সিং সি ওয়াং অটিজম চিকিত্সাকেন্দ্র
0520
|
ইয়াং ইয়াংয়ের আছে ফর্সা ত্বক, বড় বড় চোখ। দেখতে খুব সুন্দর একটি ছেলে। তবে তার কণ্ঠ সাধারণ মানুষের চেয়ে ভিন্ন। সে অন্য মানুষের সঙ্গে কথা বলে না। ইয়াং ইয়াং অটিজমের রোগী। 'অটিজম' হচ্ছে নিউরোডেভেলপমেণ্টাল ডিজঅর্ডার। অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের সামাজিক দক্ষতা, যোগাযোগ দক্ষতা, শখ ও আচরণ স্বাভাবিক শিশুদের চেয়ে ভিন্ন। কেউ কেউ বলেন, অটিজমে আক্রান্ত শিশু আকাশে তারার মতো; ওদের আলো আছে, তবে তা মৃদু। অনেকে আজকাল অটিজমে আক্রান্ত শিশুকে 'তারকা শিশু' বলে ডাকেন।
এখনো পর্যন্ত অটিজমের কোনো কার্যকর চিকিত্সা আবিস্কৃত হয়নি। অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের বিশেষ যত্ন নিতে হয় এবং তাদের মেধার বিকাশে নিতে হয় বিশেষ পদ্ধতির আশ্রয়।
চীনে অটিজম রোগের প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে। একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, চীনে অটিজম রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ছাড়িয়ে গেছে এবং এর মধ্যে ২০ লাখ ০ থেকে ৪ বছর বয়সী শিশু। অটিজমে আক্রান্তদের যত্ন ও শিক্ষাপদ্ধতি দীর্ঘমেয়াদি একটি প্রক্রিয়া। অটিজমে আক্রান্ত শিশুর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কী মারাত্মক মানসিক ও আর্থিক চাপ সহ্য করতে হয় তা সাধারণ মানুষ কল্পনাও করতে পারবেন না। এসব পরিবারের চাই যথাযথ গাইডলাইন, সমাজের সাহায্য ও সমাজের মানুষের ভালোবাসা ও সহানুভূতি।
যারা 'তারকা শিশু'-দের যত্ন নেন এবং তাদের পাশে সবসময় থাকেন এমন একজন হলেন তু চিয়া মেই। তিনি পেইচিং সিং সি ওয়াং অটিজম চিকিত্সাকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি নিজেও একটি অটিজমে আক্রান্ত শিশুর মা। ১১ বছর আগে তার প্রিয় মেয়েকে অটিজমে আক্রান্ত বলে চিহ্নিত করা হয়। তার স্বপ্ন নিমেষে ভেঙ্গে যায়। তবে তিনি হাল ছেড়ে দেননি। তিনি একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক থেকে পুনর্বাসন থেরাপিস্টে পরিণত হন এবং তখন থেকেই তার যুদ্ধ শুরু হয় অটিজম তথা নিজের ভাগ্যের বিরুদ্ধে। তু চিয়া মেই বলেন, "যখন আমার মেয়েকে অটিজমের রোগী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, তখন আমি ভীষণ কষ্ট পাই। তখন থেকেই আমার নিজের জীবন বলে আর কিছু নেই। একজন মা হিসেবে, মেয়েকে সর্বোচ্চ মাত্রার সেবাযত্ন দিতে চাই আমি। তখন আমার বয়স কম ছিল, স্বাস্থ্যও ভালো ছিল না। কিন্তু আমি আমার মেয়ের যত্নে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টাই চালিয়ে এসেছি।"
তু চিয়া মেই জানালেন, মেয়ের রোগ ধরা পড়ার আগে তিনি উচ্চতর ডিগ্রির জন্য হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সে স্বপ্ন এখন বদলে গেছে। তার এখন একটাই স্বপ্ন: মেয়েদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা। দীর্ঘমেয়াদি কঠোর প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর, তু তু চিয়া মেইর মেয়ে সিয়ান সিয়ান ৮ বছর বয়স থেকে মানুষের সঙ্গে সহজে ভাব বিনিময় করতে শেখে। বর্তমানে সে পেইচিংয়ের একটি সাধারণ প্রাথমিক স্কুলে পড়ছে। অন্য বাবা-মার মতো তু চিয়া মেই আশা করেন, তার মেয়ে একটি অর্থপূর্ণ জীবন যাপন করতে পারবে। তিনি বলেন, "একজন মা হিসেবে আমি আশা করি, আমার মেয়ে অন্য দশটা সাধারণ শিশুর মতো জীবনযাপন করতে পারবে এবং প্রতিটি দিন আনন্দে কাটাবে। যদি সে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে লেখাপড়া করতে পারে এবং একটি ভালো চাকরি খুঁজে পায়, তবে তো আরও ভালো।"
