0617edu
|
সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, পেইচিং থেকে প্রচারিত চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠানে আপনাদেরকে স্বাগতম। সবাইকে আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমাদের নিয়মিত সাপ্তাহিক আয়োজন 'বিদ্যাবার্তা' । আর এ আয়োজনে আপনাদের সঙ্গে রয়েছি সুবর্ণা ও এনামুল হক টুটুল।
শ্রোতাবন্ধুরা, ২০১৫ সাল হলো চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৪০তম বার্ষিকী। ইতিহাস থেকে জানা যায়, প্রাচীনকালে চীনের সন্ন্যাসী ফাসিয়ান, হুয়ানসাং এবং বিশেষ দূত চাং ছিয়াং ও চেংহো সমুদ্র বা স্থলপথে বাংলাদেশ সফর করেন। এছাড়া চীনের তিব্বতে বৌদ্ধধর্ম প্রচার ও সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন বাংলাদেশের বিক্রমপুরের অতীশ দীপঙ্কর। তা থেকে বোঝা যায়, চীন ও বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তা সুদীর্ঘকালের।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের মাধ্যমে বিশ্বের মানচিত্রে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ। আর এর পর থেকেই চীন ও বাংলাদেশের যোগাযোগ,আদান-প্রদান ও সম্পর্ক এক নতুন যুগে প্রবেশ করে।
চীনে বাংলা ভাষার বিস্তার তথা দেশটির হাজার বছরের সাংস্কৃতিক পরিচয় তুলে ধরার জন্য চীনের বাংলা ভাষার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এক কথায় এদের অবদান অবিস্মরণীয়।
চীনের যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয় বা সিইউসি হলো চীনে বাংলা ভাষার প্রতি আগ্রহী শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের এক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান।
আজকের অনুষ্ঠানে আমরা শ্রোতাবন্ধুদের কাছে চীনের যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের কয়েকজন শিক্ষকের পরিচয় তুলে ধরবো। আর একই সঙ্গে তাদের অভিজ্ঞতা ও গল্পের মাধ্যমে চীনে বাংলা ভাষার সামগ্রিক পরিচয় ও উন্নয়ন সম্পর্কে জানবো।
চীনা নাগরিকদের কাছে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বাংলা ভাষা ছড়িয়ে দেবার জন্য যারা স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন ম্যাডাম লিউ আই হাও।
চীনা এই নাগরিক ভারতে জন্মগ্রহণ করেন। নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর ১৯৬৩ সালে তিনি চীনে ফিরে আসেন। এরপর ১৯৬৫ সালে তিনি পেইচিং ব্রডকাস্টিং ইন্সটিটিউটের (বর্তমানে যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়) বাংলা কোর্সে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬৩, ১৯৭৪ ও ২০০০ সালের বাংলা ক্লাসের শিক্ষার্থীদের অধ্যায়নে তিনি তিনবারের মতো বাংলা বিভাগের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য তিনি তার স্বামী মি. লি ইউয়ান শানের সঙ্গে 'বাংলা ভাষার ব্যাকরণ' রচনা করেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,
বাংলা বিভাগে অক্লান্ত পরিশ্রম আর নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে চলেন ম্যাডাম লিউ আই হাও। শিক্ষার্থীরা যাতে খুব সহজেই বাংলা ভাষা শিখতে পারেন এবং বাংলা ভাষার প্রতি আরো বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠেন সেজন্য স্নেহ ও ভালোবাসার স্পর্শ দিয়ে তিনি তাদের যত্ন নেন।
বাংলা ভাষার বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে তিনি বলেন,
চীন ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৪০তম বার্ষিক উপলক্ষে যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রতি আপনার প্রত্যাশা কি?
দু'দেশের আরো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, সাংস্কৃতিক যোগাযোগ ও বিভিন্ন আদান-প্রদান এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে সিইউসি'র বাংলা বিভাগ কি কি ভূমিকা পালন করতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
ম্যাডাম চুং শাও লি পেইচিং ব্রডকাস্টিং ইন্সটিটিউটের বাংলা বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের একজন। ১৯৬৩ সালে তিনি বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। তারপর সেখান থেকে স্নাতক হওয়ার পর তিনি চীন আন্তর্জাতিক বেতারের (সিআরআই) বাংলা বিভাগে যোগ দেন এবং পরে এ বিভাগে পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। সিআরআইয়ের বাংলা অনুষ্ঠান সম্পর্কে তিনি বলেন,
আপনার কাজের অভিজ্ঞতায় চীন ও বাংলাদেশের গভীর উন্নয়ন সম্পর্কে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনা বা মুহূর্ত সম্পর্কে কিছু বলতে পারেন?
সিআরআই থেকে অবসর নেয়ার পর আপনি যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। বাংলা ভাষা অধ্যয়ন সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?
চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৪০তম বার্ষিকী উপলক্ষে দু'দেশের সম্পর্কের আরো গভীর উন্নয়নের প্রতি আপনার প্রত্যাশা কি?
ইউ ছিউ ইয়াং সুসমিতা ২০০০ সালে পেইচিং ব্রডকাস্টিং ইন্সটিটিউটের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। ২০০৪ সালে তিনি স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এবং একই বছর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক হন। ঠিক এই সময় পেইচিং ব্রডকাস্টিং ইন্সটিটিউটের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় চীনা যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয় বা সিইউসি। সিইউসি থেকে স্নাতক হওয়ার পর ইউ ছিউ ইয়াং সুসমিতা ভারত গিয়েও বাংলা ভাষার উপর লেখাপড়া করেন।
আপনার ভারতের লেখাপড়ার অভিজ্ঞতা একটু বলবেন কি?
বাংলা বিভাগের শিক্ষক হিসেবে আপনার অনুভূতি কি?
বাংলা বিভাগের একজন শিক্ষক হিসেবে চীনে বাংলা ভাষার উন্নয়নে আপনার কি কোনো পরিকল্পনা আছে? থাকলে একটু বলবেন কি?
আপনার বিভাগের ২০১৫ সালের স্নাতকদের নিয়ে আপনার অভিজ্ঞতা এবং চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের নতুন বাংলা ক্লাসের ভর্তি কাজ সম্পর্কে একটু বলুন।
বন্ধুরা, আর এরই সঙ্গে শেষ হচ্ছে আমাদের আজকের 'বিদ্যাবার্তা' অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠান সম্পর্কে কোনো মতামত থাকলে আমাদের চিঠি লিখতে ভুলবেন না। আমাদের যোগাযোগ ঠিকানা ben@cri.com.cn, এবং caoyanhua@cri.com.cn
সবাই ভালো থাকুন,সুন্দর থাকুন। থাকুন সুস্থ ও আনন্দে। আগামী সপ্তাহে একই সময় আবার কথা হবে। যাইচিয়ান।(সুবর্ণা/টুটুল)