0509muktarkotha
|
প্রিয় বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানের শুরুতে আমি আপনাদেরকে তিব্বতের একজন সহকারী মেয়ে-শিক্ষকের গল্প বলবো।
২৩ বছর বয়সী ওয়াং বিইয়ান চীনের বিশ্ববিখ্যাত্ ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি ও সমাজ বিজ্ঞান একাডেমির চীনা ভাষা সাহিত্য বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ২০১৪ সালে তিনি ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম সহায়ক গ্রুপের সদস্য হিসেবে তিব্বত সামরিক অঞ্চলের লাসা বাই স্কুলে এসে তাঁর সহকারী শিক্ষিকার জীবন শুরু করেন।
তাঁর অধিকাংশ সহকর্মী পেইচিং, শাংহাই ও কুয়াংচৌসহ বিভিন্ন বড় শহরে কাজ করেন। কিন্তু ওয়াং বিইয়ান সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪ হাজার মিটার উঁচুতে অবস্থিত তিব্বতে এসেছেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,
(রে ১)
'সহকারী শিক্ষকের কাজ করা ছিল আমার বরাবরের স্বপ্ন। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে অনেক গ্রামে সহকারী শিক্ষক পদে কাজ করার সুযোগ ছিল। কিন্তু তখন আমার কোনো সময় ছিল নি। তাই এবার যখন সুযোগ পেলাম, লুফে নিলাম। এ ছাড়া আমার তিব্বতী বৌদ্ধ ধর্মের ব্যাপারে আগ্রহ রয়েছে। আমার মনে তিব্বত হল একটি রহস্যময় জায়গা। আমি এর আগে কখনো এখানে আসিনি।'
প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ওয়াং বিইয়ান শিক্ষক হবার যোগ্যতা নিয়ে স্বপ্নের জায়গা তিব্বতে এসেছেন। কিন্তু তিব্বতে বেশি ঠান্ডা ও হায়পক্সিয়া। তাই তাকে প্রতিনিয়ত শারিরীক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। রাতে তার ভালো ঘুম হয় না। নিজের পরিবার ও বন্ধুদের তিনি মিস করেন। এ জন্য তিনি কাজের মধ্যে ডুবে থাকতে পছন্দ করেন। তিব্বতে এক বছর তিনি সবসময় একাকী বোধ করেছেন এবং মাঝেমাঝে অসুস্থতায় ভুগেছেন। কিন্তু তিনি কখনো অনুতাপ করেননি। তিনি বলেন,
(রে ২)
'আমি আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও আমার নিজের জ্ঞান যেখানে প্রয়োজন সেখানে আসতে চেয়েছিলাম।'
হ্যাঁ! এটিই হল ওয়াং বিইয়ানের স্বপ্ন। তিব্বত সামরিক অঞ্চলের লাসা বাই স্কুলে আসার পর তিনি প্রথমে সাতটি নাচে ক্লাশ নেন। পরে প্রতি সপ্তাহে ২৪টি ক্লাস নিতে হতো। তাঁর অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী হল তিব্বতী জাতির। ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে তার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। চমত্কার কাজের জন্য তিনি পঞ্চম শ্রেণীর এক ক্লাসের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পান। তিনি মনে করেন, একজন প্রধান শিক্ষক হিসেবে তাঁর আরো বেশি দায়িত্ব পালন করা উচিত। তিনি সারা দিনরাত ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে থাকেন। এ জন্যই তিনি একজন সফল শিক্ষক। তিনি বলেন,
(রে ৩)
'তিব্বতে শিক্ষকের কাজ শুরু করার পর আমি স্কুলে সবচেয়ে বেশি ছাত্রছাত্রীকে শিখিয়েছি। প্রাথমিক বিভাগের ও মধ্য বিভাগের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সকল ছাত্রছাত্রীকে আমি চিনি। প্রতিদিন ছাত্রছাত্রীদেরকে দেখে আমি মনে করি এটি আমার বিরাট সংসার। এ সব ছাত্রছাত্রী আমাকে সালাম দেয়। আমি মনে করি, যদি ভবিষ্যতে আমি শিক্ষকতা না-ও করি, এখানকার অভিজ্ঞতা আমার আজীবন ধন হবে। এ ধরণের খুশি শিক্ষক না হলে অনুভব করা যায় না।'
ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম সহায়ক দল তরুণ-তরুণীদের নিয়ে গঠিত একটি দল। তারা তিব্বত, ছিংহাই ও কানসু প্রদেশে শিক্ষা-সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। ওয়াং বিইয়ান বলেন, অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীর মাতাপিতা সবসময় ব্যস্ত থাকেন। সেজন্য আমাদের উচিত তাঁদেরকে আরো সময় দেওয়া। এরই মধ্যে তিনি শিক্ষকতায় যথেষ্ট অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন।
তিনি জানান, তিব্বতের পরিস্কার আকাশ ও সাদা সুন্দর মেঘের নিচে প্রতিদিন তার মন ভাল থাকে। তিনি মনে করেন, তরুণ হিসেবে আরো বেশি অভিজ্ঞতা অর্জন করা উচিত। যত অভিজ্ঞতা অর্জন করা যাবে, ততই ভালো।
গান
বন্ধুরা, শুনছিলেন তিব্বতে শিক্ষা-সহায়কদলের তরুণী সদস্য ওয়াং বিইয়ানের গল্প। এবার আপনাদের চিঠিপত্র নিয়ে বসবার পালা।
প্রিয় শ্রোতা, এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাদের সবাইকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনারা আমাদের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কিছুটা হলেও আনন্দ পেয়ে থাকেন, তাহলে মনে করবো আমাদের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। আপনাদের জন্যই আমাদের সকল প্রচেষ্টা ও আয়োজন। আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং শুনতে থাকুন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান। আমাদের সঙ্গে থাকুন, আমাদের অনুষ্ঠান শুনুন আর আপনার যে-কোনো মতামত বা প্রশ্ন পাঠিয়ে দিন চিঠি বা ই-মেইলের মাধ্যমে। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা হচ্ছে ben@cri.com.cn এবং আমার নিজস্ব ইমেইল ঠিকানা হল caiyue@cri.com.cn। 'মুক্তার কথা' অনুষ্ঠান সম্পর্কিত ইমেইল আমার নিজস্ব ইমেইল ঠিকানায় পাঠালে ভালো হয়। আজ তাহলে এ পর্যন্তই। আশা করি, আগামী সপ্তাহের একই দিনে, একই সময়ে আবার আপনাদের সঙ্গে কথা হবে। ততোক্ষণ সবাই ভালো থাকুন, আনন্দে থাকুন। (ছাই/আলিম)