নিজের ব্যাকপ্যাকটি পিঠে ঝুলিয়ে স্কুলে যাওয়া একটি সাধারণ শিশুর জন্য স্বাভাবিক ঘটনা। তবে অটিজমে আক্রান্ত শিশুর ক্ষেত্রে এমনটি দেখা যাবে না। তারা এ কাজটি করতে সক্ষম নয়। তারা এমনকি মানুষের সঙ্গে ভাব বিনিময় করতে পারে না এবং একটি সহজ কাজও ঠিকমতো করতে পারে না। অনেক অটিজম শিশুর বাবা-মা তু চিয়া মেই ও তার মেয়ের গল্প শুনে সাহায্যের জন্য আসেন। তু চিয়া মেই এ প্রসঙ্গে বলেন, "অটিজম শিশুর বাবা-মার মনের কষ্ট আমি বুঝতে পারি। তাদের জীবন ছিল স্থিতিশীল ও সুখী। যখন তারা জীবনের নৌভ্রমণ করতে চাইলেন, ঠিক তখনই আবিষ্কার করলেন যে, নিজেদের নৌকার নোঙর ফেলা হয়ে গেছে; এখন আর তারা দূরের যাত্রায় যেতে পারেন না। তবে, অনেক বাবা-মা চোখে আমি আলো দেখি। তাদের মনে আমি আশার আলো জ্বালাতে চাই।"
তু চিয়া মেই ভালোভাবেই জানেন, অটিজম শিশুর বাবা-মাকে কতোটা মানসিক চাপ সহ্য করতে হয়। অনেক ভাবনা-চিন্তার পর তিনি একটি অটিজম চিকিত্সাকেন্দ্র খোলার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি ভাবলেন, এভাবে তিনি অটিজমে আক্রান্ত অন্য শিশুদের সাহায্য করতে পারবেন। ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে, পেইচিং সিং সি ওয়াং অটিজম চিকিত্সাকেন্দ্র চালু হয়। কেন্দ্রটিতে অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট পিতা-মাতাকেও বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়; তাদেরকে মানসিক সাহায্য দেওয়া হয়।
১৯৭৩ সালে জন্মগ্রহণকারী তু চিয়া মেই 'হু নান নরমাল বিশ্ববিদ্যালয়ের' স্নাতক। তিনি পেইচিংয়ের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতাও করেছেন। মেয়ে অটিজম শিশু না-হলে, তার জীবনও অন্যরকম হতে পারতো। তু চিয়া মেই বলেন, একজন সাধারণ শিক্ষক থেকে তিনি অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের বিশেষ প্রশিক্ষকে পরিণত হয়েছে এবং এতে তার কোনো দুঃখ নেই। বরং এতে তিনি খুশি। তিনি বললেন, "আগের চেয়ে আমি এখন আরও বেশি সুখী। কেন? কারণ, আমাকে শিশুদের প্রয়োজন। শিশুদের সঙ্গে সারাদিন কাটিয়ে দিতে পারলেই আমি খুশি। শিশুদের ছোট ছোট উন্নতি আমাকে আনন্দ দেয়। আমি তাদের জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করি এবং আমার কাজ নিয়ে আমি তৃপ্ত।"
তু চিয়া মেই ছাড়া এ কেন্দ্রে আরও ২৫ জন বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক আছেন। তাদের সবার চিন্তাধারাও একই রকম। ২৬ বছর বয়সি থাও থাও কেন্দ্রের একজন শিক্ষক। তিনি জানান, শিশুদের বিশুদ্ধ মানসিকতা তাকে অভিভূত করে। তিনি বলেন, "আমি এ শিশুদের খুবই পছন্দ করি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা সাধারণ শিশুদের মতো চৌকষ না-হলেও, তাদের মন খুবই বিশুদ্ধ। তারা নবজাতকের মতো যখন ইচ্ছা হাসে, যখন ইচ্ছা কাঁদে।"
