0630minyue
|
ইয়াং লিউ হোং ১৯৬৫ সালে পেইচিংয়ে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮১ সালে তার প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। ১৯৮৮ সালে ভারতবর্ষে অনুষ্ঠিত এশীয় কবি সম্মেলনে সর্বকনিষ্ঠ কবি হয়ে গোগদান করেন। প্রথম প্রকাশিত কবিতার বইয়ের নাম 'সাদা বালির দ্বীপ'। ভারতের সুবিখ্যাত কবি নবনীতা দেব সেন ২০০৫ সালে তাঁর কবিতাগুলো বাংলা ভাষায় অনুবাদ করে 'অষ্টমী' নামক কবিতার বই প্রকাশ করেছেন। শুনুন নবনীতা দেব সেনের অনুবাদে ইয়াং লিউ হোং-এর কয়েকটি কবিতা।
১. জ্যোত্স্না
সবাই বলে, সমুদ্র নাকি বরফ হয়ে যায় না
কিন্তু মাঝে মাঝে
সমুদ্র হিম ঠাণ্ডা হয়ে যায়
কেবল যখন জ্যোত্স্না পরতে পরতে খুলে যায়
তখনই হৃদয়ে শান্তি
হৃদয় এখনই শান্ত
ওই ভিজে ভিজে ভাবনারা
আন্তে গড়িয়ে যায় ঢেউ খেলে বালুকা বেলায়
ফিরেই আসতে চায় না
কেবল জমির বুকে
আলতো আদরে
প্রণয়ের চিহ্ন এঁকে রেখে
নক্ষত্রেরা
কাঁদে
২. আমাকে কেবলই তুমি প্রশ্ন করো
আমাকে কেবলই তুমি প্রশ্ন করো
প্রেমের কবিতা কেন লেখো না?
প্রেমই তো একটা কবিতা
কিন্তু সরল নয় একদম
তুমি চেয়ে থাকো আমার দিকে আকুলতায় উষ্ণতায়
কিন্তু আমি সব সময়ে চোখ ফিরিয়ে নিই
জানলার বাইরে
ওইখানে, ওইখানে দুটো লতা রয়েছে
পরস্পর সন্নিবদ্ধ, বেণীবাঁধা
তুমি একটি থেকে অন্যটাকে আলাদা করতে পারবে না।
৩. লক্ষ্মীটি উড়ে যাও
এই বৃষ্টিতে, আমি একটি ছোট্ট পাখি কুড়িয়ে পেলাম
আর তাকে উড়তে শেখালাম
লক্ষ্মীটি, উড়ে যাও
লক্ষ্মীটি, উড়ে যাও
এখন তুমি অরণ্যের পুত্র
এখন তোমার ডানা আকাশের সম্পত্তি
লক্ষ্মীটি, উড়ে যাও
লক্ষ্মীটি, উড়ে যাও
আমি শুধু একটিবার তোমার নীল শিস শুনতে চাই
আর একটা ঝরা পালক
মনে রেখো বারান্দাটা
বাদাম পাতায় ঢাকা
আর আগুনের মতো ডালিম
আমি আশা করব তুমি আসবে
তুমি আসবে আমার জন্মদিনের অতিথি হয়ে
৪. শুকনো একটি প্রজাপতিকে
তুই নিজে আর উড়িস না
কিন্তু তুই পুরুষদের ওড়াবি স্বপ্নের আমন্ত্রণে
তুই আর স্বপ্ন দেখিস না
কিন্তু গ্রীষ্মের স্মৃতিকে পাহারা দিচ্ছিস তুই
তোর নিজস্ব স্মৃতি নেই আর
কিন্তু তুই শাশ্বত করিস যা কিছুর অস্তিত্ব পৃথিবীতে
হাজার বছর পরে
কেউ যখন তোকে দেখবে
সে ঠিকই বুঝতে পারবে
কী ছিল তোর স্মৃতি, তোর স্বপ্ন।
৫. প্রথম তুষার
অবশেষে তুষার পাত
সেই ভগ্ন প্রাসাদ
তুষারের উষ্ণতার অনুভবে
আবার মেলে ধরছে তার ঐশ্বর্য
তার দিকে পিঠ ফিরিয়ে
আমরা গেলাম বনের দিকে
আস্তে চার সারি পদচিহ্ন বুনে রেখে
আমাদের পায়ের কাছে গড়ে উঠলো এক পর্বতশ্রেণী
যখন পতিত সূর্যটাকে একপাশে ঠেলে দেয়া হয়
আমি তোমাকে চুম্বন করেছিলাম
উনিশবছর অপেক্ষা করেছিলাম
কি জানি
এখনও অপেক্ষায়
আবার যদি তুষারবিহীন শীতকাল আসে
কী হবে ওই এবড়ো খেবড়ো জমির-
ওটা কি পোড়ো হয়ে যাবে?
দুটো শস্যের বীজ
এখনই আমার হাতে অঙ্কুরিত হয়েছে
যতক্ষণ না আমি তাদের দিচ্ছি-
তখনও অপূর্ণ এই তুষার
সুপ্রিয় শ্রোতা, আশা করি এ কয়েকটি সুর ও কবিতা শুনে আপনার শরীর ও মন চাপ থেকে একটু মুক্তি পাবে। আজকের সুরের ধারা অনুষ্ঠান এ পর্যন্ত। সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ্য থাকুন। (স্বর্ণা/মান্না)