পেইচিং থেকে প্রচারিত চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠানে আপনাদের স্বাগতম। সবাইকে আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আজকের 'চলতি প্রসঙ্গ' অনুষ্ঠান।
বন্ধুরা, এ অনুষ্ঠানে আপনাদের জন্য তুলে আনা হয়েছে পৃথিবীর নানা প্রান্তে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা।
আর এ আয়োজনে আপনাদের সঙ্গে আছি আমি প্রকাশ এবং আমি আইরীন নিয়াজী মান্না।
প্রকাশ : তাহলে মান্না আপা আজ আমরা কি কি খবর নিয়ে আলোচনা করবো।
মান্না : প্রথম খবরটি আপনার হাতে। চলুন সে খরব নিয়ে আমরা শ্রোতাদের সাথে আলোচনা করি।
প্রকাশ :
প্রথম খবর : চীন-ডেনমার্ক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৬৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে দু'দেশের নেতার অভিনন্দন বাণী
প্রকাশ : ১১ মে ছিলো চীন ও ডেনমার্কের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৬৫তম বার্ষিকী। ঠিকই সেদিনে চীনের প্রেসিডেন্টে সি চিন পিং ও ডেনমার্কের রানী দ্বিতীয় মারগ্রেথ পরস্পরকে অভিনন্দন বাণী পাঠিয়েছেন।
মান্না : হ্যা। অভিনন্দন বার্তায় সি চি পিং বলেন, চীনের সঙ্গে সবচেয়ে আগে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পাশ্চাত্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ডেনমার্ক। কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৬৫ বছরে দু'দেশের সম্পর্কের অনেক উন্নতি হয়েছে ও বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতার সুফল অর্জিত হয়েছে। চীন দু'দেশের অংশীদারিমূলক সম্পর্ককে মূল্যায়ন করে আসছে। দু'দেশের সম্মিলিত চেষ্টার মাধ্যমে দু'দেশের সম্পর্কের আরো উন্নয়ন হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রকাশ : অভিনন্দন বাণীতে ডেনমার্কের রানী দ্বিতীয় মারগ্রেথ বলেন, চীন ও ডেনমার্কের নেতারা ২০১২ ও ২০১৪ সালে সাফল্যের সঙ্গে দু'দেশ রাষ্ট্রীয় সফর করেন। তাতে অনেক ইতিবাচক ফলাফল অর্জিত হয়েছে। চীন-ডেনমার্ক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৬৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে তিনি চীনা জনগণকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান এবং দু'দেশের আরো উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য শুভ কামনা করেন।
মান্না : হ্যা। বাংলাদেশও তাঁদের অভিনন্দন জানান।
প্রকাশ : মান্না আপু খেয়াল করেছেন গত কয়েকদিন ধরে ব্যাপক গরম পরেছে।
দ্বিতীয় খবর : ভারতে তাপদাহে সাড়ে সাতশ'র বেশি মানুষের প্রাণহানি
মান্না : হ্যা প্রকাশ। কাল তো গরমে আমার প্রচন্ড মাথা ব্যাথা ছিলো। পেইচিংয়ের আর কি গরম। ভারতে তাপদাহে সাড়ে সাতশ'র বেশি মানুষ মারা গেছেন। তীব্র তাপদাহে পুড়ছে সারা ভারত। তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রাণহানি। এর মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলীয় অন্ধ্র প্রদেশ ও তেলেঙ্গানা রাজ্যে প্রাণহানির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এসব এলাকায় তাপমাত্রা ৪৮ ছাড়িয়েছে। সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাপদাহে দেশটিতে সাড়ে সাতশ'র বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। শুধু অন্ধ্র প্রদেশেই সাড়ে পাঁচশ' মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। প্রাণহানির সংখ্যায় এরপরই রয়েছে তেলেঙ্গানা রাজ্য।
প্রকাশ : মান্না আপু আমরা জেনেছি, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া শ্রমিকসহ জনসাধারণকে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাইরে কোনো ধরনের কাজে বের না হতে সর্তকতা জারি করেছে অন্ধ্র প্রদেশ ও তেলেঙ্গানা রাজ্য সরকার।
মান্না : হ্যা। জনসাধারণকে অপ্রয়োজনে বাইরে না থাকতে, বেশি বেশি তরল জাতীয় খাবার খেতে ও সানস্ট্রোকের কোনো সম্ভাবনা দেখামাত্র নিকটবর্তী স্থানীয় হাসপাতালে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
তেলেঙ্গানার আদিলাবাদ, নিজামাবাদ, করিমনগর, মেদাক, বারঙ্গল, খাম্মাম, রঙ্গারেড্ডি, হায়দরাবাদ, নালগোনদা ও মাহবুবনগর জেলা থেকে, আর অন্ধ্র প্রদেশের পূর্ব গোড়াবাড়ি, পশ্চিম গোড়াবাড়ি, কৃষ্ণ, গুন্তুর, প্রকাশম, নেলোর, চিত্তর, কাদাপা ও কুর্নুল জেলা থেকে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।
