0628jiankang
|
আমরা চেয়ারে বসার সময় এক ধরনের ব্যাক সাপোর্ট ব্যবহার করি। বিশেষ করে যাদের পিঠে ব্যথা হয় বা ঘাড়ে ব্যথা আছে, তারা এ ধরনের সাপোর্ট ব্যবহার করেন। এতে কোনো সমস্যা নেই। বরং এর উপকারিতা আছে। কিন্তু বিছানায় এ ধরনের ব্যাক সাপোর্ট, তা সে পিঠের জন্য হোক বা ঘাড়ের জন্য, ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বিছানায় বালিশ ব্যবহার করাই স্বাস্থ্যসম্মত। ঘাড়ের সাপোর্টের জন্য আলাদাভাবে কিছু ব্যবহার করা ক্ষতিকর।
অনেকেই জানতে চান, বালিশের উচ্চতা কতো হওয়া উচিত? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বালিশের উচ্চতা ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি বা ১০ থেকে ১২ সেন্টিমিটারের মধ্যে রাখা উচিত। এর থেকে কমবেশি না-হওয়াই ভালো। আরেকটি কথা। বিছানায় যত কম জিনিসপত্র থাকে, তত ভালো। বিছানায় অতিরিক্ত জিনিস থাকলে তা মনের ওপর চাপ ফেলে। বিছানাকে শুধু আপনার শরীরের জন্যই নির্ধারিত রাখুন।
সকালে ঘুম থেকে উঠতে আমাদের অনেকের সমস্যা হয়। তাই আমরা অ্যালার্ম ঘড়ি ব্যবহার করি। আসলে অ্যালার্ম ঘড়ি বা মোবাইলে অ্যালার্ম ব্যবহার করা দোষের নয়। প্রশ্ন হচ্ছে: আপনি ঘড়ি বা মোবাইল আপনার বিছানায় রাখেন কি? বা বিছানায় না-রাখলে, কতোটা দূরে রাখেন? হ্যা, অ্যালার্ম ঘড়ি বা মোবাইলে অ্যালার্মের সময় ঠিক করে অবশ্যই বিছানায় বা মাথার কাছে রাখবেন না—যেটা অনেকেই করেন; রাখবেন বিছানা থেকে অন্তত ৬ ফুট বা ১.৮ মিটার দূরে। এটাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ। কানের কাছাকাছি হঠাত অ্যালার্ম বেজে উঠলে আপনি আকষ্মিকভাবে ঘুম থেকে উঠে ক্রনিক স্ট্রেসে আক্রান্ত হতে পারেন।
শোবার ঘরে গাছ-পালা রাখবেন না। অনেকে সৌন্দর্যের জন্য শোবার ঘরে টবের মধ্যে বিভিন্ন রঙ-বেরঙের গাছপালা রাখেন। হ্যা, এটা ঠিক যে উদ্ভিদ আমাদের অক্সিজেন দেয় এবং আমাদের পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না যে, উদ্ভিদ রাতে নিজেই অক্সিজেন গ্রহণ করে এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড ছাড়ে। এখন আপনি যদি আপনার শোবার ঘরে টবের মধ্যে গাছপালা রাখেন, তবে সেটি রাতে আপনার ঘরের অক্সিজেনে ভাগ বসাবে। এতে আপনার নিজের অক্সিজেনের অভাব হতে পারে। তখন দেখা যাবে, ঘুম আপনার ক্লান্তি দূর করার পরিবর্তে আপনাকে আরো বেশি ক্লান্ত ও অবসন্ন করে দেবে। তা ছাড়া, টবের মাটিতে সাধারণত এমন সব উপাদান থাকে যা আপনার শ্বাসতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হতে পারে। অতএব শোবার ঘরে 'নো টব, নো গাছপালা'। হ্যা, যদি একান্তই রাখতে চান, তবে ক্যাক্টাস জাতীয় এক-দুটো গাছ রাখতে পারেন আপনার শোবার ঘরে।
রেডিওর মতো ছোট আকারের ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি বিছানা থেকে দূরে রাখুন। এসব যন্ত্র আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর; অন্তত ঘুমের সময়। রেডিও, মোবাইলের চার্জার, মাল্টিপ্লাগ, মশা-প্রতিরোধক যন্ত্র---ছোট হলেও, এগুলো থেকে ক্ষতিকর রশ্মির বিকিরণ কম নয়। এসব যন্ত্রপাতি শোবার ঘরে না-রাখাই ভালো। আর যদি একান্তই রাখতে হয়, তবে বিছানা থেকে অন্তত সাড়ে ৬ ফুট দূরে রাখুন।
টেডি বিয়ারের মতো খেলনা বিছানা থেকে দূরে রাখুন। বাচ্চারা আজকাল টেডি বিয়ারের মতো খেলনা পছন্দ করে। অনেকে সেগুলোকে বুকে জড়িয়ে রাতে ঘুমিয়েও থাকে। মোটা ভেলভেটের তৈরি এসব বিলাসবহুল খেলনা সহজে ধুলাবালি শোষণ করে। এসবের মধ্যে ব্যাকটেরিয়াও লুকিয়ে থাকতে পারে। সুতরাং এ ধরনের খেলনা বিছানায় না-রাখাই উত্তম। বিশেষ করে বাচ্চাদেরকে এধরনের খেলনা জড়িয়ে ঘুমাতে না-দিতেই পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। তবে, যদি কোনো বাচ্চা একেবারেই নাছোড়বান্দা হয়, তবে খেলনাটি ডাস্ট ক্লিনার বা ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে ডাস্টমুক্ত করে নিতে হবে। এটা খুবই জরুরি।
(ওয়াং হাইমান/আলিম)