বর্তমানে প্রায় ৬০টি শিশু সিং সি ওয়াং কেন্দ্রে চিকিত্সা গ্রহণ করছে এবং তাদের বয়স ২ থেকে ১০ বছরের মধ্যে। গত ৪ বছরে কেন্দ্রটি সহস্রাধিক শিশুকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তু চিয়া মেই একটি মেয়ের মা থেকে অনেক শিশুর মা'এ পরিণত হয়েছেন। অবশ্য, শিশুদের জন্য কাজ করতে গিয়ে তিনি এতো ব্যস্ত থাকেন যে, নিজের পরিবারকে তেমন একটা সময় দিতে পারেন না। এমনকি নিজের যত্ন নেওয়ার সময়ও তার নেই। এ সংবাদ দাতা আবিষ্কার করেন যে, মে মাসে পেইচিংয়ের আবহাওয়া যখন খুব গরম, তখনও তু চিয়া মেই শীতকালের বুট পড়ে আছেন। বিষয়টির দিকে তার দৃষ্টি আকষর্ণ করলে তু চিয়া মেই লজ্জা পান। তিনি বলেন, আসলে ব্যস্ততার কারণে নিজের কাজগুলো ঠিকমতো করতে পারি না বা করতে মনে থাকে না। নিজের পরিবারকে সময় দিতে না-পারার দুঃখও আছে তার। তিনি বলেন, "আমার দুঃখ, পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে একসঙ্গে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার সময় পাই না। আগে শুধু নিজের মেয়েকে সময় দিউ আর কেন্দ্র পরিচালনা করি। অন্য পরিবারগুলোকে যখন ভ্রমণে যেতে দেখি, তখন বুঝি নিজের পরিবারের কাছে আমার অনেক ঋণ হয়ে গেছে।"
ছোট করেই শুরু করেছিলেন তু চিয়া মেই। কিন্তু ধীরে ধীরে রোগীর সংখ্যা বাড়তে লাগলো। তখন তিনি উপলব্ধি করলেন, তার একার পক্ষে অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব নয়। সমাজের অন্যান্যদের এগিয়ে আসতে হবে। তিনি আশা করে, সার্বিকভাবে সমাজ এ শিশুদের জন্য এগিয়ে আসবে, প্রতিষ্ঠা করবে একটি সার্বিক ব্যবস্থা। তিনি বলেন, "গোটা সমাজের উচিত অটিজমে আক্রান্তদের ব্যাপারে মনোযোগী হওয়া এবং তাদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসা। সমাজ তাদের জন্য একটি উন্নত ও সার্বিক ব্যবস্থা গড়ে তুললে, অটিজমে আক্রান্ত শিশুরা স্বাবলম্বী হয়ে গড়ে ওঠার সুযোগ পাবে।"
গত ৪ বছরে কেন্দ্র কোন আয় করেনি। তু চিয়া মেই জানালেন, এখন কেন্দ্রটি অর্থসংকটে ভুগছে। কেন্দ্রটি চালাতে তিনি ইতোমধ্যেই তার নিজের ফ্লাট বিক্রি করেছেন। বিক্রিলব্ধ অর্থ দিয়ে শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হয়েছে। তিনি বললেন, "একটি কাজে আত্মনিয়োগ করলে, সে কাজটি আমি ভালোভাবে করতে চাই। আশার কথা, অনেকেই আমাকে বিশ্বাস করেন এবং আমাকে নানাভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেন।"
নিজের জন্য কঠিন হলেও তু চিয়া মেই তার এ কাজ চালিয়ে যেতে চান। তিনি বলেন, "শিশুদের সঙ্গে থেকে এবং তাদের সাহায্য করে আমি আনন্দ পাই। আমাদের উচিত আশাবাদী হওয়া এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া। শুধু এভাবেই আরও দূরে যেতে পারি আমরা।"
অটিজম (Autism)-কে বাংলায় 'আত্মসংবৃতি' বলা হয়। আগেই বলেছি, এটি নিউরোডেভেলপমেণ্টাল ডিজঅর্ডার। এ রোগ সাধারণত তিন বছর হবার পূর্বেই শিশুর মধ্যে প্রকাশ পায়। অটিজম শিশুরা সামাজিক আচরণে দূর্বল হয়, পারস্পরিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে কম সক্ষম হয়। মানসিক সীমাবদ্ধতা ও একই কাজ বারবার করার প্রবণতা থেকে তাদের সনাক্ত করা যায়।
আত্মসংবৃতিতে আক্রান্তদের আচার-ব্যবহার এবং সংবেদন পদ্ধতি অন্যদের চেয়ে অনেক আলাদা হয় এবং আক্রান্তদের মধ্যেও থাকে অনেক পার্থক্য। শব্দ, আলো, স্পর্শ ইত্যাদির প্রতি আত্মসংবৃতদের আচরণ সাধারণদের থেকে বেশ পৃথক ও অদ্ভুত। শারীরিক দিক দিয়ে আত্মসংবৃতদের সাথে সাধারণদের কোনো পার্থক্য করা যায় না। অবশ্য মাঝে মাঝে শারীরিক বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সাথে আত্মসংবৃতি একসাথে আসে, সেক্ষেত্রেও পার্থক্যগুলো হবে আপাত। কারণ, দৈহিক পার্থক্য থাকলেও তার উপর আত্মসংবৃতি খুব একটা নির্ভর করে না। আত্মসংবৃতদের মস্তিষ্কের আকৃতি সাধারণের চেয়ে বড় হয়ে থাকে, তবে এর প্রভাব সম্বন্ধে এখনও সঠিক কিছু জানা যায়নি।