আর অন্ধ্র প্রদেশের নেলোরে, প্রকাশম, বিজয়নগরম, কৃষ্ণা, কাদপা, পশ্চিম গোদাবরি, গুনতুর, বিশখাপত্মম, শ্রিককুলাম ও অনন্তপুর, চিত্তোর ও কুর্নল থেকে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
প্রকাশ : এবার আমরা চীনের দিকে চোখ ফেরাই....।
তৃতীয় খবর : নেপালকে ১৪ কোটি ইউয়ান রেনমিনপি সহায়তা দিয়েছে চীন
প্রকাশ : নেপাল ভূমিকম্প পরবর্তী সময়ে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল ব্যুরো, জেনারেল স্টাফ দফতর, জেনারেল লজিস্টিক্স বিভাগ নেপালকে তিন দফায় মোট ১৪ কোটি ইউয়ান রেনমিনপি পরিমাণ মানবিক সহায়তা দিয়েছে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শেন তান ইয়াং সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
প্রথম দফার ত্রাণে প্রধানত তাঁবুসহ বসবাস সংক্রান্ত উপকরণ পাঠিয়েছে চীন। দ্বিতীয় দফার ত্রাণে চীন পানি বিশুদ্ধকরণ ও জরুরি চিকিত্সা সামগ্রী সরবরাহ করেছে।
মান্না : গত ১২ মে নেপালে পুনরায় ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্পের পর চীন সরকার নেপালকে তৃতীয় দফা সহায়তা দিয়েছে। চীনা আন্তর্জাতিক উদ্ধারকারী দল ৭২ ঘণ্টায় আট জন নেপালিকে উদ্ধার করেছে। চীন সরকারের উদ্ধারকারী দলের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্ধারকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরাও সময় মতো নেপালে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে সহায়তা করেছে।
প্রকাশ : উদ্ধার করার কথা বলতে মনে পড়ে গেলো সম্প্রতি সাগরে ভাসমান দুই শতাধিক যাত্রীকে উদ্ধার করেছে মিয়ানমার।
চতুর্থ খবর : দুই শতাধিক যাত্রীসহ নৌকা উদ্ধার করেছে মায়ানমার
মান্না : সাগরে ভাসমান দুই শতাধিক যাত্রীসহ একটি অভিবাসী নৌকা উদ্ধার করে উপকূলে নিয়ে যাওয়ার দাবি করেছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ।
২১ মে নিজস্ব জলসীমায় টহল দেওয়ার সময় দেশটির নৌবাহিনী ওই অভিবাসীদের উদ্ধার করে বলে জানিয়েছেন দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন প্রদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তিন মাউং সুই।
সুই জানান, নৌকাটিতে দুইশ' আটজন অভিবাসী ছিলেন। এর মধ্যে দুইশ' জন সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা। এরা ভাগ্যান্বেষণে অবৈধপথে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া যেতে চেয়েছিলো।
প্রকাশ : বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার অনুসন্ধান অনুযায়ী, মিয়ানমারের মুয়াংডো দিয়েই হাজার হাজার রোহিঙ্গা বঙ্গপোসাগর দিয়ে দেশত্যাগ করে থাকে।
মুয়াংডোতে অস্থায়ী ক্যাম্পে উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের খাদ্য ও চিকিত্সা সেবা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। সাগরে ভাসমান সহস্রাধিক অভিবাসীদের মধ্যে বাংলাদেশিদের উদ্ধারের পরপরই দেশে ফেরত পাঠানো হবে। তবে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের এক বছরের জন্য অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে উদ্ধারকাজে নেতৃত্ব দেওয়া জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
মান্না : হ্যা, প্রকাশ। সংস্থাটি জানিয়েছে, বর্তমানে আন্দামান সাগরে তিন হাজারেরও বেশি অভিবাসী ভাসমান অবস্থায় মানবেতর দিনযাপণ করছে। এরা তো বেঁচে আছে। আপনি জানেন, মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ডের জঙ্গলে সম্প্রতি বেশ কিছু গণ কবর আবিস্কার হয়েছে। এগুলো এই হতভাগ্য তরুণদের, যারা ভাগ্যান্বেষণে বিদেশ যেতে চেয়েছিলো।
ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, এর আগে তিন হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা অভিবাসী মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে ভিড়েছে। তাদের দেশগুলোর উপকূলীয় এলাকায় অস্থায়ী আশ্রয় ক্যাম্পে রাখা হয়েছে।
এদিকে মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য সেখানে সফরের সিদ্ধান্ত নেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি বৃহস্পতিবার (২১ মে) নাইপিডো পৌঁছান। সেখানে তিনি দেশটির সরকারের প্রতি অভিবাসী সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের সঙ্গে একজোট হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। (প্রকাশ/মান্না)
0529cp.m4a
|