পেইচিংয়ের তুং ছেং অঞ্চলের চিত্রশালার পূর্ব-রাস্তায় অবস্থিত সান লিয়েন থাও ফেন বইয়ের দোকান। এটি হলো পেইচিংয়ের বিখ্যাত একটি সাংস্কৃতিক সম্পদ-সমৃদ্ধ বই দোকান। গত বছরের এপ্রিল থেকে দোকানটি ২৪-ঘণ্টা খোলা রাখা শুরু হয়। তখন থেকে পেইচিং নাগরিকদের নিজের 'গভীর রাতে বইয়ের দোকানে' যাবার চিন্তা শুরু হয়। কিন্তু প্রথমে অনেকেই মনে করত পাঠকের সংখ্যা বেশি না হলে দ্রুত বই দোকানটি বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু এক বছর পর, বই দোকানটির ভাইস-ম্যানেজার ওয়াং ইয়ু গর্বিতভাবে বলেছেন,
'গত বছরের ১কোটির বিক্রি রেকর্ডের চেয়ে ২৪-ঘণ্টা না সারা রাত খোলা থাকায় বই বিক্রির রেকর্ড ২কোটি ৫ লাখ ছড়িয়ে গেছে।
বই ভক্তদের জন্য ২৪-ঘণ্টা খোল রাখার সিদ্ধান্ত তাদের বিক্রি বাড়িয়ে দিয়েছে। এক গভীর রাতে, সি আর আই'র সংবাদাতা সান লিয়েন থাও ফেন বই দোকানে যান। বাইরের প্রশান্ত রাতের তুলনায় বইয়ের দোকান ছিল উজ্জ্বল। কয়েক ডজন পাঠক সেখানে বসে বসে বই পড়ছে।
তাদের মধ্যে একজন বলে,
"খুবই রিল্যাক্স হই এখানে এসে। অনেক বই আছে। সাধারণত প্রতিবারে আমি এখানে এসে কয়েক ঘণ্টা বসতে পারি।"
"দিনে অনেক কাজ করি। তাই শুধু রাতে বই পড়ি। ২৪-ঘণ্টা খোলা থাকায় আমার জন্য অনেক সুবিধাজনক।"
"প্রায়ই এখানে আসি। বাড়ির মতো। খুবই ভাল লাগে।"
আসলে ২৪-ঘণ্টা খোলা বইয়ের দোকান মালিকদের জন্য বাণিজ্যিক পরিচালনার একটি পদ্ধতি, কিন্তু, তা আধুনিক লোকদের জন্য একটি নতুন বৈচিত্র। ওয়াং ইয়ু বলেন,
"ঘুমতে পারছেন না? কিন্তু আপনার বন্ধুরা তো ঘুমচ্ছে। তাহলে কোথায় যাবে? অবশ্যই বইয়ের দোকানে!"
ইন্টারনেট জনপ্রিয় হওয়ার পর বইয়ের দোকানগুলো একটি কঠিন সময় পার করছে। ভাইস-ম্যানেজার ওয়াং ইয়ু বলেন, "তখন আমাদের দোকানের সারা বছরের বিক্রি হতো শুধু ৪ লাখ ইউয়ান। কিন্তু আমরা হাল ছাড়িনি। বিভিন্ন উপায়ে চেষ্টা করেছি। অবশেষে দোকান রক্ষা করতে পেরেছি। আমরা বিশ্বাস করি, পাঠকরা অবশেষে বই দোকানে ফিরে যাবে। আমরা তাদের অপেক্ষায় আছি।"
তিনি আরো বলেন,
"বর্তমানে আমরা অনেক তত্পরতার আয়োজন করে থাকি। প্রায় প্রতি সপ্তাহে একটি। পাঠকরা তাদের পছন্দের বই এনে, অন্য বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করে। খুবই মজা, খুবই কল্যাণকর ও খুবই তাত্পর্যপূর্ণ।
একটি দেশের অনবরত উন্নতির জন্য সে দেশের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব আছে। আর এর মধ্যে মানুষের উন্নত গুণাবলী হলো সবকিছুর ভিত্তি।
"蹉跎莫遣韶光老,人生唯有读书好"—অর্থ, যতদিন এ বিশ্ব থাকবে, সময় অপব্যয় করো না, জীবনের সেরা জিনিস হলো বই পড়া।