এই রোগের কারণ সর্ম্পকে এখনও কোনও পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়নি। তবে জেনেটিক কারণে এটি হয় বলে প্রমাণ আছে। অনেকে এর কারণ হিসেবে পারিপার্শ্বিক ঝুঁকির (যেমন: টিকা নেবার সীমাবদ্ধতা) কথা বললেও কোনও গবেষণায় এর প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এক-দুই বছর বয়সে শিশুর আচরণে এ রোগের লক্ষণ দেখা দিতে থাকে। অভিভাবকরাই সাধারণত প্রথমে এ রোগের লক্ষণ বুঝতে শুরু করেন। লক্ষণ প্রকাশ পেলে দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া জরুরি। রোগ নির্ণয়ে মূলত শিশুর সম্পূর্ণ আচরণের ইতিহাস এবং স্নায়ুতাত্ত্বিক গণণার হিসাব বিবেচনা করা হয়। আক্রান্ত শিশুর পরিচর্যা করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আচরণ বিশ্লেষণের মাধ্যমে আক্রান্তের পরিচর্যা বা এপ্লায়িড বিহেভিয়ার এন্যালিসিসের সাহায্যে আক্রান্তের চিকিৎসা করাই সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য এবং কার্যকরী। অটিজমের মাত্রা অত্যধিক বেশি হলে রোগীদের স্বাধীন জীবনযাপনের সম্ভাবনা খুব কম থাকে। তবে কম মাত্রার রোগীদের বেলায় এ ক্ষেত্রে পূর্ণ বয়সে সফলতা আসার সম্ভাবনা বেশি। তবে এ রোগের ক্ষেত্রে একে জীবনযাপনের একটি বিশেষত্ব মনে করে চিকিৎসা করাই ভাল।
আত্মসংবৃতির প্রকাশ বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন হারে ঘটে। আধুনিক গবেষণা মতে, প্রতি হাজারে ১-২ জন আত্মসংবৃতিতে এবং এক হাজারে ৬ জন এএসডি রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
অটিস্টিক শিশুরা অস্বাভাবিক আচরণ করতে পারে বা আকাঙ্ক্ষিত আচরণ করতে অক্ষম হতে পারে। নির্দিষ্ট বয়সে স্বাভাবিক আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটলেও পরবর্তীতে তা হারিয়ে যেতে পারে। আবার নির্দিষ্ট সময় থেকে দেরিতেও সাধারণ ব্যবহারগুলোর দেখা যেতে পারে। এই ডেভেলপমেণ্টাল বিলম্বতার মাত্রা নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সকল চিকিৎসক একই সিদ্ধান্তে নাও আসতে পারেন।
'আত্মসংবৃতি' শব্দটি মূলত ইংরেজি Autism শব্দের পারিভাষিক প্রতিশব্দ। Autism শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন সুইস মনঃচিকিৎসক অয়গেন ব্লয়লার (Eugen Bleuler)। তিনি American Journal of Insanityতে প্রকাশিত তার একটি নিবন্ধে এ শব্দটি ব্যবহার করেন। এটি গ্রিক শব্দ αυτος (আউতোস্ অর্থাৎ "আত্ম", "নিজ") থেকে এসেছে। ব্লয়লার একান্তভাবে ভগ্নমনস্ক (Schizophrenic) মানুষ, যারা অন্য লোকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারে না, তাদের বোঝাতে এই শব্দের ব্যবহার করেন। বর্তমান পরিভাষায় ভগ্নমনস্কতা সম্পূর্ণ আলাদা রোগ। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এদের পৃথক করা কঠিন হতে পারে।
প্রিয় শ্রোতা, আমরা জানি, বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গেও অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের জন্য বিশেষ স্কুল ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র আছে। আপনার শিশুর মধ্যে যদি, খোদা-না-করুন, অটিজমের কোনো লক্ষণ দেখতে পান, তবে অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন এবং সে অনুসারে কাজ করুন। অটিজমে আক্রান্ত শিশুর চিকিত্সা ও প্রশিক্ষণ যত দ্রুত শুরু করা যাবে, ততই মঙ্গল।
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক