Web bengali.cri.cn   
কৃষিজমির স্বল্পতা ও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা: চীনে আগামী এক দশক ধরে বাড়বে সয়াবিনের আমদানি
  2015-05-11 15:30:45  cri

চীনের ভূমি ও প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্প্রতি জানিয়েছে, চলতি বছর শেষ হবার আগেই দেশের আবাদযোগ্য কৃষিজমির মোট পরিমাণ বাড়িয়ে ১৮২ কোটি 'মু' বা ১২ কোটি ১২ লাখ হেক্টর করা হবে। ২০১৪ সালে আগের বছরের চেয়ে কৃষিজমি বেড়েছিল প্রায় ৩৮ লাখ 'মু'। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকার কৃষিজমির মান উন্নত করতে এবং কৃষিপণ্যের উৎপাদন বাড়াতে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেওয়ার পাশাপাশি, ২০১৪ সালে বরাদ্দ দেয় ২৪৫৯ কোটি ইউয়ান। এতকিছুর পরও,চীনা সমাজবিজ্ঞান একাডেমির পূর্বাভাস বলছে, ২০১৫ সালে চীনে শস্যের উৎপাদন আগের বছরের চেয়ে মাত্র ০.৫ শতাংশ বাড়বে। অথচ ২০১৪ সালে ২০১৩-এর তুলনায় শষ্য উত্পাদন বেড়েছিল ০.৯ শতাংশ। এ থেকে বোঝা যায়, চীনের সরকার কৃষি খাতে উন্নয়নেরধারা বজায় রাখতে ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। চীনা সমাজবিজ্ঞান একাডেমির উপ-প্রধান লি ফেইলিন জানালেন, ক্রমবর্ধমান উৎপাদনখরচ, দূষণ এবং নগরায়ন কৃষিউৎপাদনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

এমনি এক প্রেক্ষাপটে গত সোমবার প্রকাশিত হয় 'চায়না এগ্রিকালচার আউটলুক, ২০১৫-২০২৪'। এতে বলা হয়েছে, সীমিত কৃষিজমি এবং ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার কারণে আগামী এক দশক ধরে চীনকে ক্রমবর্ধমান হারে সয়াবিন আমদানি করে যেতে হবে। প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালে চীনকে আমদানি করতে হবে ৮২.৬৬ মিলিয়ন (প্রায় ২ কোটি ২৭ লাখ) মেট্রিক টন সয়াবিন, যা ২০১৪ সালের তুলনায় ১৫.৮ শতাংশ বেশি। আর, বিশ্বের সবচে বেশি সয়াবিন আমদানিকারক দেশ চীনে ২০২৪ সালে সয়াবিনের ভোগ বেড়ে দাঁড়াবে ৯৬.৭১ মিলিয়ন বা ৯ কোটি ৬৭ লাখ মেট্রিক টন। এই বর্ধিত চাহিদা মেটাতে হবে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমাদানির মাধ্যমে।

অবশ্য, বিষয়টি নিয়ে খুব এটা চিন্তার কারণ নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন পেইচিংয়ে অবস্থিত চীনের কৃষিবিজ্ঞান একাডেমির গবেষক তিং লিশিন। তিনি জানান, আমদানির মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান চাহিদা সহজেই মেটাতে পারবে চীন।

এদিকে, সয়াবিনের আমদানি বাড়লেও, ভুট্টার মতো প্রধান খাদ্যশস্যের আমদানি তেমন একটা বাড়বে না বলে জানানো হয়েছে কৃষি আউটলুকে। বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ভুট্টার আমদানি ৭২ লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ, এ ক্ষেত্রে কোটা নির্ধারিত আছে। তবে, গোটা দশক ধরে বছরে ৩.১ শতাংশ হারে ভুট্টার চাহিদা বাড়বে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

তিং জানালেন, চীন সরকার প্রধান খাদ্যশস্যের চাহিদার ৯৭ শতাংশ নিজের দেশেই উত্পাদন করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তিনি আরও জানালেন, আলুকে অন্যতম মূল খাদ্য হিসেবে প্রমোট করার পরিকল্পনাও আছে সরকারের।

ভুট্টার আমদানি না-বাড়লেও, গমের আমদানি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে বলে প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ২০১৪ সালে যেখানে চীন গম আমদানি করেছিল ১০ লাখ মেট্রিক টন, সেখানে ২০২৪ সালে তাকে আমদানি করতে হবে ২৮ লাখ মেট্রিক টন। অন্যদিকে দুগ্ধজাত পণ্যের আমদানিও আগামী এক দশক ধরে বছরওয়ারি ৩ শতাংশ হারে বাড়বে।

তিং মনে করেন, চীনের কৃষি উত্পাদন খাতে স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান জাতীয় আয় জনগণের খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন এনেছে। লোকজন এখন প্রোটিনমমৃদ্ধ ও উন্নত স্বাদের খাবারের প্রতি ঝুঁকছেন। এ প্রবণতাকে তিনি অর্থনীতির প্রাণশক্তির প্রতিফলন হিসেবে ব্যাখ্যা করলেন।(আলিম)

মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040