙ্কা বেড়ে যায়।

হিট স্ট্রোকের অনুভূত হলে ডাক্তারের কাছে যান বা অ্যাম্বুলেন্স ডাকুন। আপনার যদি দেহের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া, ঝিমুনি ও বমি বমি ভাব হয়, তাহলে দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যান।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040