Web bengali.cri.cn   
আকাশের সাথে-০৫১৬
  2015-05-16 18:18:55  cri

'আকাশের সাথে'

ট: প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, da jiahao! আপনারা চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান শুনছেন। সবাইকে আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমাদের নিয়মিত সাপ্তাহিক আয়োজন 'আকাশের সাথে'। আর এ আয়োজনে আপনাদের সঙ্গে রয়েছি আমি এনামুল হক টুটুল এবং আমি শিয়েনেন আকাশ।

আ: ভাইবোনেরা, কেমন আছেন আপনারা? আশা করি অনেক অনেক ভালো। আজ আমরা প্রথমেই আপনাদেরকে দু'টি কবিতা শোনোবো। কেমন?

ট: হ্যাঁ বন্ধুরা, 'বাংলা নববর্ষ' এবং 'মহান মে দিবস' নিয়ে আমাদের দুইজন শ্রোতাবন্ধু দু'টি কবিতা পাঠিয়েছেন, এখন আপনাদেরকে তা শোনাবো। দেবাশীষ গোপ লিখেছেন,

সুপ্রিয় টুটুল ও আকাশ ভাই,

নি হাও।১৪২১ সাল বিদায় নিল, ১৪২২ এসে হাজির। সময় কি তা কেউ বলতে পারে না।এই সময় নিয়ে আমার একটি উপলব্ধি ও কবিতা-

সময় এবং মানুষ

একটু একটু করে সময় এগোচ্ছে অসীম থেকে অসীমে।

বাঁধাধরা নিয়মগুলো ফিরে ফিরে আসছে,

স্মৃতি পটে, ছবি হয়ে।

সময়কে যে ধরে রাখা দুঃসাধ্য।

হয়তো বা ধরাও যাবে কখনও,

টাইম মেশিনে।

কী হবে তাকে নাড়াচড়া করে?

কালের নিয়মেই সে এগিয়ে যাবে,

হয়তো অঙ্ক কষে তাকে বাঁধবে, কিন্তু তারপর!

ঐ একই ফল, সে এগিয়ে যাবে,

মানুষ বুঝি হিসাবটাকেই জানে।

তাই হিসাবটা চায় সময়ের কাছে।

সময় বলে- আমার চলাই আমার হিসাব।

ধন্যবাদান্তে

দেবাশীষ গোপ, ইন্টারন্যাশনাল রেডিও লিশেনার্স ক্লাব,

কুশমণ্ডি, দক্ষিণ দিনাজপুর

পশ্চিমবঙ্গ, ভারত

বিজনবিহরী দত্ত 'মহান মে দিবস' নিয়ে একটি কবিতা পাঠিয়েছেন, তিনি লিখেছেন,

মে দিবস

প্রতিবাদ একদিন/প্রতিধ্বনি হয়ে উঠবেই।/

দানবের চোঙ থেকে/সাইরেনটা বাজবেই।/

ওই চোঙ থেকে আকাশটা/কালো ধুম মাখবেই।/

চাষীর পাঁজর গুলি/কাস্তে আঁকা/বাঁকা চাঁদ আঁকবেই।/

রক্ত যার সম্পদ/সেই তো নিরাপদ।/

আপদ বালাই যত/বজ্র কর-এ হবে হত।/

সিংহ দ্বারে/হুঙ্কারে/সিংহ শিশু ডাকবেই।/

"মে দিবস" আসবেই।/ রাজপথ রাঙবেই।/

লালে লাল ঝাণ্ডাগুলি/উড়বেই উড়বেই।/

প্রতিবাদ প্রতিধ্বনি/ওরা গাবেই।/গাবেই।/

"মে দিবস"/আমাদের এ লাল চাকা/রক্ত মাখা

থাকবেই/ থাকবেই।/ যুদ্ধটা শান্তি/ গরীবেই

উতরী উড়বেই/ উড়বেই।

ধন্যবাদান্তে

বিজনবিহরী দত্ত

সভাপতি, ইন্টারন্যাশনাল রেডিও লিশেনার্স ক্লাব

কুশমণ্ডি, দক্ষিণ দিনাজপুর

পশ্চিমবঙ্গ, ভারত

ট: ধন্যবাদ দেবাশীষ গোপ এবং বিজনবিহরী দত্ত। আপনাদের কবিতা সত্যি আমাদের মুগ্ধ করেছে। সময় পেলে আমাদের কাছে এভাবে কবিতা লিখে পাঠাবেন এই প্রত্যাশায় রইলাম।

(ভিডিও)

(শউকুয়াংয়ের ভিডিও'র সাউন্ড)

