0503jiankang
|
অন্যকে চেনাও হবে, আবার নিজের অবস্থাটাও আন্দাজ করা যাবে। এখানে একটা কথা বলে রাখি, আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের সাথে কিন্তু শারীরিক স্বাস্থ্য ওতোপ্রতোভাবে জড়িত।
বিশেষজ্ঞরা ছয় ধরনের মানুষকে চিহ্নিত করেছেন, যারা কারোর সঙ্গে দেখা হলে ছয়ভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়। এদের মধ্যে এক শ্রেণির মানুষ আছেন যারা আপনার সঙ্গে দেখা হলে সরাসরি আপনার চোখের দিকে তাকিয়ে সম্ভাষণ জানাবেন। এ ধরনের মানুষ সবসময় জয়ের জন্য মুখিয়ে থাকেন, পরাজিত হতে চান না। তারা শুরুতেই আপনার চোখের দিকে তাকিয়ে যেন জানিয়ে দিতে চান যে, তার সঙ্গে বাড়াবাড়ি করার ফল ভালো হবে না। তো, এটাকে ঠিক বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ বলতে নারাজ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এ ধরনের মানুষের সঙ্গে সাবধানে ওঠাবসা করা উচিত। কারণ, স্বার্থের জন্য এরা যে কোনো সময় আপনার ক্ষতি করতে পারে। তাই নিজের দুর্বলতা এদের সামনে প্রকাশ না-করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
ঊর্মি: আরেক শ্রেণির লোক হচ্ছেন ঠিক উল্টো। তারা অন্যের সঙ্গে দেখা হলে কখনোই সরাসরি তার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলেন না বা অভিবাদন জানান না। খেয়াল করলে দেখবেন, তারা তাদের দৃষ্টি চোখ ছাড়া অন্যকোনো কিছুর দিকে রেখে তারপর হাই-হ্যালো করেন। বিশেষজ্ঞরা এ আচরণকে 'উপেক্ষাসূচক' বলতে নারাজ। তারা বলছেন, এ ধরনের লোক ভীতু প্রকৃতির। তারা আত্মপ্রত্যয়ী নন। তাই নিজেকে লুকিয়ে রাখতে চান। এ ধরনের লোক প্রথম শ্রেণির লোকের মতো বিপজ্জনক নন। তাই তাদের সঙ্গে আপনি সহজে মিশতে পারেন।
অবশ্য, কোনো ছেলে বা মেয়ে যদি তার পছন্দের কারুর চোখের দিকে তাকিয়ে কথা না-বলে, তবে তাতে ভিন্ন কিছু না-ভাবাই উচিত। কারণ, এটা লজ্জা বা ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।
আরেক শ্রেণির মানুষ আছেন, যারা একে অপরের সঙ্গে দেখা করার সময় একটু পিছনের দিকে দাঁড়িয়ে সম্ভাষণ জানাতে পছন্দ করেন। এ ধরনের ঘটনা দেখা যায় বিশেষ করে যখন তিনি কোনো গ্রুপের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি হয়তো ভাবেন, একটা পোলাইটনেস বা বিনয়। কিন্তু অন্যরা একে 'উপেক্ষা' বা 'কথা বলতে না-চাওয়ার ইচ্ছা' ভাবতে পারেন। মানে, এ থেকে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে।
কেউ কেউ আছেন, পরিচিত জনের সঙ্গে দেখা হলে বেশ আন্তরিকতার সঙ্গে আপনার গায়ে হাত দিয়ে অভিবাদন জানাবেন। যেমন তিনি হয়তো আপনার কাঁধে চাপড় মারবেন বা পিঠে হাত রাখবেন অথবা আপনার দু'হাত আঁকড়ে ধরবেন। এমনকি কেউ কেউ আপনাকে বুকের মধ্যে জড়িয়েও ধরতে পারেন। এটা আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশ। তিনি যে আপনাকে অনেক পছন্দ করেন, কেয়ার করেন, এ থেকে তা বোঝা যাবে। অবশ্য অপরিচিত বা কম পরিচিত লোকের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ হিতে বিপরীত হতে পারে। এ ক্ষেত্রে দেশ ও লিঙ্গ বিবেচনায় রাখাও জরুরি।
চীনে একজন পরিচিত মেয়ের দিকে আন্তরিকতার সঙ্গে করমর্দন করার জন্য হাত বাড়িয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু, বাংলাদেশে সাধারণত এটা করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। আসলে স্থান-কাল-পাত্র এ ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আরেক ধরনের মানুষ আছেন, যারা পরিচিতজনদের দেখেও না-দেখার ভান করেন বা এড়িয়ে চলেন। অভিবাদন জানানো যেন তাদের ধাতে সয় না। এ ধরনের লোক অটিজমের শিকার হয়ে থাকতে পারেন। আবার ব্যক্তিগত কোনো সমস্যার কারণেও কখনো কখনো কেউ কেউ অন্যদের কাছ থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখতে পারেন। এদের ব্যাপারে আমাদের উচিত সহানুভূতিশীল হওয়া। আবার এমনও হতে পারে, আপনাকে তিনি ব্যস্ততার কারণে হাই-হ্যালো করতে পারেননি বা দেখেনইনি। তাই চট করে এ ধরনের কাউকে ভুল বুঝবেন না, তাকে বেনিফিট অব ডাউট দিন।
সর্বশেষ শ্রেণির মানুষ আপনাকে সরাসরি এড়িয়ে চলতে পছন্দ করেন। তারা আপনাকে দেখলে দূর থেকেই তার পথ পরিবর্তন করে ফেলেন। কেন? হয়তো তিনি আপনাকে ভয় করেন বা অপছন্দ করেন। হয়তো কোনো কারণে তিনি আপনার ওপর বিরক্ত। আবার এমনও হতে পারে যে, তার আত্মবিশ্বাস কম, তিনি অন্যের মুখোমুখি হতে ভয় পান।
(ওয়াং হাইমান/আলিম)