ক: বন্ধুরা, আপনারা শুনছেন চীনের শউকুয়াংয়ের সবজি ও ফল চাষ সম্পর্কিত সাউন্ড।

সম্প্রতি আমি ও টুটুল একসাথে শউকুয়াং গিয়েছিলাম। সেখানে আমরা বেশকিছু ভিডিও করেছি। আমরা আপনাদেরকে পর্যায়ক্রমে তা দেখাবো।

ট: হ্যাঁ, আগের অনুষ্ঠানে আমরা আপনাদেরকে বলেছি, গত ২০ এপ্রিল শউকুয়াংয়ে ১৬তম চীন শউকুয়াং আন্তর্জাতিক সবজি মেলা শুরু হয়। এ উপলক্ষে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের পক্ষ থেকে আমরা দু'জন সেখানে যাই। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ভিত্তিতে কৃষির সুফল প্রতিষ্ঠার আন্তর্জাতিক প্লাটফর্ম তৈরি করার লক্ষে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

ক: সত্যি। আমরা সেখানে অনেক কিছু দেখেছি এবং অনেক অভিজ্ঞতা লাভ করেছি। এবার আমি সরাসরি মাঠে সবজি চাষ দেখেছি, দেখেছি লোকজন কিভাবে সবজি চাষ করেন ও তার যত্ন নেন। এটি আমার জন্য একটি নতুন অভিজ্ঞতা । আশা করি এ ধরনের প্রযুক্তির মাধ্যমে সবজি চাষ করে বাংলাদেশ ও ভারতসহ অনেক দেশই উপকৃত হতে পারবে।

ট: আমিও আশা করি শউকুয়াংয়ের সবজি চাষ পদ্ধতি যদি কাজে লাগানো যায় তাহলে আমাদের বাংলাদেশ ও ভারতও সবজির ক্ষেত্রে বড় সাফল্য অর্জন করতে পারবে।

ক: বন্ধুরা, তাহলে আজও প্রথমেই আমরা একসাথে একটি বড় পরোটা খাবো। পরোটার সাথে থাকবে শউকুয়াংয়ের টাটকা সবজি, কেমন? আসলে শউকয়াং ভ্রমণ নিয়ে টুটুল তিনটি লেখা লিখেছে। আজ আমরা দ্বিতীয়টি অর্থাত 'চীনের শউকুয়াংয়ের সবজি ও ফল চাষ' লেখাটি শেয়ার করবো। আর খেতে থাকবো কচি কচি লাল লাল টমেটো, কেমন?

ট: চীনের শউকুয়াংয়ের সবজি ও ফল চাষ

চীনের শানতুং প্রদেশের শউকুয়াং শহরের বিশাল, বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে চাষ করা হয় নানান জাতের সবজি ও ফল। বড় বড় ছাউনি ঘেরা ঘরের ভিতরেই মূলত এসব সবজি ও ফল চাষ করা হয়। তবে বাইরে থেকে বা দূর থেকে দেখে তা বোঝার কোনো উপায় নেই।

সুন্দর, ঝকঝকে পাকা রাস্তার পাশে সারি সারি ভাবে সাজানো সবজির ক্ষেতগুলো দেখলেই মনটা জুড়িয়ে যায়। এক একটি ক্ষেতে এক ধরনের সবজি চাষ করা হচ্ছে । কোথাও টমেটো, কোথাও শসা, কোথাও কুমড়া, কোথাও বেগুন, কোথাও ফুলকপি, কোথাও মরিচ। হাজার রকমের ফল ও সবজির এক বিশাল প্রান্তর যেন এই শউকুয়াং।

ক্ষেতের পাশের পাকা রাস্তায় ছোট ছোট টেবিলে বিভিন্ন ধরনের ফল ও সবজি রাখা আছে । আমাদের মতো এমন দর্শনার্থীদের জন্যই মূলত এসব রাখা । কেবল দেখার জন্য নয়, খাবারের জন্যও। অন্যান্য দর্শনার্থীদের মতো আমরাও সেসব টেবিল থেকে সবজি নিয়ে খাওয়া শুরু করলাম । সত্যিই অসাধারণ! ক্ষেত থেকে টাটকা ফল খাওয়া তা তো ইদানীং ভাগ্যের ব্যাপার। তাই এ সুযোগটি মিস করতে চাইলাম না। প্রথমে নিজেই হাত বাড়িয়ে একটা শসা খাওয়া শুরু করলাম। আমাদের সাথে থাকা এক কর্মকর্তা তখন অনেকগুলো ছোট ছোট টমেটো আমার হাতে দিয়ে চীনা ভাষায় বললেন, এগুলো আপনার জন্য। আমি মৃদুহেসে তাকে ধন্যবাদ জানালাম। ধন্যবাদ জানানোর পরই তিনি আমাদের নিয়ে গেলেন টমেটো ক্ষেতে। যখন টমেটো ক্ষেতে প্রবেশ করি তখন উত্তর কোরিয়ার একটি প্রতিনিধি দলের সাথে আমাদের দেখা হয়। তারাও এ এলাকাটি পরিদর্শনে এসেছেন। আমরা তখন একসাথে বিভিন্ন ফল ও সবজির ক্ষেত ঘুরে দেখতে শুরু করলাম।

শউকুয়াং ভেজিটেবল কোম্পানির এক কর্মকর্তা আমাদের জানান, মূলত বারো মাসই এইসব সবজি চাষ করা হয়।সবজি ক্ষেতের ছাউনি ও মাটির দেয়াল নির্মাণের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবজি ক্ষেতের সঠিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশ কিছু পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়। যেমন, পুরো ক্ষেতটিকে ছাউনি দিয়ে ঘিরে ফেলা এবং মাটির দেয়াল তৈরি করা। এই ছাউনির মাধ্যমে সূর্যের আলো নিয়ন্ত্রণ করা হয়। মাটির দেয়াল দিনের বেলায় অতিরিক্ত তাপমাত্রা শোষণ করে ও রাতের বেলায় অতিরিক্ত তাপমাত্রা বাইরে বের করে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কথা বলতে বলতে পুরো সবজি ক্ষেত ঘুরে জানতে পারি, এই চাষাবাদ পদ্ধতিতে তারা কোনো সার ব্যবহার করেন না। এমনকি কীটপতঙ্গের হাত থেকে সবজি ক্ষেতকে রক্ষার জন্য তারা কোনো কীটনাশকও ব্যবহার করেন না । কীটপতঙ্গ প্রতিরোধে তারা এক ধরনের আলোক পদ্ধতি গ্রহণ করেন।

সবজি ক্ষেতে পানি সরবরাহের জন্য ক্ষেতের ভিতরেই রয়েছে ছোট মেশিন। ক্ষেতের চারপাশে ছোট ছোট ড্রেনের ব্যবস্থা আছে। নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি এই ড্রেনের মাধ্যমে গাছের গোড়ায় সরবরাহ করা হয়।

স্থানীয় অঞ্চলের বাসিন্দারা বা বিভিন্ন কোম্পানি এই সবজি চাষ করে থাকে।কোনো কোনো কোম্পানি এই সবজি ও ফল সরাসরি রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে। আবার কোনো কোনো কোম্পানি রাজধানী পেইচিংসহ চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে তা সরবরাহ করে।

মূলত চীনের বিভিন্ন এলাকায় যে সবজি ও ফল পাওয়া যায় তার বেশিরভাগই আসে শানতুং প্রদেশ থেকে। সবজি উত্পাদনের মাধ্যমে নিজেদের জীবনে বিশাল পরিবর্তন নিয়ে এসেছেন এই অঞ্চলের মানুষ। কৃষির মাধ্যমে সারা চীনে তারা ঘটিয়েছেন বিপ্লব আর দেশের অর্থনীতিকে করেছেন শক্তিশালী।

বন্ধুরা, কেমন লাগলো শউকয়াংয়ের টাটকা শাক-সবজি। আশা করি ভালো । (লাইভ)

ক: ভাইবোনেরা, আগামী অপ্তাহে আমরা শউকুয়াংয়ে হাজার হাজার চিংড়ি মাছ খাবো, কেমন?

ট: হ্যাঁ, বন্ধুরা, শউকুয়াংয়ের চিংড়ি মাছ সত্যি অনেক বিখ্যাত। আমি আর আকাশ ভাই সেখানে প্রতি বেলা খাওয়ার সময় দুই প্লেট করে চিংড়ি খেয়েছি। আগামী সপ্তাহে আপনাদেরকে নিয়ে তা একসাথে খাবো, কেমন?

ট: বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এ পর্যন্তই। আপনারা যদি নিজেদের কোনো কথা আমাদের সাথে শেয়ার করতে চান বা কোনো কথা বলতে চান, তাহলে আমাদের কাছে টেলিফোন করতে পারেন বা ইমেইল করতে পারেন। আমাদের টেলিফোন নম্বর হচ্ছে: ০০৮৬১০৬৮৮৯২৪২০ এবং আমাদের ইমেইল হচ্ছে enamulhoquetutul@yahoo.com.

ক: বন্ধুরা, এবার তাহলে বিদায়। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং সুন্দর থাকুন। আপনারা সবসময়ই আমাদের মনে, আমাদের হৃদয়ে, আমাদের আত্মায়।

ট: হ্যাঁ বন্ধুরা, জীবনে মরণে আমরা কখনো পৃথক হবো না। চাই চিয়েন। (আকাশ/টুটুল)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040